মঙ্গলবার, ৫ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

শ্রীলঙ্কায় গিয়ে তোমাদের হারাব

হাতুরাকে চ্যালেঞ্জ দিয়েছিলেন তামিম

শ্রীলঙ্কায় গিয়ে তোমাদের হারাব

ত্রিদেশীয় সিরিজে ২০১৮ সালে ঘরের মাঠে বাংলাদেশকে হারানোর পর শ্রীলঙ্কার কোচ চন্দিকা হাতুরাসিংহে নাকি তামিম ইকবালকে দেখে বিদ্রুপের হাসি হেসেছিলেন। তারপর তামিমও তাকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেছিলেন, ‘আমরা শ্রীলঙ্কায় গিয়ে তোমাদের হারাব।’ টি-২০ অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে ইনস্টাগ্রাম লাইভে সেই কাহিনি বললেন ওয়ানডে অধিনায়ক। দুই অধিনায়কের ৪৪ মিনিটের আলোচনায় উঠে এসেছে আরও অনেক অজানা কথা

 

তামিম : রিয়াদ ভাই, আপনার জীবনে সবচেয়ে জোরে দৌড় দিয়েছেন কখন? এমন যে ওই সময় উসাইন বোল্টকে হারিয়ে দিতেন?

মাহমুদুল্লাহ : আমার ঠিক মনে পড়ছে না।

তামিম : আমি বলি! আপনি তখন জাতীয় দলে খেলেন না। ২০০৩ সালের দিকে এক বন্ধুর সঙ্গে বাণিজ্য মেলায় গিয়ে ফুচকা অর্ডার করেছিলেন। পরে শুনেছেন ফুচকার দাম ছিল সাড়ে পাঁচ শ টাকা। দাম শুনে নাকি আপনি আর আপনার বন্ধু মিলে খুব জোরে দৌঁড় দিয়েছিলেন!

মাহমুদুল্লাহ : না, না (লাজুক হাসি)।

তামিম : আরেকবার নাকি জোরে দৌড় দিয়েছিলেন ইংল্যান্ডে, যখন একটা ছোট ছেলে আপনার ক্যাপ চুরি করে পালাচ্ছিল!

মাহমুদুল্লাহ : না, না, এমন না!

 

রোজা থেকে খেলা প্রসঙ্গে...

তামিম : আমরা জানি, আপনি অনেক

ম্যাচ রোজা থেকে খেলেছেন।

আবার আপনাকে দেখেছি, সব সময়

ভাবেন যাতে রোজা থাকলেও দলের

ওপর তার প্রভাব কোনোরকম না পড়ে। কীভাবে?

মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ : খেলাই আমার পেশা। তাই পেশার প্রতি আমার শতভাগ সৎ থাকতে হবে। যাতে রোজা রাখার কারণে কোনোক্রমেই এর ক্ষতি না হয়।

তামিম : রিয়াদ ভাই! আপনার ও মুশফিকের কারণে বাংলাদেশ দলে অনেকেই নামাজ পড়ে। আমার প্রশ্ন হচ্ছে- আপনারা তো এমন ছিলেন না। কী হয়েছিল যে কারণে এমন হয়ে গেলেন?

মাহমুদুল্লাহ : না, না, আগে থেকেই এমন ছিলাম (হাসি)।

কে কী মিস করছে...

তামিম : শুক্রবারে নামাজ পড়তে যেতে পারি না।

মাহমুদুল্লাহ : আমি সবচেয়ে বেশি মিস করি আমাদের আড্ডাটা। বিশেষ করে যখন ট্যুরে থাকি। একসঙ্গে খেতে যাওয়া। একসঙ্গে ক্রিকেট নিয়ে কথা বলা। খুবই মিস করি। বেশির ভাগ সময় দেখা যায়, মুশফিক আগেই ঘুমাতে যায়। সাকিবও বেশ নিয়মানুবর্তী। আমি, তুই আর ম্যাচ মনে হয় একটুখানি অনিয়মানুবর্তী (হাসি)। ওই আড্ডাটা খুবই মিস করছি। কোয়ারেন্টাইনে না থাকলে এখন তো আমরা আয়ারল্যান্ডে থাকতাম।

তামিম : আমাদের যত বড় বড় বিজয় আছে, অধিকাংশ ম্যাচেই আপনি ওই সময়টাতে ক্রিজে থাকেন। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে জয়। এ বিষয়টা নিয়ে কি কখনো ভাবছেন?

