বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা
চট্টগ্রাম আবাহনী না তেরেঙ্গানু

শিরোপা কার

রাশেদুর রহমান, চট্টগ্রাম থেকে

শিরোপা কার

মাঠে চ্যাম্পিয়ন হতে হলে আগে নিজেকে চ্যাম্পিয়ন ভাবতে হবে- এ মন্ত্রে উদ্দীপ্ত করে একটা দল গড়ে তুলেছেন কোচ মারুফুল হক। দলটা নির্ভীকভাবে লড়াইয়ের ময়দানে নেমে আসে। প্রতিপক্ষ যেই হোক, বুকে প্রচ  আত্মবিশ্বাস নিয়ে জয়ের নেশায় ছুটে চলে। বাধার পাহাড় ডিঙিয়ে একের পর এক জয় ছিনিয়ে আনে। সমর্থকরা এই নিয়ে উচ্ছ্বাসের প্রবল বন্যায় ভেসে যায়। শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপের ফাইনাল নিশ্চিত করা মারুফুল হকের দল চট্টগ্রাম আবাহনীর লক্ষ্য এবার, দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হওয়া। প্রতিপক্ষ বেশ শক্তিশালী, মালয়েশিয়ান ক্লাব তেরেঙ্গানু। যেখানে খেলেন লি টাকের মতো ফুটবলার। যিনি লিওনেল মেসির মতো ফ্রি কিক থেকে দারুণ সব গোল করতে পারেন। কিন্তু তাতে কী! লক্ষ্যে অবিচল থাকলেই তো সফলতা আসে। কোচ মারুফুলের মন্ত্রটা তাই ফাইনালেও একই থাকছে- চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আগেই নিজেদের চ্যাম্পিয়ন ভাবতে হবে। কিন্তু প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক কোনো টুর্নামেন্ট খেলতে আসা তেরেঙ্গানুও মরিয়া। নিজেদেরকে আন্ডারডগ ভাবলেও বিজয়ী হয়েই দেশে ফিরতে চায় দলটা। শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপের প্রথম আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল চট্টগ্রাম আবাহনী। তৃতীয় আসরে খেলতে নামার আগেই দলটা ঘোষণা করেছিল, এবার আমরা শিরোপা পুনরুদ্ধার করতে চাই। সেই লক্ষ্য পূরণের শপথ এখন অনেকটাই বাস্তবায়নের পথে। কিন্তু হিমালয়সহ বাধা হয়ে সামনে দাঁড়িয়ে আছে তেরেঙ্গানু। যারা এবারে টুর্নামেন্টে মাত্র চারটা ম্যাচ খেলেই গোল করেছে ১৩টা। এর মধ্যে এক ম্যাচে কোনো গোলই পায়নি! এর অর্থ তিন ম্যাচে ১৩ গোল! অবিশ্বাস্য এই স্ট্রাইকিং লাইনের বিপক্ষে চট্টগ্রাম আবাহনী কী কিছুটা নড়বড়ে নয় ফাইনালে! কোচ মারুফুল হক তা মানতে নারাজ। তিনি এক কথায় বলে দিলেন, ‘ম্যাচে আমরাই ফেবারিট।’ তাছাড়া চট্টগ্রাম আবাহনীও তো ১১টা গোল করেছে।

 অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়াও শিরোপা ছাড়া অন্য কিছু ভাবছেন না। অবশ্য কিভাবে প্রতিপক্ষকে আটকানো যাবে তার ব্যাখ্যাটাও দিলেন কোচ মারুফ। ‘ওরা ভালো। লি টাক আর সুজুকিদের নিয়ে দারুণ কম্বিনেশন আছে। কিন্তু এই কম্বিনেশন ভাঙার মন্ত্রটাও জানা আছে আমাদের। ওদের মূল প্লেয়ারদের বাধা দিয়ে আমাদের মূল প্লেয়ারদের জন্য পথ তৈরি করতে হবে। তাহলেই সফলতা আসবে।’ দুটা দল মোটামুটি একই রকমভাবে খেলে বলে দাবি করেছেন তেরেনগানুর কোচ। তবে মারুফের মতে,  তেরেনগানুর মিডফিল্ড সব সময় ম্যাচটা নিয়ন্ত্রণ করে। এরপর লিঙ্ক আপ করে স্ট্রাইকে যায়। আর চট্টগ্রাম আবাহনী বিল্ড আপ করে নিজেদের জোন থেকে। এখান থেকেই আক্রমণের ছকটা গড়ে ওঠে। অবশ্য টুর্নামেন্টে দুটা হ্যাটট্রিক করা লি টাককে নিয়ে বেশ চিন্তিত মারুফ। তিনি বলেন, ‘লি টাক এ টুর্নামেন্টে আউটস্ট্যান্ডিং পারফরম্যান্স দেখিয়েছে। তার মতো ফুটবলারের আরও বড় লেভেলে খেলা উচিত।’ তেরেনগানুর সেট পিস নিয়েও কাজ করছেন তিনি। লি টাক ৬টা গোলের তিনটাই করেছেন পেনাল্টি থেকে। দুইটা করেছেন ফ্রি কিক থেকে। তাকে নিয়ে বাড়তি চিন্তা তো থাকবেই! তবে গোপন একটা প্রস্তুতির খবর জানিয়ে গেলেন চট্টগ্রাম আবাহনীর কোচ। সেটা নাকি মাঠেই দেখা যাবে।

তবে একটা দিক দিয়ে এগিয়ে থাকবে তেরেনগানু। মালয়েশিয়ান লিগে নাকি তারা প্রায়ই ১০/২০ হাজার দর্শকের সামনে খেলে। বাংলাদেশের ফুটবলে দর্শক আসতে শুরু করেছে খুব বেশিদিন হয়নি। আজ ফাইনালে নিশ্চয়ই গ্যালারিপূর্ণ দর্শক থাকবে। এই চাপ চট্টগ্রাম আবাহনীর চেয়ে তেরেনগানুই সামাল দিতে পারবে বেশি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর