শনিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

৪৫ দিনের অপেক্ষা

করোনার ধাক্কায় এলোমেলো ফুটবল

ক্রীড়া প্রতিবেদক

৪৫ দিনের অপেক্ষা

বৈঠকেই সবকিছু চূড়ান্ত হবে। ক্লাবও ফুটবলারদের স্বার্থের কথা ভেবে একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছতে চায়। তবে এ সিদ্ধান্ত লিগ কমিটি এককভাবে নেবে না। ক্লাবের সম্মতি থাকতে হবে।যদি শুরু হয়ও দ্রুত সম্ভব নয়। করোনাভাইরাসের অবস্থা এখনো ভয়াবহ। তাছাড়া দীর্ঘদিন ক্যাম্প বন্ধ -সালাম মুর্শেদী

 

মাত্র ছয় ম্যাচে পা রেখেছিল। কিন্তু করোনাভাইরাসে পেশাদার লিগ স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছে বাফুফে। যে ভয়াবহ অবস্থা তাতে লিগ আবার কবে মাঠে গড়াবে তার নিশ্চয়তা নেই। এমনকি না হওয়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। ঘরোয়া মৌসুমে অনেক সময় সেশনজটের কারণে লিগ মাঠে গড়ায়নি। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে ঢাকা প্রথম বিভাগ লিগ শুরু হলেও হট্টগোলের কারণে তা আর শেষ হতে পারেনি। তবে এবারের মতো কঠিন অবস্থা কখনো হয়নি। করোনাভাইরাসে শুধু বাংলাদেশ নয়, পৃথিবীর প্রায় সব দেশেরই ফুটবল স্থগিত। আলোচনায় বারবার ইউরোপিয়ান লিগের কথা উঠছে। তাদের সুবিধা লিগ প্রায় শেষের অবস্থায় স্থগিত হয়েছে। তাই তারা পুনরায় লিগ মাঠে নামিয়ে দ্রুত শেষ করতে চায়। হয়তো এক্ষেত্রে সফলও হতে পারে।

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ তো মাত্র শুরু হয়েছিল। ১৩ দলের মধ্যে কেউ পাঁচ বা ছয় ম্যাচ খেলেছিল। এখনো প্রথম পর্বের অনেক খেলা বাকি। তারপর আবার দ্বিতীয় পর্বের ১৩ দলের ১২টি ম্যাচ খেলতে হবে। ফিকশ্চার অনুযায়ী প্রথম পর্ব শেষ হওয়ার কথা ছিল ১১ মে।

এখন তো এপ্রিল শেষ হতে চলেছে। তা হলে প্রথম পর্ব শেষ হতে কত দিন লাগবে? এই অনিশ্চয়তায় ক্লাবগুলোর বড় লোকসান গুনতে হচ্ছে। বিদেশি ফুটবলারদের বসিয়ে বসিয়ে মোটা অঙ্কের বেতন দিতে হচ্ছে। স্থানীয়দের প্রায় পুরো পেমেন্ট দেওয়া হয়েছে। এটা ঠিক করোনাভাইরাসের ওপর কারও হাত নেই। কিন্তু দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় বাফুফে বা লিগ কমিটি থেকে সুস্পষ্ট বক্তব্য দেওয়া যেত। ক্লাবগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এমন সময় লিগ কমিটির নীরবতা কি মানায়?

এমন সংকটাপন্ন অবস্থায় স্থানীয় ফুটবলারদের দুশ্চিতার শেষ নেই। তাদের একমাত্র আয়ের উৎস তো পেশাদার লিগই। জাতীয় দলে খেলে আর কতই বা পায় তারা। এখন লিগ না হলে তাদের অর্থ ফেরত দিতে হবে। তার মানে এক মৌসুমে তাদের পুরোপুরিই লোকসান গুনতে হবে। আবার এমনো হতে পারে এক দল বদলে দুই লিগ। ক্লাব চাচ্ছে লিগ কমিটির সুস্পষ্ট বক্তব্য- লিগ হবে কি হবে না। আজই এ নিয়ে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ক্লাব প্রতিনিধিদের সঙ্গে বাফুফে সিনিয়র সহ-সভাপতি সালাম মুর্শেদীর কথা বলার কথা। অবশ্য কিছু ক্লাব জানিয়েছে, এত বড় সিদ্ধান্ত ভিডিও কনফারেন্সে হয় কীভাবে? শীর্ষস্থানীয়সহ সাত ক্লাবের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে জানা গেছে, তারা এ অনিশ্চিত অবস্থায় এবারের লিগ খেলতে চান না। এখন ১৩ দলের মধ্যে ৬ দলই যদি না চায় তা হলে লিগ হবেই বা কীভাবে? লিগ কমিটির চেয়ারম্যান সালাম জানান, খেলবে না জানিয়ে কোনো দলই তাকে চিঠি দেয়নি। বৈঠকেই সবকিছু চূড়ান্ত হবে। ক্লাবও ফুটবলারদের স্বার্থের কথা ভেবে একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছতে চায়। তবে এ সিদ্ধান্ত লিগ কমিটি এককভাবে নেবে না। ক্লাবের সম্মতি থাকতে হবে।

সালাম বলেন, যদি শুরু হয়ও দ্রুত সম্ভব নয়। করোনাভাইরাসের অবস্থা এখনো ভয়াবহ। তাছাড়া দীর্ঘদিন ক্যাম্প বন্ধ। খেলোয়াড়রা ছুটিতে আছে। কমপক্ষে ৪৫ দিন সময় দেব ক্লাবগুলোর সবকিছু গুছিয়ে নিতে। কেননা অনেকটা নতুন করে ক্যাম্প শুরু করতে হবে ক্লাবগুলোকে। প্রশ্ন ছিল- ৪৫ দিন সময় দেবেন। আপনি কি নিশ্চিত তত দিনে দেশ করোনাভাইরাসমুক্ত হবে? সালাম বলেন, অবশ্যই না। চাইলেও করোনামুক্ত করা যাবে না। এ জন্য ৪৫ দিন সবাইকে অপেক্ষা করতে হবে। তারপর আবার সরকারের অনুমতি দরকার। সালাম যা বলছেন, তাতে আজ যদি ভিডিও কনফারেন্স হয়ও সবকিছুই থেকে যাবে অনিশ্চয়তায়। সুতরাং এবারের লিগ শেষ করা যাবে কিনা সে প্রশ্নটা থেকেই যাচ্ছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর