বুধবার, ১৬ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

শেষ মুহূর্তে জয় হাতছাড়া

বিশ্বকাপ বাছাই পর্ব

রাশেদুর রহমান

শেষ মুহূর্তে জয় হাতছাড়া

ভারতের ক্রোয়েশিয়ান কোচ বেশ চমকে গেলেন জামাল ভূঁইয়াদের খেলতে দেখে। জামালদের কাতার ম্যাচ দেখে কিছুটা সতর্ক হলেও বাংলাদেশের বিপক্ষে ভারত সহজেই জিতবে, এমন একটা ভাব প্রকাশ পেয়েছিল ইগর স্টিমাচের বক্তব্যে। কিন্তু গতকাল সল্ট লেকের যুব ভারতীতে বাংলাদেশকে খেলতে দেখে সত্যিই চমকে গেলেন তিনি। ম্যাচ-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে তা প্রকাশ করতেও দ্বিধা করলেন না। আর ভারতীয় দর্শকরা ম্যাচটা ড্র করায় হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেও বাংলাদেশের যে জয়টা প্রাপ্য ছিল তা অস্বীকার করছেন না। যুব ভারতীর প্রেসবক্সে থাকা বাংলাদেশি সাংবাদিকদের কাছে অনেকে এর সরল স্বীকারোক্তিও দিয়েছেন।

ভারতের বিপক্ষে ফুটবল ম্যাচ। বর্তমানের সমীকরণ তো আছেই। অতীতেরও অনেক হিসাব-নিকাশ ছিল। তাছাড়া বদলে যাওয়া বাংলাদেশের ফুটবলের সামনে নিজেকে প্রমাণ করার একটা সুযোগ ছিল ম্যাচটা। বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের লড়াইটা ছিল দর্শকপূর্ণ স্টেডিয়ামে। ভারতীয় দর্শকের ভিড়ে বাংলাদেশের দর্শকরা আড়ালেই ছিল। তবে ম্যাচের ৪২ মিনিটে যুব ভারতীকে স্তব্ধ করে দেন জামাল ভূঁইয়া ও সাদ উদ্দিন। ভারতীয় অর্ধের বাম পাশে ফ্রি কিক পেলে জামাল ভূঁইয়া এগিয়ে যান। ভারতীয় ফুটবলারদের জটলা ছাড়িয়ে ইনসুইং ফ্রি কিক করেন তিনি। অনেকটা দৌড়ে এসে হেডে দুর্দান্ত গোল করেন সাদ উদ্দিন। যুব ভারতীকে স্তব্ধ করে দেওয়ার পরও দুরন্ত ফুটবল খেলেছেন জামালরা। প্রতিপক্ষ কোচ স্টিমাচ বলছেন, ‘বাংলাদেশ অসাধারণ খেলেছে। ওদের খেলায় কখনোই কোনো ছন্দপতন হয়নি। এমনকি আমরা সমতায় ফেরার পরও ওরা ভড়কে যায়নি। সত্যিই অনেক বদলে গেছে বাংলাদেশের ফুটবল।’ স্টিমাচ অবশ্য আলাদা করে গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানার প্রশংসা করেছেন। তার দুর্দান্ত কয়েকটা সেভ ভারতকে জিততে দেয়নি। স্টিমাচের ম্যাচসেরা তাই আশরাফুল। আর জামালদের গুরু জেমি ডের আফসোস, ইশ! জয়টা নিয়ে বাড়ি ফেরা হলো না। বিশেষ করে গোল লাইন থেকে গোল না হওয়ায় তার আফসোসটা আরও বেড়েছে।

বাংলাদেশ ১৯৮৫ সালে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের ম্যাচে এই যুব ভারতীতেই ভারতের মুখোমুখি হয়েছিল। সেবার ভারত জিতেছিল ২-১ গোলে। এমনকি ঢাকা পর্বেও জিতেছিল ভারতই। একই ব্যবধানে। তবে এবারের প্রেক্ষাপট পুরোপুরিই ভিন্ন। বহু বছর পর যুব ভারতীতে ভারতের মুখোমুখি হয়ে বাংলাদেশ চমক জাগানো ফুটবল উপহার দিল। সুনীল ছেত্রিদের ধারাল আক্রমণগুলো বাংলাদেশের ডিফেন্স লাইনে এসে বার বারই পথ হারিয়েছে। আর শেষ প্রহরী হিসেবে নিজের কাজটা ঠিকভাবেই পালন করেছেন রানা।

বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে পরের ম্যাচে বাংলাদেশ খেলতে যাবে ওমানের মাটিতে। ওমান অনেক শক্তিশালী দল হলেও কাতারের বিপক্ষে ভালো খেলা এবং ভারতের বিপক্ষে পয়েন্ট পাওয়ায় আত্মবিশ্বাস অনেকটাই বেড়েছে জামালদের। এবার ওমানের মাঠেও নিশ্চয়ই ছেড়ে কথা বলবে না জেমি ডের শিষ্যরা। ফুটবলে দিন বদলের গল্প তো কেবল শুরু।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর