রবিবার, ১৭ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা
ইনিংস ও ১৩০ রানে হার

টেস্ট শেষ তিন দিনেই

ক্রীড়া প্রতিবেদক

টেস্ট শেষ তিন দিনেই

মুশফিকুর রহিম ৬৪

বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে ১৫০, দ্বিতীয় ইনিংসে টেনেটুনে ২১৩ রান! ভারত জিতে যায় ইনিংস ও ১৩০ রানে। মাত্র তিন দিনেই শেষ হয়ে গেল ইন্দোর টেস্ট। ভারতের সামনে দাঁড়াতেই পারল না টাইগাররা। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং-তিন বিভাগেই ছন্নছাড়া বাংলাদেশ দল।

টি-২০ সিরিজের প্রথম ম্যাচে জিতে চমক দেখিয়েছিল টাইগাররা। শেষ ম্যাচেও ছিল তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঝাঁজ। কিন্তু টেস্টে উল্টো চিত্র। ইন্দোরের ব্যাটিং স্বর্গে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা দাঁড়াতেই পারলেন না! অথচ ভারত প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেটে ৪৯৩ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে। বোলিংয়েও একই চিত্র। বাংলাদেশের বোলাররা বাইশগজে প্রতিরোধই গড়তে পারলেন না, আর ভারতের বোলারদের তান্ডবে নাভিশ্বাস উঠে গিয়েছিল টাইগার ব্যাটসম্যানদের।

ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের দুই ইনিংসে কোনো সেঞ্চুরি তো নেই-ই, হাফ সেঞ্চুরিও মাত্র একটি। দুই ইনিংসেই বাংলাদেশের শীর্ষ রান সংগ্রাহক মুশফিকুর রহিম। প্রথম ইনিংসে করেছিলেন ৪৩ রান, দ্বিতীয় ইনিংসে ৬৪। মাত্র ৩১ রানে ৪ উইকেট নিয়েছেন ভারতের বোলার মোহাম্মদ সামি। ম্যাচ সেরা হয়েছেন মায়াঙ্ক আগারওয়াল। প্রথম ইনিংসে খেলেছিলেন ২৪৩ রানের ইনিংস।

দুই দলের প্রথম ইনিংসের পরই ফল অনেকটা নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। তবে আশা ছিল শেষ পর্যন্ত ইনিংস হার এড়াতে পারে কিনা সফরকারীরা। কিন্তু প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও ব্যর্থ বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা।

লজ্জাজনক এই হার দিয়েই সাদা পোশাকে অধিনায়ক হিসেবে অভিষেক হলো মুুুমিনুল হকের। এমন ম্যাচের কথা মনে রাখতে চান না টাইগার দলপতি। তিনি বলেন, ‘আমরা এই টেস্ট ভুলে যেতে চাই। সবকিছু অতীত। আমাদের সামনের দিকে তাকাতে হবে এবং কলকাতায় আমরা আরেকটি সুযোগ পাচ্ছি। আমাদের সেই সুযোগটি কাজে লাগাতেই হবে।’

এমনিতেই টেস্টে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স যাচ্ছেতাই। আর দেশের বাইরের ফল তো আরও ভয়াবহ। ভারতের মাটিতে খেলা এর আগে একমাত্র টেস্টেও ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ। হেরেছিল ২০৮ রানের বিশাল ব্যবধানে। তবু সেই ম্যাচে এক ইনিংসে বড় স্কোর করেছিল বাংলাদেশ। এই টেস্টে শুধু হতাশা।

মুমিনুল বলেন, ‘দেশের বাইরে টেস্ট খেলা সবসময় চ্যালেঞ্জিং আমার কাছে মনে হয়। আমরা দেশের বাইরে খুব একটা ভালো খেলতে পারি না। এটি অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং সত্যি কথা বলতে। অনেক চাপ থাকে, সেভাবে সবাইকে মানসিকভাবে প্রস্তুত হতে হবে। অনুশীলন করতে হবে।’

তারপরও ইন্দোর টেস্টে ইতিবাচক দিকও লক্ষ্য করছেন অধিনায়ক। মুমিনুল বলেন, ‘আমরা ভালো ব্যাটিং করিনি, যদিও আমাদের কিছু ইতিবাচক দিক ছিল। মুশফিক, লিটন এবং মিরাজ ভালো ব্যাটিং করেছে দুই ইনিংসেই। কিন্তু আমরা দল হিসেবে খেলিনি। আমরা বড় জুটি গড়তে পারিনি এবং দল হিসেবে খেলিনি।’ 

দুই ইনিংসেই বাংলাদেশের দুই ওপেনার ব্যর্থ হয়েছেন। একবারও তারা দুই অঙ্কের কোটায় পৌঁছাতে পারেননি। কাকতালীয় হচ্ছে, দুই ওপেনারই দুই ইনিংসেই ৬ করে রান নিয়েছেন। টপ অর্ডারের অন্যরাও সুবিধা করতে পারেননি। এ কারণেই বাংলাদেশের ইনিংস বড় হয়নি বলে মনে করেন মুমিনুল। তিনি বলেন, ‘আমরা যে বোলিংয়ের বিরুদ্ধে খেলেছি সেটা অনেক চ্যালেঞ্জিং। ওপেনাররা যদি ১৫-২০ ওভার পর্যন্ত টিকে থাকতে পারত তাহলে মনে হয় পরের দিকে সহজ হতো। ওই ওভারে আমাদের একটু চ্যালেঞ্জ নিতে হবে।’

বাংলাদেশের বোলাররা সুবিধা করতে না পারলেও ভারতীয় বোলাররা ছিলেন ভয়ঙ্কর রূপে। তাই মুমিনুল মনে করেন সামি, শর্মাদের কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে বাংলাদেশের বোলারদের। তিনি বলেন, ‘কিভাবে নতুন বল ও পুরনো বল ব্যবহার করতে হয় সে সম্পর্কে ভারতের পেসারদের কাছ থেকে শেখার আছে।’

সব কিছুর পরও এই ম্যাচের কথা ভুলে বাংলাদেশ এখন তাকিয়ে আছে কলকাতা টেস্টের দিকে। ২২ নভেম্বর দিবা-রাত্রির ম্যাচ খেলতে নামবে টাইগাররা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর