শুক্রবার, ১ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

দুর্দিন কেটে যাওয়ার অপেক্ষায় ফুটবলাররা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

দুর্দিন কেটে যাওয়ার অপেক্ষায় ফুটবলাররা

ফুটবলাররা তো আর ক্রিকেটারদের মতো ফেডারেশন থেকে বেতন পায় না। যা আয় হয় প্রতি মৌসুমে ক্লাবে খেলে। তবে এক্ষেত্রে আমি বিশ্বাস করি এ নিয়ে নিজ নিজ ফুটবলারদের সঙ্গে ক্লাব কর্মকর্তারা বসবেন

পেশাদার ফুটবল লিগের ভাগ্য এখনো ঝুলছে। লিগ কমিটি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ১৩টি ক্লাব প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনায় বসে। সেখানে করোনাভাইরাসের ভয়াবহতার বাস্তবতা তুলে ধরে চলতি মৌসুমের লিগ বাতিল করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে ক্লাবগুলো। বাফুফে সিনিয়র সহ-সভাপতি ও লিগ কমিটির চেয়ারম্যান আবদুস সালাম মুর্শেদী তা মেনে নিতে পারেননি। তার কথা লিগ বাতিল করতে হলে ফেডারেশনের নির্বাহী কমিটির অনুমতির দরকার। এরপর আবার ফিফা ও এএফসিকে জানাতে হবে। সালামের বক্তব্য অনুযায়ী এক সিদ্ধান্ত নিতেই দীর্ঘদিন অপেক্ষায় থাকতে হবে।

ক্লাবগুলো চায় না এবারের লিগ হোক। কেউ কেউ আবার বলেছেন এক দলবদলেই সামনে নতুন লিগ আয়োজন করতে। এ ব্যাপারে ফুটবলারদের মতামত কি? এ নিয়ে কথা হয় জাতীয় দলের দুই তারকা ফুটবলারের সঙ্গে। অভিজ্ঞ তারকা মামুনুল ইসলাম বলেন, ‘দেখেন ক্লাবগুলোকে বড় ধরনের লোকসানের মাশুল গুনতে হচ্ছে। বসে থেকেও বিদেশিদের মোটা অঙ্কের পারিশ্রমিক দিচ্ছে। তা ছাড়া অনেক ক্লাবই স্থানীয়দের ৬০ থেকে ৭০ ভাগ পেমেন্ট ক্লিয়ার করছে। এমন অনিশ্চয়তায় তারা লিগ বাতিলের দাবি তুলতেই পারে। তবে আমার ব্যক্তিগত মত হচ্ছে এখনই যেন লিগ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত না নেওয়া হয়। মার্চে লিগ স্থগিত হয়েছে। এপ্রিল গেছে আরও ২/৩ মাস অপেক্ষা করা যেতে পারে। সরকার গার্মেন্টস খুলে দিচ্ছে। অফিস আদালতও চালু হওয়ার পথে। আমার বিশ্বাস ২/৩ মাস পর করোনাভাইরাসের এ ভয়াবহতা কেটে যাবে। এ দুর্দিন থাকবে না, তখন লিগ নামাতে সমস্যা হবে না।

মামুনুল বলেন, ‘লিগ বাতিল হলে খেলোয়াড়রা পারফরম্যান্স ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সামনে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচ আছে। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপও দুয়ারে। সুতরাং খেলতে না পারলে ছন্দ ধরে রাখবে কীভাবে? আর লিগ বাতিল মানে স্থানীয়রা আর্থিকভাবে বড় ধরনের ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তখন স্বাভাবিকভাবেই আমাদের অর্থ ফেরত দিতে হবে। শুনছি এক দলবদলে দুই লিগ করার। তা হলে তো আমরা মারা যাব। ফুটবলাররা তো আর ক্রিকেটারদের মতো ফেডারেশন থেকে বেতন পায় না। যা আয় হয় প্রতি মৌসুমে ক্লাবে খেলে। তবে এক্ষেত্রে আমি বিশ্বাস করি এ নিয়ে নিজ নিজ ফুটবলারদের সঙ্গে ক্লাব কর্মকর্তারা বসবেন। একটা কথা বলা ঠিক হবে না তারপরও বলছি অনেক খেলোয়াড়ই আছেন যারা চুক্তির ১০ ভাগ পারিশ্রমিক আগাম পেয়েছে কি না সন্দেহ। একবার ভেবে দেখুন তারা এখন কতটা মানসিক চাপে আছেন। শুধু খেলোয়াড় বা ক্লাবগুলোকে ভাবতে হবে কেন? এমন দুর্দিনে ফেডারেশনেরও অনেক দায়িত্ব। বর্তমানে দেশ সেরা গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানা বলেন, এক মৌসুম চালাতে ক্লাবে কী পরিমাণে ব্যয় হয় তা আমরা জানি। করোনাভাইরাসে আর্থিকভাবে তাদের বড় লোকসান গুনতে হচ্ছে। সামাল দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে তারা লিগ বাতিলের দাবি তুলেছে। তবে ক্লাবগুলোর কাছে অনুরোধ থাকবে ধৈর্য ধরতে। অন্তত জুলাই পর্যন্ত অপেক্ষা করা দরকার। আশা রাখি করোনাভাইরাসের দাপট অচিরেই শেষ হয়ে যাবে। এখনই তো গার্মেন্টস ও সচিবালয় বা বেসরকারি অফিসগুলো খুলছে। তখন আমরা নিরাপদে লিগ খেলতে পারব। এক দল বদলে দুই লিগের কথা হচ্ছে। আমার বিশ্বাস মানবিক চিন্তা করে ক্লাবগুলো তা চাইবে না। যদি হয় তাহলে তো আমরা না খেয়ে মরব। আমাদের রুটি-রুজি বলতে তো ক্লাব থেকেই আসে।

সর্বশেষ খবর