এএফসি কাপে মালদ্বীপ টিসি স্পোর্টসকে ৫-১ গোলে বিধ্বস্ত করেছিল বসুন্ধরা কিংস। অথচ পেশাদার লিগে দেখা গেল অন্য কিংসকে। যেখানে উজ্জীবিত হয়ে লড়ার কথা সেখানে কিনা ৩-০ গোলে এগিয়ে থেকেও চট্টগ্রাম আবাহনীর কাছে হেরে গেল ৩-৪ গোলে। ১৯৭৬ সালে আগাখান গোল্ডকাপে ৩ গোল হজম করে থাইল্যান্ডের বিপক্ষে ৩-৩ গোলে ড্র করে ঢাকা আবাহনী। ঘরোয়া ফুটবলে এ রেকর্ড কখনো ছিল না। গতকালকে কিংসের হারটা সত্যিই বিস্ময়কর। এমন ফলাফলে ম্যাচ শেষে কর্মকর্তা ও কোচের চোখে মুখে ছিল হতাশার ছাপ। নীলফামারী শেখ কামাল স্টেডিয়ামে বসুন্ধরা ঘরের মাঠে চট্টগ্রাম আবাহনীর সেকি উল্লাস। হবেই না কেন? ঘরোয়া ফুটবলে নতুন এক রেকর্ড গড়ল তারা। ৭ গোলের রোমাঞ্চকর ম্যাচে তাদের জয় স্মরণীয় হয়ে থাকল।
এএফসি কাপে জয়ের নায়ক ছিলেন মেসির সঙ্গে আর্জেন্টিনা দলে খেলা হারনান বারকোস। অভিষেক ম্যাচেই হ্যাটট্রিকসহ চার গোল করেন তিনি। বিদেশি কোটা পূরণ হয়ে যাওয়ায় বারকোস প্রথম পর্বে কিংসের হয়ে খেলতে পারবেন না। তাতে কি? বারকোস ছাড়া কিংসের শক্তি কি কম বলা যাবে। তাও আবার ৬২ মিনিট পর্যন্ত ৩-০ গোলে এগিয়ে থেকে কিংস হেরে যাবে তা কি বিশ্বাস করা যায়! লিগে আগের ম্যাচে মোহামেডানের কাছে হারাতে জয়টা খুবই জরুরি ছিল কলিনড্রেসদের। সত্যি বলতে কি শুরুটাও হয়েছিল দারুণভাবে। কিংসের লাগাতার আক্রমণের মুখে বন্দর নগরীর দলটিকে খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছিল না। ৪৩ মিনিটে আক্রাম নাজারভের পেনাল্টি গোলে এগিয়ে যায় কিংস। এরপর প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে নিকোলাস দেল মন্তের গোলে ব্যবধান দ্বিগুণ হয়।
প্রথমার্ধে ২ গোল দেওয়াতেই কিংসের জয় নিশ্চিত মনে হচ্ছিল। ৫৯ মিনিটে কলিনড্রেস গোল করলে মনে হচ্ছিল বসুন্ধরা বড় ব্যবধানে জিতেই মাঠে ছাড়বে। কিন্তু কিংসের রক্ষণভাগ প্রতিপক্ষের সামান্য আক্রমণ সামাল দিতেই তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে। ৬৪ মিনিটে ব্যবধান ১-৩ করেন চার্লস দিদিয়ে। এরপর পেনাল্টি থেকে নিক্সন করেন ২-৩। ৮৭ মিনিটে তারই গোলে ম্যাচে সমতা ফিরে চট্টগ্রামে আবাহনী। এরপর চিনেডু ম্যাথিউর গোলে অবিশ্বাস্য জয় পেয়ে যায় চট্টগ্রাম আবাহনী। এদিকে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে সানডে চিজোবার হ্যাটট্রিকে ঢাকা আবাহনী ৪-১ গোলে মুক্তিযোদ্ধাকে হারায়। এ জয়ে গোল ব্যবধানে শীর্ষে অবস্থান করছে তারা। ৬ ম্যাচে দুই আবাহনীর পয়েন্ট ১৩।
১ম গোল (বসুন্ধরা কিংস)
চ.আবাহনীর ডি-বক্সের ভিতর কলিন ড্রেসকে ফাউল করলে পেনাল্টি লাভ করে কিংস। আক্রাম নাজারভের গোলে এগিয়ে যায় তারা।
২য় গোল (বসুন্ধরা কিংস)
প্রথমার্ধের যোগ করার সময়ে অধিনায়ক কলিন ড্রেসের ফ্রি-কিকে বল পেয়ে গোল করেন দেলমন্ত্রে।
৩য় গোল (বসুন্ধরা কিংস)
৫৯ মিনিটে বখতিয়ারের কাছ থেকে বল পান কলিন ড্রেস। দূর থেকে শটে দলকে এগিয়ে রাখেন ৩-০ গোলে।
৪র্থ গোল (চ. আবাহনী)
৬৪ মিনিটে বাইলাইন থেকে নাজির ইসলামের বাড়ানো ক্রসে হেডে জালে বল পাঠান চট্টগ্রাম আবাহনীর চার্লস দিদিয়ের।
৫ম গোল (চ. আবাহনী)
৬৬ মিনিটে পেনাল্টি লাভ করে চট্টগ্রাম আবাহনী। নিক্সন রোচা চকৎকার শটে প্রতিপক্ষের গোলরক্ষক জিকোকে পরাস্ত করেন।
৬ষ্ঠ গোল (চ. আবাহনী)
৮৭ মিনিটে রোচা পুনরায় গোল করলে ম্যাচে সমতায় ফিরে চট্টগ্রাম আবাহনী।
৭ম গোল (চ. আবাহনী)
দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে লম্বা পাস ধরে রাব্বির ক্রসে আবাহনীর বিজয়সূচক গোলটি করেন চিনেডু।