বৃহস্পতিবার, ১৯ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা
প্রথম সরাসরি সম্প্রচার

বঙ্গবন্ধুর আগ্রহে বিশ্বকাপ ফাইনাল

ক্রীড়া প্রতিবেদক

বঙ্গবন্ধুর আগ্রহে বিশ্বকাপ ফাইনাল

১৯৭৪ সালে তৎকালীন পশ্চিম জার্মানিতে বিশ্বকাপ ফুটবল অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ সে বছর বাছাইপর্ব খেলতে পারেনি। ১৯৭২ সালে এশিয়ান অঞ্চলে বাছাইপর্ব হয়। সবেমাত্র তখন দেশ স্বাধীন হয়েছে। ফিফার সদস্যও হয়নি। তাই বাছাইপর্বে খেলা সম্ভব হয়নি জাতীয় দলের। না খেলুক বাংলাদেশ ফুটবল পাগল দেশ। বিশ্বকাপ এলেই উন্মাদনায় কাঁপে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান খ্যাতনামা ফুটবলার ছিলেন। কিভাবে বিশ্বকাপ সরাসরি এদেশের মানুষ দেখতে পারেন তা নিয়ে মন্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনা করলেন। বিশ্বকাপ হবে আর বাঙালিরা পরের দিন পত্রিকা দেখে তা জানবেন মানতে পারছিলেন না। বঙ্গবন্ধুর আগ্রহ ছিল ফাইনাল ঘিরেই। তিনি বললেন, সব ম্যাচ না অন্তত ফাইনালটা দেখানো যেতে পারে। দেশের প্রথম ভূ-উপগ্রহ বেতবুনিয়া তখন মাত্র চালু হয়। আলোচনায় বসলেন এই উপগ্রহের মাধ্যমে বিশ্বকাপের ফাইনাল বিটিভিতে দেখানো যায় কিনা। শেষ পর্যন্ত চেষ্টা সফল হলো। বেতবুনিয়া ভূ-উপগ্রহের মাধ্যমে এদেশের ক্রীড়াপ্রেমীরা ঘরে বসে ১৯৭৪ সালে পশ্চিম জার্মানি ও হল্যান্ডের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ দেখলেন। স্বপ্ন পূরণ হওয়ায় সে কি দর্শকদের আনন্দ। হল্যান্ডকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল জার্মানি। রাতের বেলায় ঢাকা শহরে জার্মান সমর্থকরা বিজয় মিছিল বের করে। বঙ্গবন্ধু একা ফাইনাল দেখেননি বেশ ক’জনাও ফুটবলারকে আমন্ত্রণ জানিয়ে ম্যাচ দেখেন। ফাইনালে হল্যান্ড হারলেও তাদের টোটাল ফুটবল বিশ্বাসীকে মুগ্ধ করে। ইয়োহান ক্রুইফ, ইয়োহান সিকেন্স ও পশ্চিম জার্মানির বেকেন বাওয়ার আর গার্ড মুলারদের নৈপুণ্য সরাসরি টিভিতে দেখেন বাংলার দর্শকরা। এর প্রভাব বাংলাদেশের ফুটবলেও পড়ে। ঢাকা প্রথম বিভাগ ফুটবল লিগে আবাহনীর মধ্যে সেই টোটাল ফুটবলের ছাপ খুঁজে পাওয়া যায়। বদলে যায় প্রতিটি দলের জার্সির ডিজাইন। হাফ শর্টের জার্সি ছেড়ে খেলতে নামে টি-শার্টে। ১৯৭৪ সালের পর বাংলাদেশের বিশ্বকাপের জনপ্রিয়তা আরও বেড়ে যায়। এখন তো স্যাটেলাইট যুগে সরাসরি ম্যাচ সম্প্রচার করাটা কোনো ব্যাপারই নয়।

সর্বশেষ খবর