রবিবার, ৮ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

নেতৃত্বের দৌড়ে এগিয়ে মাহমুদুল্লাহ

মেজবাহ্-উল-হক

নেতৃত্বের দৌড়ে এগিয়ে মাহমুদুল্লাহ

ছবি : রোহেত রাজীব

মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহিম নাকি তামিম ইকবাল-  কে হচ্ছেন জাতীয় ক্রিকেট দলের (ওয়ানডে) নতুন অধিনায়ক? মাশরাফি বিন মর্তুজা অবসর নেওয়ার পর এটাই ‘টক অব দ্য ক্রিকেট’!

সাকিব আল হাসানের নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবে নভেম্বরে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্র্ডেরও টার্গেট ২০২৩ সালের বিশ্বকাপ পর্যন্ত সাকিবকেই দায়িত্ব দিতে। তার আগে সামনের কয়েক মাসের জন্য একজন অধিনায়ক চাই! আজ ক্রিকেট বোর্ডের সভা আছে। এই সভাতেই সিদ্ধান্ত হতে পারে নতুন অধিনায়ক কে হবেন?

ক্রিকেট অপারেশন্স থেকে নতুন অধিনায়কের নাম সুপারিশ করা হবে বোর্ডের কাছে। তারপর সভায় বোর্ড পরিচালকরা সিদ্ধান্ত নেবেন। বিসিবির পরিচালক ও মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনূস গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমার ব্যক্তিগত মতামত সাকিব না ফেরা পর্যন্ত টি-২০ ও ওয়ানডেতে এক ক্যাপ্টেনই থাকুক!’

ক্রিকেট বোর্ডের আরও বেশ কয়েকজন পরিচালকও মাহমুদুল্লাহর কথা বলেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন বলেন, ‘চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন বোর্ড প্রেসিডেন্ট। তবে আমাকে জিজ্ঞেস করলে আমি মাহমুদুল্লাহর কথাই বলব। আমি মনে করি এই সময় বেশি পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করে সাকিব না ফেরা পর্যন্ত টি-২০ অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ওপরই আস্থা রাখা দরকার।’

বিসিবি পরিচালক আহমেদ সাজ্জাদুল আলম ববি অধিনায়ক নির্বাচনের বিষয়ে কিছুই জানেন না। তবে তিনি চান প্রক্রিয়াটা যাতে যথাযথ হয়। আহমেদ সাজ্জাদুল আলম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘এই মুহূর্তে বলা সম্ভব না। প্রথা অনুযায়ী ক্রিকেট অপারেসন্স কমিটির পরামর্শ বোর্ডের সভায়  উত্থাপন করা হয়ে থাকে  এবং সেটাকে ভিত্তি করে আলোচনা হয়!’

নতুন ওয়ানডে অধিনায়কের ব্যাপারে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে তিন সিনিয়রকে নিয়েই। তবে ‘অজ্ঞাত’ এক কারণে তামিম ইকবালকে অধিনায়ক হিসেবে বিসিবির পছন্দ নয়! আর মুশফিক তো কিছু দিন আগে নিজে থেকেই নেতৃত্ব নেওয়ার ব্যাপারে অনীহা প্রকাশ করেছেন! তা ছাড়া সাম্প্রতিক পাকিস্তান সফর নিয়ে তার সঙ্গে বোর্ডের ঠান্ডা যুদ্ধের বিষয়টা তো এখন ‘ওপেন সিক্রেট’! তাই মাহমুদুল্লাহই যেন সেরা অপশন!

তবে তিন সিনিয়র ক্রিকেটারের বাইরে তরুণদের নিয়েও টুকটাক আলোচনা আছে। কেউ কেউ ভাবছেন, সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য নতুন কাউকে দায়িত্ব দিয়ে পরখ করা যেতে পারে! কারণ ভবিষ্যতের জন্য তো অধিনায়ক দরকার। কিন্তু অধিনায়ক হিসেবে বিদায়বেলায় মাশরাফি জানিয়েছেন তরুণদের ওপর বাড়তি চাপ না দেওয়াই ভালো! তরুণদের হাতে নেতৃত্ব দেওয়া প্রসঙ্গে নড়াইল এক্সপ্রেস বলেছেন, ‘আমার ব্যক্তিগত মতামত যদি চান তাহলে অনেকটা কঠোর হতে পারে। আমি আগেও এক দিন বলেছিলাম একজন তরুণ খেলোয়াড় যখন বাংলাদেশ দলের জার্সি পরে খেলতে নামে তখন সেটাই তার জন্য অনেক বড় চাপ! আগের মতো ক্রিকেট এখন আর নেই। মানুষ তাকিয়ে থাকে, মিডিয়া তাকিয়ে থাকে। ক্যামেরা থাকে। পারফর্ম কেমন করছে। এত কিছুর ওপর সে ক্যাপ্টেন্সি করবে? এটা ডিপেন্ড করে। ক্রিকেট বোর্ড বা কোচিং স্টাফদের যদি মনে হয় যে এ (তরুণরা) অতটুকু চাপ সামলানোর মতো তাহলে কেন নয়? কিন্তু আমার মনে হয় অনেক বেশি ভেবেচিন্তে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।’

তবে মাশরাফির সোজাসাপ্টা কথা, বিসিবি চাইলে মাহমুদুল্লাহ, মুশফিক কিংবা তামিমের যে কাউকে চোখ বন্ধ করে নেতৃত্ব ভার তুলে দিতে পারে! তিনি বলেন, ‘আমাদের সিনিয়র খেলোয়াড় আছে। তাদের অবশ্যই সামর্থ্য আছে। তাদের কারও সঙ্গে কথা বলে যাকে মনে হয় দিলে ভালো হয়, স্টেক ওপরে যাবে, তাদের সঙ্গে আলোচনা করে যদি আনা হয় তাহলে সেটাই দলের জন্য ভালো। সিনিয়ররা সবাই সামর্থ্য রাখেন। আগে-পরে তারা অধিনায়কত্ব করেছেও। এখন দেখার বিষয় কাকে দায়িত্ব দেয় বিসিবি!’

আজকের বোর্ড মিটিংয়ে নতুন অধিনায়ক চূড়ান্ত করার বিষয়টি ছাড়াও আলোচনা হবে শেখ হাসিনা স্টেডিয়ামের কনসালটেন্সির জন্য দরপত্র জমা দেওয়া ২৪ প্রতিষ্ঠানের মধ্য থেকে ৮টি কোম্পানি নির্বাচন করার জন্য টেকনিক্যাল কমিটি গঠন এবং পরবর্তী এজিএম নিয়ে। তবে ক্রিকেটামোদীদের দৃষ্টিজুড়ে থাকবে একটা বিষয়ইÑ আজ অধিনায়ক হিসেবে মাশরাফির স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন কে?

সর্বশেষ খবর