মাহমুদুল্লাহ : সবাই ভালো খেলে বলেই ম্যাচ জিতি। আমি মিডল অর্ডার বা লেট মিডল অর্ডারে ব্যাট করি বলে ওই সময় উইকেটে থাকি।

নিদাহাস ট্রফির কান্ড...

তামিম : নিদাহাস ট্রফিতে খেলতে যাওয়ার আগে ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে হেরেছিলাম। তখন হাতুরা সবে শ্রীলঙ্কার দায়িত্ব নিয়েছেন। একদিন সকালে নাশতা করার সময় হাতুরা আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দিচ্ছিলেন। আমি তাকে গিয়ে বলেছিলাম, আমরা তোমাদের মাটিতে গিয়ে তোমাদের হারাব। তারপর তো নিদাহাস ট্রফিতে শ্রীলঙ্কাকে হারালাম। কিন্তু আমার প্রশ্ন হচ্ছে- ওই ম্যাচে আপনার ওই ছক্কা মারার আগে আমরা তো সবাই ব্যস্ত ছিলাম ঝগড়াঝাঁটি নিয়ে। আম্পায়ার একবার নো ডাকেন, আমরা বাইরে থেকে বলি মাঠ থেকে চলে আসতে, ওই সময় আপনার মাইন্ডসেট কেমন ছিল?

মাহমুদুল্লাহ : সাকিব বলছে রিয়াদ ভাই চলে আসেন, চলে আসেন! তখন আমি বুঝছিলাম না কী করব। আমি কিন্তু গ্লাভস রেখে কিছু দূর চলেও এসেছিলাম। তার পর তো জিতেই গেলাম। সেটা ছিল একটা অন্যরকম রাত।

সেরা ইনিংস...

মাহমুদুল্লাহ : তোর জীবনের সেরা ইনিংস কোনটি?

তামিম : আমি সবচেয়ে বেশি এনজয় করেছি ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে মিরপুরে ১২৫ রান করেছিলাম সেই ম্যাচে। ওই ইনিংসটি আমার সবচেয়ে প্রিয় ইনিংস। ওই ম্যাচে আমি যা করতে চেয়েছি সবই হয়েছে।

কার্ডিফের সেই ঐতিহাসিক ম্যাচ...

তামিম : চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেই ম্যাচটির কথা বলুন। ওই সময় আমি ভাবিনি ওই অবস্থায় থেকে আমরা জিতব। আপনারা দুজনের (মাহমুদুল্লাহ ও সাকিব আল হাসান) মধ্যে কী কথোপকথন হয়েছিল?

মাহমুদুল্লাহ : আমরাও ভাবতে পারিনি জিতব! আমাদের জুটিতে ১০০ রান হওয়ার আগে আমাদের মধ্যে কোনো কথাই হয়নি। যখন ১০০ রানের জুটি হয়ে গেল তখন আমরা কথা বলা শুরু করলাম। আমাদের সামনে সুযোগ এসেছে। এটা আমরা হারতে পারি না। আসলে বেশির ভাগ সময় আমি আর সাকিব যখন ব্যাটিং করি তখন কথা বলার প্রয়োজন হয় না। আমরা বডি ল্যাঙ্গুয়েজ দেখে একে অন্যকে বুঝি।

মাহমুদুল্লাহর বলে তামিমের অস্বস্তি...

তামিম : আমি অন্য বোলারদের বিরুদ্ধে খেলার সময় বুঝতে পারি সে কোথায় বল ফেলবে। আন্দাজ করতে পারি। কিন্তু আপনার অফ-স্পিন খেলতে আমার খুব বেশি অস্বস্তি লাগে।

মাহমুদুল্লাহ : হ্যাঁ, আমি তো উইকেট পেয়েছি অনেকবার। বিপিএলে তোর উইকেট পেয়েছি, ঘরোয়া লিগে পেয়েছি। আমার তোর বিরুদ্ধে বোলিং করার সময় এক্সট্রা কিছু একটা হয়ে যায়। হয়তো একটু বেশি ঘোরে বল। এক্সট্রা বাউন্স হয়। কীভাবে যেন হয়ে যায়! আমার চিন্তা থাকে তোর কাছে ৬ খাব না।

সর্বশেষ খবর