সোমবার, ২৮ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

টেস্টে কিপিং নয়

ক্রীড়া প্রতিবেদক

টেস্টে কিপিং নয়

টেস্ট অভিষেক একজন সলিড ব্যাটসম্যান হিসেবে। ১৪ বছর আগে, ২০০৫ সালে স্বপ্নের লর্ডসে অভিষেক হয়েছিল মুশফিকুর রহিমের। সেই শুরু। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাননি। এখন পর্যন্ত খেলে চলেছেন দাপটের সঙ্গে। তবে দলের অন্যতম ব্যাটিং স্তম্ভের ক্রিকেট ক্যারিয়ার সব সময় মসৃণ ছিল না। তার ব্যাটিং নিয়ে সমালোচকরা কখনোই প্রশ্ন তোলেননি। কিন্তু উইকেটকিপিং নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছেন বারবার। দল এবং দলের বাইরে সমালোচকরা সবাই চেয়েছেন, মুশফিক যেন একজন ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলেন। চাপ কমাতে উইকেট কিপিংটা ছেড়ে দেন। সমালোচকদের এমন দাবিতে নানা সময় বিরক্ত হয়েছেন মুশফিক। তবে কিপিং ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেননি কখনো। উল্টো জানিয়েছেন, কিপিং করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। ৩০ অক্টোবর পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে ভারত যাচ্ছে বাংলাদেশ। সফর শুরু তিনটি টি-২০ ম্যাচ দিয়ে। এরপর দুই টেস্টে সিরিজ। টি-২০ স্কোয়াডে রয়েছেন সাবেক অধিনায়ক। টেস্ট স্কোয়াডেও থাকবেন। তবে ভারতের বিপক্ষে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে উইকেটের পেছনে গ্লাভস নিয়ে না দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সাবেক টেস্ট অধিনায়ক ৬৭ টেস্টে ৪০২৯ রান এবং ১০৩ ক্যাচ ও ১৫টি স্ট্যাম্প করা মুশফিকুর রহিম। উইকেট কিপিং না করার বিষয়টি তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছেন কোচ রাসেল ডোমিঙ্গোকে।

কুমার সাঙ্গাকারা, অ্যালেক স্টুয়ার্ট ক্রিকেট বিশ্বের দুই পরিচিত মুখ। সাঙ্গাকারা ‘দ্বীপরাষ্ট্র’ সাবেক অধিনায়ক এবং ব্যাটসম্যান কাম উইকেটরক্ষক। স্টুয়ার্টও ইংল্যান্ডের একই রোল প্লে করতেন। তবে ক্যারিয়ারের শেষের দিকে দুজন দলের হয়ে খেলেছেন শুধুমাত্র ব্যাটসম্যান হয়ে। এরমধ্যে চট্টগ্রামে বাংলাদেশের বিপক্ষে ব্যাটসম্যান সাঙ্গাকারা ট্রিপল সেঞ্চুরিও করেন। সমালোচকরা সব সময়ই মুশফিকের সামনে উদাহরণ হিসেবে সাঙ্গাকারাকে উপস্থাপন করেছেন। দেশের সবচেয়ে টেকনিক্যাল ক্রিকেটারটি এসব শুনে কখনো হেসেছেন, কখনো চুপ থেকেছেন। ব্যাট হাতে এবং গ্লাভস হাতে জবাব দিয়েছেন সমালোচনার। ৩২ বছর বয়সী মুশফিক ৬৭ টেস্ট খেলার পর উপলব্ধি করেছেন, টেস্টে চাপ কমাতে কিপিং ছেড়ে দেওয়াই ভালো। এরপর জানিয়েছেন নিজের সিদ্ধান্ত, ‘আমি সব সংস্করণেই কিপিং করেছি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছাড়াও বিপিএল, ডিপিএলেও কিপিং করেছি। গত ৫ বছরে বড় ধরনের কোনো ইনজ্যুরিতে পড়িনি। এখন আমার মনে হয় একটু ওভারলোড হয়ে যাচ্ছে। ওভারলোড কমাতে কিপিং ছেড়ে দেওয়াকে উত্তম মনে করেছি। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু হওয়ায় আমাদের টেস্ট খেলার সংখ্যাও বাড়ছে। আমি আরও খেলতে চাই।’ শুধু টেস্টে নয়, ওয়ানডে ও টি-২০ ম্যাচেও কিপিং করেন মুশফিক। আগামী বছর অষ্ট্রেলিয়ায় টি-২০ বিশ্বকাপ। সেখানে খেলতে চান মুশফিক। তবে টিম ম্যানেজমেন্ট যদি চায় সব ফরম্যাটে কিপিং ছেড়ে দিতে। তাহলে সেটা মানতেও প্রস্তুত বলেন মুশফিক, ‘টিম ম্যানেজমেন্ট যদি চায় সব ফরম্যাটে কিপিং ছেড়ে দেই, তাহলে দলকে প্রাধান্য দিতেই হবে আমাকে। আপাতত টেস্টে কিপিং করতে চাই না।’ তিনটি টি-২০ ও দুটি টেস্ট খেলতে ৩০ অক্টোবর ঢাকা ছাড়বেন মুশফিকরা। ভারতের মাটিতে ভালো ক্রিকেট খেলতে চান মুশফিক, ‘ভারতের মাটিতে ভারত দারুণ শক্তিশালী দল। ওরা ফেবারিট। তারপরও আমরা যদি ভালো ক্রিকেট খেলে চমকে দিতে পারি, সেটাই হবে দারুণ ব্যাপার।’ ২০০০ সালে টেস্ট খেলুড়ে দেশ হওয়ার পর এ্ই প্রথম পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে ভারত যাচ্ছে বাংলাদেশ। স্বপ্নের সিরিজ শেষ করে ক্রিকেটাররা দেশে ফিরুক, এটাই চাওয়া ক্রিকেটপ্রেমীদের।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর