শুক্রবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

আছে আধুনিক স্টেডিয়াম নেই খেলাধুলা

রাহাত খান, বরিশাল

আছে আধুনিক স্টেডিয়াম নেই খেলাধুলা

কীর্তনখোলা নদীর তীরবর্তী মনোরম পরিবেশে ৩০ একর জমির ওপর বরিশাল শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত স্টেডিয়াম। রয়েছে ৩৫ হাজার দর্শক ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন গ্যালারি। পাঁচ তলাবিশিষ্ট প্যাভিলিয়ন ও মিডিয়া সেন্টার, ফ্লাড লাইটসহ আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধাই আছে এই স্টেডিয়ামে। কিন্তু নেই শুধু খেলা।

আগে এখানে প্রথম ও দ্বিতীয় বিভাগ ফুটবল ও ক্রিকেট এবং প্রিমিয়ার লিগ ক্রিকেট খেলা হতো নিয়মিত। তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেট অংশগ্রহণ করতো অর্ধশতাধিক দল। কিন্তু এখন সেসব অতীত। খেলা বাদ দিয়ে স্টেডিয়ামের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ব্যস্ত এখানকার প্রভাবশালীরা। পছন্দের ব্যক্তিদের দায়িত্বে বসাতে ৩ দশকের বেশি সময় ধরে প্রতিযোগীমূলক নির্বাচন হয় না জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থায়।

বরিশালের ক্রীড়া সংগঠকরা জানান, বরিশালে আন্তর্জাতিক মানের একটি স্টেডিয়াম থাকার পরও জাতীয় লিগে বরিশালের লোকাল ভেন্যু হিসেবে ব্যবহার হয় ঢাকার ফতুল্লা স্টেডিয়াম। ২০০৬ সালে স্টেডিয়াম পুনর্নির্মাণের পর শুধুমাত্র ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত হয় দুটি ম্যাচ। এছাড়া বরিশালে নিয়মিত কোনো ক্রিকেট লিগ বা টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়নি।

বরিশালের সাবেক খেলোয়াড় ও সংগঠকরা জানান, আগে বরিশাল স্টেডিয়ামে নিয়মিত ১ম ও ২য় বিভাগ ফুটবল-ক্রিকেট লিগ হতো। এছাড়া হ্যান্ডবল, ভলিবল লিগসহ নানা খেলাধুলার আয়োজনে স্টেডিয়াম থাকতো সরগরম। কিন্তু এখন সেখানে নেই কোনো কার্যক্রম।

বরিশাল ট্যালেন্টহান্ট ক্রিকেট একাডেমির কোচ সাবেক ক্রিকেটার মাহমুদুল হায়দার তামিম বলেন, প্রতিযোগিতামূলক খেলা না থানায় নতুন খেলোয়াড় সৃষ্টি হচ্ছে না।

বয়সভিত্তিক ক্রিকেট, ফুটবলসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক খেলা, প্রিমিয়ার লিগ, ১ম ও দ্বিতীয় বিভাগ খেলা অত্যন্ত জরুরি।

সাবেক খেলোয়াড় জহিরুল ইসলাম জাফর বলেন, ৩ দশকের বেশি সময় ধরে বরিশাল জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার নির্বাচন হয় না। যখন যে দল ক্ষমতায় আসে তাদের মনোনীতরা স্টেডিয়ামসহ ক্রীড়া সংস্থারগুলোর নিয়ন্ত্রণ করে। তারা খেলাধুলা নিয়ে ভাবেন না।

জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান। বাংলাদেশ প্রতিদিনকে তিনি জানিয়েছেন, বর্ষার প্রভাব কমলেই তিনি ২য় বিভাগ ক্রিকেট শুরু করবেন। এছাড়া বয়সভিত্তিক ফুটবল ও ক্রিকেট লিগও শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে। খেলাধুলার মাধ্যমে স্টেডিয়াম প্রাণবন্ত করার উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেন।  

১৯৬৬ সালে তৎকালীন জেলা প্রশাসক মাহফুজুর রহমানের উদ্যোগে ২৯ একর ২৫ শতাংশ জমির উপর বরিশাল স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হয়। ১৯৭০ সালে স্টেডিয়ামের সীমানা প্রাচীরসহ ২ হাজার দর্শকের জন্য গ্যালারিও নির্মাণ করা হয়। এরপর থেকে সেখানে স্থানীয় ফুটবল ও ক্রিকেট লিগের খেলা চলতে থাকে। বিগত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে বরিশাল স্টেডিয়ামকে আন্তর্জাতিক ভেন্যু হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ ক্রীড়া সংস্থার (বিসিসি) কাছে আবেদন করা হয়। বিসিসি বরিশাল স্টেডিয়ামকে আন্তর্জাতিক ভেন্যু রূপ দিতে ২৩ কোটি ১৫ লাখ টাকার উন্নয়ন কাজ করে। ২০০৬ বরিশাল স্টেডিয়াম আধুনিকয়নের কাজ শেষ হয়।

সর্বশেষ খবর