বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা
ঘরের মাঠে আগ্রাসী ভারত

ভালো খেলার মন্ত্র টাইগারদের

২০১৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত দেশের মাটিতে ৩২টি ম্যাচ খেলেছে ভারত। এর মধ্যে হেরেছে মাত্র একটি ম্যাচ। জয় ২৬টি। বাকি পাঁচ ম্যাচ ড্র। ঘরের মাঠে ভারত সাদা পোশাকে যে কতটা আগ্রাসী তা বোঝার জন্য এ পরিসংখ্যানই যথেষ্ট

মেজবাহ্-উল-হক

ভালো খেলার মন্ত্র টাইগারদের

ঘরের মাঠে ভারতের টেস্ট রেকর্ড সম্পর্কে জানেন?

২০১৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত দেশের মাটিতে ৩২টি ম্যাচ খেলেছে ভারত। এর মধ্যে হেরেছে মাত্র একটি ম্যাচ। জয় ২৬টি। বাকি পাঁচ ম্যাচ ড্র। ঘরের মাঠে ভারত সাদা পোশাকে যে কতটা আগ্রাসী তা বোঝার জন্য এ পরিসংখ্যানই যথেষ্ট। দুই বছর মেয়াদি (২০১৯-২১) বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট তালিকায় এখন শীর্ষে দেশটি। দুই সিরিজে ২৪০ পয়েন্ট অর্জন করেছেন বিরাট কোহলিরা।

বিশ্ব ক্রিকেটের এই আগ্রাসী দলটির বিরুদ্ধে তাদের ঘরের মাঠে আজ খেলতে নামছে বাংলাদেশ। তাও আবার দলের সেরা দুই ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবাল ছাড়া। টি-২০-তে বেশ কয়েকজন তারকা ক্রিকেটারকে বিশ্রামে রাখলেও ভারত আজ টেস্ট খেলতে নামছে তাদের সেরা শক্তি নিয়েই।

বাংলাদেশের অনুপ্রেরণা টি-২০ সিরিজের প্রথম ম্যাচটি। ওই ম্যাচে ভারতকে রীতিমতো উড়িয়ে দিয়েছিলেন টাইগাররা। কিন্তু টি-২০ ও টেস্ট তো এক নয়! তা ছাড়া ভারতের কেবল রোহিত শর্মা ছাড়া টেস্ট একাদশের বাকি ১০ ক্রিকেটারই আলাদা। স্পিনে রয়েছেন অভিজ্ঞ দুই তারকা রবীচন্দ্রন অশ্বিন ও রবীন্দ্র জাদেজা। পেস বোলিংয়ে ইশান্ত শর্মা, উমেশ যাদব ও মোহাম্মদ সামি। তবে ভারতের শক্তির প্রধান জায়গা তাদের বিশ্বসেরা ব্যাটিং লাইনআপ। রোহিত শর্মা, মায়াঙ্ক আগারওয়াল, চেতেশ্বর পূজারা, আজিঙ্কা রাহানের সঙ্গে রয়েছেন সুপারস্টার কোহলি। লাল বলে উইকেটের পেছনে থাকা ঋদ্ধিমান সাহাও কম কীসে! পুরো সুপার পাওয়ার এক দল।

আর বাংলাদেশ দলে তারুণ্যের জোয়ার! এ ম্যাচে অভিষেক হতে পারে সাইফ হাসানের। তাকে দেখা যেতে পারে সাদমানের সঙ্গে ওপেন করতে। ওপেনার হিসেবে আছেন ইমরুল কায়েসও। এখন টিম ম্যানেজমেন্টই সিদ্ধান্ত নেবেন তামিমের জায়গায় সাদমানের সঙ্গী হিসেবে কাকে খেলানো হবে- সাইফ নাকি ইমরুল!

মিডল অর্ডারে মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও মোহাম্মদ মিথুন। সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের ওপেনার লিটন দাসকে দেখা যাবে সাত নম্বরে ব্যাট করতে। মেহেদি হাসানও আছেন। সেদিক থেকে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপটা বেশ লম্বা।

এ ম্যাচে আসল পরীক্ষা দিতে হবে বাংলাদেশের বোলারদের। বিশ্বসেরা ব্যাটিং লাইনআপকে আটকে দিতে হবে! কিন্তু বাংলাদেশ মাঠে নামছে চারজন বোলার নিয়ে। দুজন ওপেনার, দুজন স্পিনার। আবু জায়েদ রাহীর সঙ্গে পেস আক্রমণে থাকবেন মুস্তাফিজুর রহমান। তবে শেষ মুহূর্তে কাটার মাস্টারের জায়গায় দেখা যেতে পারে তরুণ এবাদত হোসেনকেও। আবার পরিবর্তন আসতে পারে স্পিন আক্রমণেও। মেহেদী হাসান মিরাজ ও তাইজুলের সঙ্গে নাঈম হাসানকেও রাখা হতে পারে একাদশে। সে ক্ষেত্রে একজন ব্যাটসম্যান কমাতে হবে।

ইন্দোরের হলকার স্টেডিয়ামে আজ ভারত মাঠে নামছে তিন পেসার নিয়ে। সেখানে স্পিনে ভরসা করেই একাদশ সাজিয়েছে বাংলাদেশ।

এ ম্যাচ দিয়েই টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে অভিষেক হচ্ছে মুমিনুল হকের। নতুন অধিনায়ক অবশ্য বাংলাদেশকে আকাশছোঁয়া স্বপ্ন দেখাচ্ছেন না। বরং জপছেন ভালো খেলার মন্ত্র! মুমিনুল বলেন, ‘আমরা কোনো চাপে নেই। সবাই জানি, এ সিরিজ থেকে আমাদের আহামরি কোনো প্রত্যাশা নেই। তাই কোনো চাপও নেই। আমার লক্ষ্য একটাই- ভালো ক্রিকেট খেলা।’

তবে ঘরের মাঠে দুর্দান্ত রেকর্ড থাকলেও বাংলাদেশকে মোটেও হালকাভাবে নিচ্ছেন না ভারতের অধিনায়ক কোহলি, ‘প্রায় একই কন্ডিশনে তারা খেলে অভ্যস্ত। অতীতেও তারা আমাদের বিরুদ্ধে ভালো খেলেছে। তাদের ক্রিকেটাররা বেশ স্কিলসম্পন্ন। বাংলাদেশকে তাই হালকাভাবে নেওয়ার কোনো উপায় নেই। তাদের প্রতি আমাদের সম্মান আছে, আবার নিজেদের প্রতিও আমাদের বিশ্বাস আছে, আমরা কী করতে পারি।’

কথাবার্তায় বিরাট কোহলি যত নমনীয়ই হোন না কেন, ব্যাট হাতে বাইশগজে তিনি যে কতটা আগ্রাসী তা কারও অজানা নয়! এখন দেখার বিষয়, টাইগাররা কতটা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেন কোহলির আগ্রাসী ভারতের বিরুদ্ধে! আর ‘মিরাকল’ কিছু ঘটে গেলে তো কথাই নেই। দিল্লির টি-২০ থেকেই সে অনুপ্রেরণা পাচ্ছে বাংলাদেশ!

 

সর্বশেষ খবর