বৃহস্পতিবার, ৯ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা
করোনায় অনিশ্চিত পেশাদার লিগ

ফিফার প্রস্তাবে সমাধান মিলবে কি

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ফিফার প্রস্তাবে সমাধান মিলবে কি

বাংলাদেশে পেশাদার লিগ এবার শুরু থেকেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা পূর্ণ হয়ে উঠছিল। বিগ বাজেটের দলগুলো হার মানছে দুর্বলদের কাছে। অনেক দিন পর উপভোগ্য এক লিগের দেখা মিলছিল। কিন্তু শুরুতেই বন্ধ হয়ে গেল দেশের ফুটবলে সেরা এ আসর। ৫/৬টি করে ম্যাচের পর করোনা আতঙ্কে লিগ অনির্দিষ্ট কালের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। কবে হবে নিশ্চয়তা নেই। আদৌ লিগ মাঠে গড়াবে কি না তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। ক্লাবগুলো স্বাভাবিক কারণে ক্যাম্প বন্ধ করে ফুটবলারদের ছুটি দিয়েছে। বিদেশিরা যার যার দেশে চলে যেতে চাইলেও ফ্লাইট বন্ধের কারণে ঢাকায় অলস সময় কাটাচ্ছেন। এ অবস্থায় ক্লাব কর্মকর্তারা দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন।

কেননা লিগ দেরি বা না হলে তারা বড় ধরনের লোকসানের সম্মুখীন হবে। এক্ষেত্রে স্থানীয়দের নিয়ে ততটা সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কারণ তাদের সঙ্গে এমনভাবে চুক্তি করা হয় মৌসুম শেষ না হওয়া পর্যন্ত তারা দলে থাকবে। তবে বিদেশিদের বেলায় মাসে মাসে বেতন দিতে হয়। বড় ক্লাবগুলো আবার বিদেশিদের সঙ্গে বড় অঙ্কে চুক্তি করে। এমন খেলোয়াড় আছেন যার বেতন ১০ লাখেরও বেশি। আবার স্থানীয়রা পারিশ্রমিকের প্রায় ৭০ শতাংশ পেয়ে গেছেন। এ অবস্থায় চোখে সর্ষের ফুল দেখছেন কর্মকর্তারা। লিগ যেখানে অনিশ্চিত সেখানে বিদেশির সঙ্গে মে বা জুনে চুক্তি শেষ তাকে কি পুরো বেতনই দিতে হবে। আর স্থানীয়রা কি বসে বসে পুরো পারিশ্রমিক পেয়ে যাবে?

সবাই চেয়েছিল বিশ্ব ফুটবলের অভিভাবক ফিফার দিকে। তারা ভেবেছিল এই সংকটের সময় বেতন কাটা নিয়ে ফিফা কোনো গাইড লাইন দেবে। হ্যাঁ ফিফা একটা প্রস্তাব দিয়েছে। সম্ভবত তা ইউরোপিয়ান লিগের কথা চিন্তা করে। যেখানে বেতন বা পারিশ্রমিক নিয়ে কোনো প্রসঙ্গ আসেনি। ফিফা বলেছে করোনাভাইরাসে যে সংকটাময় অবস্থা তাতে নির্দিষ্ট সময়ে লিগ শেষ করা সম্ভব নয়। তাই ফুটবলারদের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। ইউরোপিয়ান লিগে না হয় প্রস্তাবটা বাস্তবসম্মত কিন্তু বাংলাদেশের বেলায় তা কি সম্ভব? চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে বলেছে। কিন্তু বাংলাদেশের পেশাদার লিগ শেষ করতে যদি সেপ্টেম্বর লেগে যায় তা হলে কি বিদেশিরা এত দিন বসে বসে বেতন পাবেন। ফিফা আশা করছে এ ক্ষেত্রে ক্লাব ও খেলোয়াড়রা আলোচনা করে একটা সমঝোতায় পৌঁছাতে পারবে। যদি সমঝোতা হয়ও তবু ক্লাবগুলোকে লোকসান গুনতে হবে। তা হলে ফিফার এ প্রস্তাবে বাংলাদেশ সমাধান পেল কি? শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান আশরাফ উদ্দীন আহমেদ চুন্নু বলেন, ‘ফিফা তার প্রস্তাব দিতেই পারে। কিন্তু তা বাস্তবায়িত করা বাংলাদেশের ক্লাবগুলোর পক্ষে  সম্ভব কি-না সেটাও ভাবতে হবে। আমরা মনে করি এক্ষেত্রে সমাধান দিতে পারে বাফুফেই। কারণ ফিফা বলেছে এটা তাদের প্রস্তাব কোনো নির্দেশনা না। ফেডারেশনের সঙ্গে বসে একটা সিদ্ধান্ত ক্লাবগুলো নিতেই পারে।’

বাফুফের সিনিয়র সহ-সভাপতি সালাম মুর্শেদী জানান, জানি না ইউরোপিয়ান লিগে কি হবে। তবে বর্তমান যে অবস্থা সামনে যদি আরও ভয়াবহ রূপ ধারণ করে তাহলে চলতি মৌসুমে আমাদের লিগ হবে কি না তা নিয়ে আমি শঙ্কিত। ফিফা প্রস্তাব দিয়েছে কিন্তু বাংলাদেশের ক্লাবগুলোর আর্থিক অবস্থা ভিন্ন। তাই যত দ্রুত সম্ভব এ নিয়ে আমরা ক্লাবগুলোর সঙ্গে বসে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে চাই।

 

সর্বশেষ খবর