বুধবার, ৩০ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

ফাইনালে তেরেনগানু

লি টাক ম্যাজিক

রাশেদুর রহমান, চট্টগ্রাম থেকে

ফাইনালে তেরেনগানু

একদিকে শারীরিক শক্তিতে এগিয়ে থাকা ভারতের মোহনবাগান। অন্যদিকে ট্যাকনিক্যালি প্রতিপক্ষকে কুপোকাত করা মালয়েশিয়ার তেরেনগানু। লড়াইটা শুরু হতেই মোহনবাগানের দৌরাত্ম্য দেখল এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে থাকা কয়েক হাজার দর্শক। তবে মোহনবাগানের মুহুর্মুহু আক্রমণে বরং তাদের মধ্যে শঙ্কাই ছড়িয়েছে। এই মোহনবাগানের কাছেই যে চট্টগ্রাম আবাহনী হেরেছিল গ্রুপপর্বে! হয়ত সে কারণেই গতকাল শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে লি টাকদের সমর্থন দিয়েছে স্থানীয় দর্শকরা। ম্যাচটায় শেষ পর্যন্ত অবশ্য দর্শকদেরই জয় পেয়েছে। তেরেনগানু ৪-২ গোলের জয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করেছে। কাল সন্ধ্যায় ফাইনালে স্বাগতিক চট্টগ্রাম আবাহনীর মুখোমুখি হবে তেরেনগানু। মোহনবাগানকে সেমিফাইনাল খেলেই বিদায় নিতে হলো। শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ এখনো পর্যন্ত লি টাকময় হয়ে আছে। দুই দুটি হ্যাটট্রিক করেছেন তিনি। তাও টানা দুই ম্যাচে। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে বসুন্ধরা কিংসের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেছিলেন ইংলিশ এ ফুটবলার। গতকালও হ্যাটট্রিক করলেন। এর মধ্যে দুটি গোল করলেন ফ্রি কিক থেকে। একটি পেনাল্টি থেকে। লি টাকের মোহাচ্ছন্ন ফুটবলে মুগ্ধ হয়েছিল দর্শকরা। বিশেষ করে তার দ্বিতীয় গোলটাকে অবিশ্বাস্য বলেই মনে হচ্ছিল। ৩৫ গজ দূর থেকে মানবপ্রাচীরের ওপর দিয়ে বাঁকানো শটে গোল ডান কর্ণার দিয়ে বল জালে জড়ান তিনি। দৃষ্টিনন্দন এই গোলের পর লি টাকের ভক্ত হতে পারেন অনেকেই। অবশ্য বাংলাদেশে লি টাকের ভক্ত অনেক আগে থেকেই ছিল। আবাহনীর জার্সিতে তিনি খেলেছেন ঢাকার মাঠে। সেসময় তার গোলের সৌন্দর্য উপভোগ করেছে ফুটবলমোদীরা। লি টাক গতকালের পারফরম্যান্সে টুর্নামেন্ট সেরা হওয়ার পথে অনেকটাই এগিয়ে গেলেন। তার গোল ছয়টি।

তাছাড়া দলকে ফাইনালে তুলতে তার অবদানই সবচেয়ে বেশি।

গতকাল ম্যাচের শুরুতে মোহনবাগান ভালো খেললেও শুরুতে এগিয়ে যায় তেরেনগানু। ৩৮ মিনিটে ডি বক্সের কয়েক গজ বাইরে থেকে ফ্রি কিকে মাটি ঘেঁষা শট নিয়ে গোল করেন লি টাক। বলের লাইন বুঝতেই পারেননি মোহনবাগানের গোলরক্ষক দেবজিৎ। অবশ্য দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম মিনিটেই পেনাল্টি থেকে গোল করে মোহনবাগানকে সমতায় ফেরান ফ্রান্সিসকো গঞ্জালেস। ব্রিটোকে ডি বক্সের ভিতরে ফাউল করলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান নেপালি রেফারি শ্রাবণ কুমার তামাঙ। অবশ্য ম্যাচের রোমাঞ্চ তখনো শেষ হয়নি। ৫৮ মিনিটে ৩৫ গজ দূর থেকে বাঁকানো ফ্রি কিকে ডান পাশের টপ কর্ণার দিয়ে বল জালে জড়ান লি টাক। এবারেও সমতায় ফিরে মোহনবাগান। ৬০ মিনিটে যোসেবা বেইটিয়ার লম্বা ফ্রি কিকে বল পেয়ে হেডে দারুণ গোল করেন ফ্রান্সিসকো গঞ্জালেস। কিন্তু রোমাঞ্চের বাকি আছে আরও। ৭৪ মিনিটে বাম প্রান্ত দিয়ে আক্রমণে যান তেরেনগানুর ছোটখাটো ফুটবলার মোহাম্মদ শফিক। দুজন ডিফেন্ডারকে পরাস্ত করে কোণাকুণি শটে বল জালে জড়ান তিনি। এরপর ৭৮ মিনিটে লি টাক পেনাল্টি থেকে মাটি গড়ানো শটে গোল করে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করার পাশাপাশি দলের জয়ও নিশ্চিত করেন। ব্রুনো সুজুকি গোলরক্ষককে কাটিয়ে গোল করতে গেলে ডি বক্সের ভিতর তাকে ফাউল করেন দেবজিৎ। সঙ্গে সঙ্গেই রেফারি হলুদ কার্ড দেখান। পেনাল্টির বাঁশি বাজান।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর