বুধবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

ইতিহাসের মাঝেও হতাশা

ক্রীড়া প্রতিবেদক, নেপাল থেকে

কর্মকর্তা বা ক্রীড়াবিদরা সাহস করে বলতে পারেননি। এসএ গেমসে বাংলাদেশের চিফ দ্য মিশন আসাদুজ্জামান কোহিনুর ঢাকাতেই বলে যান, ২০১০ সালে গেমসে সর্বোচ্চ ১৮ সোনার রেকর্ড ভাঙা সম্ভব নয়, তা আশা করাটাও ভুল হবে। তবে এতটুকু বলতে পারি গৌহাটির চেয়ে বেশি সোনা আসবে। কর্মকর্তারা নিশ্চিত ছিলেন না। অথচ স্বল্প প্রস্তুতি ও প্রতিকুলতার মধ্যেও ক্রীড়াবিদরা ইতিহাস গড়েছেন। ভেঙে দিয়েছেন সর্বোচ্চ ১৮ সোনা জেতার রেকর্ড। দেশে নয়, দে১েশর বাইরে। যা ভাবাই যায়নি তা করে দেখিয়েছেন বাংলার সোনার ছেলে-মেয়েরা। দেশের মান রক্ষা করায় তাদের স্যালুট দিতেই হয়। বিদেশের মাটিতে ১৯ বার ৩০ লাখ শহীদের বিনিময়ে পাওয়া আমার সোনার বাংলার জাতীয় সংগীত বেজেছে। এর চেয়ে গর্ব আর কি হতে পারে।

বিশেষ করে আরচারদের আলাদা ধন্যবাদ দিতেই হয়। নেপালে এসএ গেমসে আরচারি থেকে সোনা আসবে এ নিয়ে কারও সংশয় ছিল না। তবে ১০ বিভাগেই সব কটি সোনা এ এক অবিশ্বাস্য ঘটনাই বলা যায়। বাংলাদেশে তো বটেই আন্তর্জাতিক গেমস ইতিহাসে কোনো দেশ এক ডিসিপ্লিনে সব সোনা জিতেছে এ রেকর্ড খুঁজে পাওয়া যাবে না। আরচারে এমন সাফল্য না এলে বাংলাদেশ কোনোভাবেই নিজেদের রেকর্ড ভাঙতে পারত না।

কারাতে থেকে এসেছে তিন সোনা। ভারোত্তোলনে মাবিয়া আক্তার সীমান্ত তার সোনা ধরে রেখেছেন। পুরুষ বিভাগেও বেজেছে জাতীয় সংগীত। তায়কোয়ান্দে আসে এক সোনা। গেমসে প্রথমবার অন্তর্ভুক্ত ফেন্সিং থেকেও এসেছে এক সোনা। ক্রিকেটে পুরুষদের পাশাপাশি মেয়েরাও দেশকে সোনা উপহার দিয়েছে।

অনেকের ধারণা ভারত বেশ কটি ইভেন্টে অংশ না নেওয়ায় বাংলাদেশের এত সোনা জেতা সম্ভব হয়েছে। না, ভুল ধারণা। ক্রীড়াবিদদের যোগ্যতায় ১৯ সোনা জেতা সম্ভব হয়েছে। এ সংখ্যা বেড়ে পঁচিশও ছাড়িয়ে যেতে পারত। কিন্তু ইনজুরির কারণে তা সম্ভব হয়নি। এত সোনা জয়ের ইতিহাসের মাঝেও আছে চরম হতাশা।

যেকোনো গেমসের মূল আকর্ষণ থাকে অ্যাথলেটিকস, সাঁতার ও শুটিং। বিস্ময় হলেও সত্যি যে তিন বড় ইভেন্টেই ব্যর্থ বাংলাদেশের ক্রীড়াবিদরা। গত গেমসে মাহফুজা খাতুন শিলা সাঁতারে জোড়া সোনা জিতে চমক দেখিয়েছিলেন। এবার রুপাতেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে। অ্যাথলেটিকসের অবস্থা তো আরও করুণ। গেমস ইতিহাসে অ্যাথলেটরা শেষ সোনা কবে জিতেছিল তা হয়তো অনেকে ভুলে গেছেন। অথচ মালদ্বীপের মতো অ্যাথলেট এবার দ্রুততম মানব হয়েছেন। শুটিংয়ে গতবার ১টি সোনা এলেও এবার শূন্য। আশা জাগিয়ে রুপাতেই শেষ।

আর ফুটবলের হতাশায় নেপালে বাংলাদেশের সাংবাদিকরা লজ্জায় মুখ দেখাতে পারছিলেন না। অনূর্ধ্ব-২৩ হলেও গেমসে মূলত জামাল ভূঁইয়ার নেতৃত্বে জাতীয় দলই অংশ নেয়।

ভারতের মতো শক্তিশালী দল ছিল না। তারপরও কোনোমতে তামা জিতে দেশে ফিরেছে। ভুটানের মতো দল যেখানে ফাইনাল খেলে, সেখানে বাংলাদেশ পারে না। নেপাল তো ঠিকই সোনা ধরে রাখল। কাবাডিতে একই হাল। বড় কোনো ডিসিপ্লিনে সোনা নেই। তাই ইতিহাস গড়ার মাঝেও হতাশ হয়েছে ক্রীড়াপ্রেমীরা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর