সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

ফাইনালে ভরসা সাকিব

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ফাইনালে ভরসা সাকিব

তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদদের মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটার রয়েছেন দলে। এরা সবাই ম্যাচজয়ী ক্রিকেটার। নিজেদের দিনে যে কোনো পরিস্থিতি সামাল দিয়ে দলকে জয় উপহার দিয়ে মাঠ ছাড়ার বহু রেকর্ডস রয়েছে তিন ক্রিকেটারের। তারপরও বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের মূল ভরসা সাকিব আল হাসান। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের পারফরম্যান্সের উপর নির্ভর করে টাইগারদের সাফল্য ও ব্যর্থতা। বিশ্বকাপ ক্রিকেটে যে স্বপ্ন দেখেছিল টাইগাররা, তার পুরোধায় ছিলেন সাকিব। দলের অপরাপর ক্রিকেটাররা ব্যর্থ হলেও আলোকিত পারফরম্যান্স করে ক্রিকেট মহাযজ্ঞকে নিজের করে নেন সাকিব। বিশ্বকাপের উজ্জ্বল পারফরমার সাকিব হঠাৎ করেই ছন্দ হারিয়ে ফেলেন চট্টগ্রাম টেস্ট ও তিন জাতির টি-২০ টুর্নামেন্টে। তার ব্যর্থতায় ছন্দহীন হয়ে পড়ে গোটা দল। ফলে টেস্টে হেরে যায় আফগানিস্তানের কাছে। শুধু তাই নয়, তিন জাতির টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে আফগানদের কাছে হেরে যায় সাকিবের ব্যর্থতায়। পরশু র‌্যাঙ্কিংয়ে তিন ধাপ এগিয়ে থাকা আফগানিস্তানের বিপক্ষে আনুষ্ঠানিকতার ম্যাচটিকে প্রতিশোধের বানিয়ে টাইগারদের জয় উপহার দেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। তার দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে বাংলাদেশ শুধু জয়ই পায়নি, আফগান জুজু থেকে মুক্তিও পেয়েছে। আগামীকাল ফাইনাল। পরিচিত মিরপুরে নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসের দ্বিতীয় শিরোপা জিততে দলকে তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে সাকিবের ব্যাটিং ও বোলিংয়ের দিকে।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৪ উইকেটের জয়ী ম্যাচে সাকিব খেলেন ৪৫ বলে ৭০ রানের ম্যাচজয়ী ইনিংস। দলের ব্যাটসম্যানরা যখন মুজিব, রশিদ ও নবীদের স্পিনে নাকাল হয়ে সাজঘরে ফিরছেন, তখন উইকেটের আরেক প্রান্তে বীরবিক্রমে ব্যাট চালিয়ে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টানা হারের ধকল কাটিয়ে উপহার দিয়েছেন অসাধারণ এক জয়। ওই জয়ে টাইগাররা ফিরে পেয়েছে আত্মবিশ্বাস এবং ফাইনাল জেতার রসদ। সাকিবের ওই ইনিংসেই এখন পাল্টা জবাব দিতে প্রস্তত বাংলাদেশ। ম্যাচ জেতানো ইনিংসটি খেলানোর পথে নতুন একটি রেকর্ডও গড়েছেন টাইগার অধিনায়ক। তিনি এখন টি-২০ ফরম্যাটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। ৭০ রানের হার না মানা বিধ্বংসী ইনিংসটি সাজানো ছিল ৮ চার ও এক ছক্কায়। যার মধ্যে বিশ্বসেরা লেগ স্পিনার রশিদ খানের এক ওভারে নেন ১৮ রান। ৭৬ ম্যাচ ক্যারিয়ারে এটা সাকিবের ৯ নম্বর হাফসেঞ্চুরি।

ব্যক্তিগত ৬০ রানের মাথায় তিনি টপকে যান বাঁ হাতি ওপেনার তামিম ইকবালকে। আনুষ্ঠানিকতার ম্যাচটির আগে পর্যন্ত টি-২০ ক্রিকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন তামিম। ফাইনালে রেকর্ডটিকে আরও উপরে নিয়ে যাওয়ার পথ সুগম এখন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারে। ৭৬ ম্যাচে সাকিবের রান এখন ২৩.৭৪ গড়ে ১৫৬৭। তামিমের রান ৭১ ম্যাচে ১৫৫৬। সেঞ্চুরি একটি এবং হাফসেঞ্চুরি ৬টি। তিন নম্বরে রয়েছেন মাহমুদুল্লাহ। ৮০ ম্যাচে রান ২৩.৭৪ গড়ে ১৩৭৭। মুশফিকুর রহিমের রান ৮১ ম্যাচে ১২০১। টি-২০ ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি রান ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলির। ভারতীয় অধিনায়কের গতকাল পর্যন্ত ৭১ ম্যাচে রান ২৪৪১। তার পেছনে রয়েছেন তারই স্বদেশী রোহিত শর্মা, রান ১৪৩৪।

টি-২০ ক্রিকেটে সাকিব এখন বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। আফগানিস্তানের বিপক্ষে অসাধারণ ইনিংস খেলার ম্যাচে আরও একটি রেকর্ড গড়েছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। রেকর্ডটি বল হাতে। আফগানদের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার মোহাম্মদ নবীকে সাজঘরে ফেরানোর সঙ্গে সঙ্গে টি-২০ ফরম্যাটে চতুর্থ বোলার হিসেবে ৩৫০ উইকেটের মাইলফলক গড়েন। মাইলফলকটি গড়ে ৩০২ নম্বর ম্যাচে। সাড়ে ৩০০ উইকেট নেওয়া বাকি তিন ক্রিকেটার-ওয়েস্ট ইন্ডিজের সুনিল নারিন ৩৩৩ ম্যাচে ৩৭৬ উইকেট, আরেক ক্যারিবীয় অলরাউন্ডার ডোয়াইন ব্রাভো ৪৫০ ম্যাচে ৪৯০ উইকেট ও শ্রীলঙ্কার ল্যাসিথ মালিঙ্গা ২৮৬ ম্যাচে ৩৮৫ উইকেট নিয়েছেন। টি-২০ ফরম্যাটে ৩৫০ উইকেট ও ৪০০০ হাজার রানের কাতারে সাকিবের চেয়ে এগিয়ে শুধু ব্রাভো। ক্যারিবীয় অলরাউন্ডারের রান ৬২৮৯।                  

সাকিব শুধু টি-২০ ফরম্যাটেই নয়, টেস্ট এবং ওয়ানডেতেও বাংলাদেশের অন্যতম ভরসা। বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার যখন পারফরম্যান্স করেন, তখন দল হাসে। তিনি যখন ব্যর্থ হন, তখন গোটা দল পড়ে যায় লজ্জায়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর