মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা
কলকাতা টেস্ট শুরু ২২ নভেম্বর

মিশন এবার গোলাপি বলে

ইতিমধ্যেই বিক্রি হয়ে গেছে ঐতিহাসিক টেস্টটির প্রথম তিন দিনের ৪২ হাজার টিকিট। টিকিট না পেয়ে হাহাকার বাড়ছে ক্রিকেটপ্রেমীদের। গোলাপি বলে ঐতিহাসিক টেস্ট খেলতে গতকাল ইন্দোর থেকে কলকাতায় পা রেখেছে টাইগাররা

আসিফ ইকবাল

মিশন এবার গোলাপি বলে

অনুশীলনে হাস্যোজ্জ্বল তিন পেসার আল আমিন, আবু জায়েদ রাহী ও মুস্তাফিজুর রহমান -বিসিবি

গোলাপি বলে দিবা-রাত্রির টেস্ট আয়োজনে প্রস্তুত ‘নন্দনকানন’ ইডেন। ভারতের সবচেয়ে পুরনো ক্রিকেট স্টেডিয়ামটি বাংলাদেশ ও ভারতীয় ক্রিকেট দলকে স্বাগত জানাতে অধির আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় ক্ষণ গুনছে। ইতিমধ্যেই বিক্রি হয়ে গেছে ঐতিহাসিক টেস্টটির প্রথম তিন দিনের ৪২ হাজার টিকিট। টিকিট না পেয়ে হাহাকার বাড়ছে ক্রিকেটপ্রেমীদের। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড সভাপতি ও সাবেক অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলী চেষ্টার সর্বোচ্চটাই করছেন সফল টেস্ট আয়োজনে। গোলাপি বলে ঐতিহাসিক টেস্ট খেলতে গতকাল ইন্দোর থেকে কলকাতায় পা রেখেছে টাইগাররা। টেস্ট মাঠে গড়াবে ২২ নভেম্বর স্থানীয় সময় দুপুর ১ টায়।

কলকাতায় বাংলাদেশ এর আগেও ম্যাচ খেলেছে। তবে এবারই প্রথম সাদা পোশাকে খেলবে। গোলাপি বলে দুই দলের অভিষেক হচ্ছে শুক্রবার। ২০০০ সালের ১০ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয়েছিল বাংলাদেশের। আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপেও বাংলাদেশের অভিষেক ভারতের বিপক্ষে। গত ১৯ বছরে দুদল টেস্ট খেলেছে ১০টি এবং এবারই প্রথম গোলাপি বলে খেলবে। গোলাপি বলে এটাই প্রথম টেস্ট নয়। ২০১৫ সালে অ্যাডিলেডে গোলাপি বলে টেস্ট অভিষেক। অস্ট্রেলিয়া ম্যাচটি জিতেছিল ৩ উইকেটে। আবুধাবি স্টেডিয়ামে গোলাপি বলে দ্বিতীয় টেস্টে পাকিস্তান ৫৬ রানে হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজে। সর্বশেষ গোলাপি বলে টেস্ট অনুষ্ঠিত হয় চলতি বছর জানুয়ারিতে। ব্রিসবেনের ওই টেস্টে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া ইনিংস ও ৪০ রানে হারায় শ্রীলঙ্কাকে। গোলাপি বলে এখন পর্যন্ত টেস্ট হয়েছে ১০টি। অস্ট্রেলিয়া খেলেছে ৪টি, তিনবার ইংল্যান্ড, ২ বার করে খেলেছে পাকিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, দক্ষিণ আফ্রিকা ও নিউজিল্যান্ড এবং জিম্বাবুয়ে খেলেছে একবার। কলকাতা টেস্টসহ চলতি বছর আরও দুটি টেস্ট হবে গোলাপি বলে।

ইন্দোরের সবুজ ঘাসের উইকেটে ভারতীয় পেসারদের গতি, বাউন্স ও সুইংয়ের বিপক্ষে অসহায় ছিলেন টাইগার ব্যাটসম্যানরা। দুই টাইগার ওপেনার সাদমান ইসলাম ও ইমরুল কায়েশ কেউই দুই অংকের রান করতে পারেননি। কলকাতায় ইমরুলের বদলে সাইফ হাসানের অভিষেক হলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। যদিও ইন্দোরে ফিল্ডিং করার সময় আঙ্গুলে সেলাই করেছে সাইফের। মিডল অর্ডারে মুশফিকুর রহিম ছাড়া আর কোনো ব্যাটসম্যান প্রতিরোধ গড়তে পারেননি। শামি-ঈশান্ত-যাদবের গতি, সুইংয়ের বিপক্ষে টাইগারদের সাবেক অধিনায়ক মুশফিক প্রথম ইনিংসে ৪৩ রান করেন। দ্বিতীয় ইনিংসে খেলেন ৬৪ রানের ইনিংস। কুয়াশাভেজা উইকেটে টস জিতে ব্যাট করে ১৫০ রানে গুটিয়ে যাওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসে ২১৩ রান করে টাইগাররা। দ্বিতীয় ইনিংসে মুশফিক ছাড়াও রান করেন লিটন দাস ৩৫, মেহেদী হাসান মিরাজ ৩৮। ইন্দোরে শুধু ব্যাটসম্যানরাই ব্যর্থ  ছিলেন, সেটা নয়। আবু জায়েদ রাহী ছাড়া আর কোনো বোলার প্রতিপক্ষের উপর প্রভাব ফেলতে পারেননি। রাহী ২৮ ওভারের স্পেলে ১০৮ রানে খরচে নেন ৪ উইকেট। যদিও এবাদত হোসেন একটি উইকেট নেন। কিন্তু দুই স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ ও তাইজুল ছিলেন ব্যর্থ। মিরাজ এক উইকেট পেলেও তাইজুলের পারফরম্যান্স ছিল যাচ্ছেতাই। স্পিনারদের ব্যর্থতা এবং রাহীর পারফরম্যান্স পরিষ্কার করে দেয় ইন্দোরে টিম ম্যানেজমেন্ট একটি ভুল করেছে একজন পেসার না খেলিয়ে।

ইডেনের উইকেটে বাউন্স ও গতিও বেশি। এমন উইকেটে শামি, যাদব, ও ঈশান্তকে সামলাতে পরিকল্পিত ব্যাটিং করতে হবে মুমিনুলদের। কোহলি, রোহিত শর্মা, আগারওয়াল, পুজারাদের সমস্যায় ফেলতে টাইগার বোলারদের আরও নিয়ন্ত্রিত বোলিং করতে হবে। ইডেনে গোলাপি বলে খেলতে মুশফিক, মুমিনুলরা কতটা প্রস্তুত, সেটাই এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর