সোমবার, ৪ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

তামিম মুশফিকের ৪৩ মিনিট

তামিম মুশফিকের ৪৩ মিনিট

মাঠে ক্রিকেট নেই। খেলোয়াড়রা ঘরে বসেই যে যার মতো অনুশীলন করে যাচ্ছেন। লকডাউনের এই সময়ে দর্শকের কথা চিন্তা করে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছেন ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল। ড্রেসিং রুমের ঘটনাবলি এবং ক্রিকেটের আরও জানা-অজানা বিষয় নিয়ে সতীর্থদের সঙ্গে লাইভ আলোচনায় মেতে উঠছেন। মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে ইনস্টাগ্রামে তার ৪৩ মিনিট লাইভের বিশেষ কিছু অংশ তুলে ধরা হলো-

 

আমরা ক্রীড়াবিদ। আমরা মানুষকে আনন্দ দেই খেলা দিয়ে। এখন সব জায়গায় খারাপ নিউজটি বেশি দেখি। আমি চিন্তা করলাম দর্শকদের যদি কিছুটা আনন্দ দিতে পারি আমাদের গল্প শুনিয়ে...।

-তামিম ইকবাল

ওয়ানডে অধিনায়ক

 

লকডাউন সম্পর্কে...

তামিম : তুই কি ভাবছিলি এমন কখনো হতে পারে?

মুশফিক : আমি কখনো স্বপ্নেও ভাবিনি এমন একটা মুহূর্ত আসতে পারে। বিশ্বজুড়েই যে এমন হবে তাও ভাবিনি। প্রথমে যখন শুরু হয়েছে তখনো ভাবিনি এমন লকডাউন অবস্থায় এতদিন থাকব।

 

মুশফিককে অনুসরণ করলে আর কিছু দরকার নেই...

তামিম : আমাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিশ্রমী তুই। আমি মাঝে মাঝে অবাক হয়ে যাই যে, একজন মানুষ কেমনে এত কষ্ট করতে পারে। আমি তো এতটা পারব না। খেলার জন্য যতটুকু দরকার হয়, আমি ততটুকু করার চেষ্টা করি। আমি সবসময় একটা কথা বলি, সবাই বিরাট কোহলি বা এসব বড় বড় খেলোয়াড়দের উদাহরণ দেয়, আমাদের দেশেই যে একটা বড় উদাহরণ আছে সেটা তুই। তোরেই যদি সবাই অনুসরণ করে আর কিছু করার দরকার নেই।

 

পেসার মুশফিক এবং কিপার হওয়ার রহস্য

তামিম : অনেকে জানে যে তুই পেস বোলিং করতি। তোর বোলিং স্টাইল ছিল স্টিভেন হার্মিসনের মতো। ওর চেয়েও বড় রানআপ ছিল। আমার মনে আছে, অনূর্ধ্ব-১৫ এর একটা  ম্যাচে তুই পেস বোলিং করেছিলি। পেস বোলিং কেন?  তোর উচ্চতা ভুলে গিয়েছিলি?

মুশফিক : না, না ওই জন্য না। আমি এমনি বোলিংও পারতাম। চেষ্টা করতাম যত দিক থেকে কন্ট্রিবিউট করা যায়। তখন তো কিপিং ওভাবে করতাম না। একটা ম্যাচে আমাদের মেইন কিপার অসুস্থ হয়ে যায় তারপর কেউ কিপিং করতে চায় না, তারপর আমি কিপিং করি। ওখান থেকেই আসলে কিপিংয়ের প্রতি ভালোবাসাটা শুরু।

 

তামিমের এক হাতে ব্যাটিং...

মুশফিক : এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে জিতলাম। ম্যাচে ইনজুরি নিয়ে তুই ড্রেসিং রুমে গেলি। সেখান থেকে হাসপাতালে। হাতে চিড় ধরেছে। এরপর আবার মাঠে ফিরলি। কেন এত বড় ঝুঁকি নিয়েছিলি?

তামিম : মাশরাফি ভাই বললেন, যা ব্যাটিং কর! প্রথমে ফাইজলামি হিসেবে নিয়েছিলাম। ওদিকে তুই মারা শুরু করেছিস। একশর কাছাকাছি তোর স্কোর। তারপর দেখলাম বিষয়টা সিরিয়াস হয়ে গেল। আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম, যদি মুশফিক স্ট্রাইকিংয়ে থাকে তাহলে আমি যাব। অথচ ডাক্তার আমাকে বলেছিল একদম দৌড়ানো যাবে না। কারণ একদম নতুন ভাঙা। ডিসপ্লেস হতে পারে। তারপর দেখলাম মুস্তাফিজ আউট হয়ে গেল। সবার জীবনে কয়েক সেকেন্ডের জন্য একটা ‘ম্যাগনেট’ কাজ করে। তখন তুই নিজেও ুঝবি না হয়ে যায়। তখন আমার মধ্যেও এমন একটা বিষয় কাজ করেছে।

 

প্রসঙ্গ নিলামে মুশফিকের ব্যাট...

মুশফিক : যেহেতু একটা মহৎ কাজের জন্য ব্যাটটি নিলামে তুলব অনুরোধ করব যাতে সবচেয়ে বেশি দামে এটা কেউ কেনেন। যত বেশি দামে বিক্রি হবে ততই ভালো। এটা আমার একটা স্পেশাল ব্যাট। 

তামিম : আমারও নজর থাকে...

মুশফিক : আমি চাই ব্যাটটা তুই কিনে নে।

তামিম : আমি বলতে চাইনি। দেখব যদি আমার রেঞ্জ পর্যন্ত থাকে আমি কিনব। দেখা যাক।

 

বিপিএল নিয়ে...

তামিম : আইপিএলের দিকে তাকালে, চেন্নাই মানে ধোনি। মুম্বাই মানে রোহিত শর্মা। তোর কি মনে হয় না, তুই যদি কয়েক বছর একটা দলে খেলতে পারতি দলটা তুই নিজের ভাবতে পারতি। তা ছাড়া তোর ফ্যানগুলো নিয়ে ওই দলের একটা ফ্যানবেজ  তৈরি হতো! কিন্তু আমরা এবার এই দলে, পরেরবার আরেক দলে। আমরা যে পাঁচজন আছি, আমাদেরকে যদি ওই সুযোগটা দেওয়া হয় যে, নিজেরা টিমকে পছন্দ করে নিতে পারি এবং অন্তত ৩ বছর খেলতে হবে। তোর কী মনে হয়?

মুশফিক : ঠিকই বলেছিস। এ ব্যাপারে আমি তো সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী। আমাকে প্রতি বছর নতুন দলে খেলতে হয়। এটা অনেক বড় চ্যালেঞ্জ।

 

ড্রেসিং রুমের অজানা কাহিনি...

তামিম : ২০১৭ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ওভালের ড্রেসিং রুমে দেখি তুই ৩-৪টা সিট নিয়ে বসে আছিস। আমি বলার পর তুই রাগ করে বাথরুমে গিয়ে বসেছিলি। কিন্তু পরের ম্যাচেও কেন আবার ড্রেসিং রুমে না বসে বাথরুমে বসেছিলি? ওইখানে বসে সে ম্যাচে ভালো খেলেছিলি বলেই কি কুসংস্কার থেকে পরের ম্যাচেও বসেছিলি?

মুশফিক : ড্রেসিং রুমে যেখানে বসে ভালো খেলি মনে হয় সেই ভালো স্মৃতি আবার আসুক। আবার ওই জায়গায় বসেই ভালো খেলি। খেলায় এটা সবার ক্ষেত্রেই এমন হয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর