শনিবার, ৪ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড সিরিজও বাতিল হতে পারে

ক্রীড়া প্রতিবেদক

বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড সিরিজও বাতিল হতে পারে

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দিন দিন বেড়েই চলেছে। পৃথিবীর ১৯১ দেশের প্রায় ১১ লাখ লোক মারণঘাতী কভিড-১৯ ভাইরাসে সংক্রমিত। মৃতের সংখ্যা ৫৩ হাজারের ওপর। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। বন্ধ হয়ে পড়েছে খেলাধুলা। এই মহামারী ভাইরাসের ছোবল থেকে পরিত্রাণ পায়নি নিউজিল্যান্ড। দেশটির খেলাধুলার ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। সামনেই দেশটির ক্রিকেটের ব্যস্ত সময় পার করার কথা ছিল। জুন-জুলাইয়ে স্কটল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের কথা ছিল নিউজিল্যান্ডের। এরপর আগস্টে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ খেলতে বাংলাদেশ সফরের কথা উইলিয়ামসন, রস টেলর, ট্রেন্ট বুল্ট, টিম সাউদিদের। কিন্তু মরণব্যাধি করোনাভাইরাস পরিস্থিতি পাল্টে দিয়েছে পুরোপুরি। ফলে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফর অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। দেশটির ক্রিকেট বোর্ডের সিইও ডেভিড হোয়াইট তেমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন। বিসিবি সিইও নিজামুদ্দিন চৌধূরী সুজন অবশ্যই এখনই সিরিজ নিয়ে আগাম কিছু বলতে চাইছেন না। করোনাভাইরাসের জন্য শুধু নিউজিল্যান্ড সিরিজই অনিশ্চিত হয়ে পড়েনি। জুনে বাংলাদেশ সফরে আসার কথা ছিল অস্ট্রেলিয়ার। টিম পেইন, স্টিভ স্মিথদের সফরও বাতিল হওয়ার পথে। এছাড়া এপ্রিলে পাকিস্তানের বিপক্ষে একটি টেস্ট ও একটি ওয়ানডে খেলার কথা ছিল টাইগারদের। সেটা স্থগিত হয়েছে আগেই।

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের জন্য এক বছর করে পিছিয়ে পড়েছে অলিম্পিক, কোপা আমেরিকা কাপ, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, ইউরোপা লিগ। অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে টি-২০ বিশ্বকাপ। এছাড়া বন্ধ হয়ে পড়া ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ, স্প্যানিশ লিগ, জার্মান লিগ, ফ্রেঞ্চ লিগগুলোর ভবিষ্যৎও অনিশ্চিত। শুধু কি ফুটবলেই, ক্রিকেটেও বন্ধ হয়ে পড়েছে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ, আইপিএলসহ নানা দেশের ক্রিকেট লিগগুলো। এর ধাক্কা সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে দেশগুলোকে।

‘করোনাভাইরাসের জন্য পরিস্থিতি খুবই হতাশাজনক। বিশেষ করে যারা খেলাধুলার সঙ্গে জড়িত। তবে সত্যিকারের চিত্রটা সবারই দেখতে হবে। করোনার জন্য এখন গোটা বিশ্ব বন্দী।’

চলতি মাসের শেষে নিউজিল্যান্ড মহিলা ক্রিকেট দলের শ্রীলঙ্কা সফর করার কথা। সফর স্থগিত করেছে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড। তবে দেশটির ঘরোয়া ক্রিকেট আসর শেষ হয়ে যাওয়ায় অনেকটাই হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছে দেশটি। এখন দেশটি শুধু আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছে। কিন্তু সেটাও বন্ধ হয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস সংক্রমণে। এ নিয়ে দেশটির ক্রিকেট বোর্ডের সিইও ডেভিড হোয়াইট বলেছেন, ‘করোনাভাইরাসের জন্য পরিস্থিতি খুবই হতাশাজনক। বিশেষ করে যারা খেলাধুলার সঙ্গে জড়িত। তবে সত্যিকারের চিত্রটা সবারই দেখতে হবে। করোনাভাইরাসের জন্য এখন গোটা বিশ্ব বন্দী। এখন শুধু লোকজনের ভালো থাকার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। সমাজের ভালোও দেখতে হবে।’ করোনাভাইরাস সংক্রমণের জন্য আসন্ন সিরিজগুলো বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে দেশটি। কিন্তু ঘরোয়া মৌসুমে সিরিজগুলো শেষ করেছে। এতে অনেকটাই সন্তুষ্ট দেশটির ক্রিকেট বোর্ড। সিইও তেমনই জানিয়েছেন, ‘নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের ভাগ্য ভালো। আমরা যখন গ্রীষ্মের শেষে এসে পড়েছিলাম, তখন এই সংকট দেখা দেয়। এখন বুঝতে পারছি বন্ধ হয়ে যাওয়া ক্রিকেটের সমস্যা হচ্ছে। এখন আমাদের মনোযোগ নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের টিকে থাকা নিশ্চিত করা।’ নিউজিল্যান্ড সিরিজ বাতিল হতে পারে, এমন প্রশ্নের উত্তরে বিসিবি সিইও বলেন, ‘জুনে অস্ট্রেলিয়া, জুলাইয়ে শ্রীলঙ্কা সিরিজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এখনো দুই-তিন মাস সময় আছে। তাই সিরিজ দুটি নিয়ে এখনই কিছু বলা ঠিক হবে না। একই কথা নিউজিল্যান্ড সিরিজ নিয়ে। খেলা হওয়ার কথা আগস্টে। তখন পরিস্থিতি কেমন হয়, সেটা নিয়ে এখনই কিছু বলতে পারব না।’ 

ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড ২৮ মে পর্যন্ত সব ধরনের ক্রিকেট স্থগিত করেছে। তবে জুনে মাঠে নামার একটি পরিকল্পনাও রয়েছে দেশটির। প্রয়োজনে একদিনে দুটি ম্যাচ খেলতেও প্রস্তুত ক্রিকেটাররা। তবে এমন পরিকল্পনা নেই নিউজিল্যান্ড কিংবা বাংলাদেশের। 

সর্বশেষ খবর