মঙ্গলবার, ৫ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

মহাসাগরের বুকে ফুটবলের আনন্দ

রাশেদুর রহমান

মহাসাগরের বুকে ফুটবলের আনন্দ

দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের সুগভীর এলাকায় গুগল মানচিত্রে বিন্দুর মতো দেখা যায় দ্বীপটিকে। অফিশিয়াল নাম খুঁজলে পাওয়া যাবে ইস্টার আইল্যান্ড। তবে স্থানীয়দের কাছে দ্বীপটির নাম রাপা নুই। মাত্র ১৬৩.৬ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের দ্বীপটিতে সাড়ে ৭ হাজার মানুষের বাস। দ্বীপটি থেকে সবচেয়ে কাছের মহাদেশীয় সীমানার দূরত্ব সাড়ে ৩ হাজার কিলোমিটারেরও বেশি। চিলি সরকারের কাছে স্পেশাল টেরিটোরি হিসেবে স্বীকৃত এই আইল্যান্ড পর্যটকদের কাছে খুব প্রিয়। এখান থেকে দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের বুকে খুব সহজেই হারিয়ে যাওয়া যায়। নীল জলরাশিতে সামুদ্রিক মাছ শিকার করা যায়। এখানকার অধিবাসীরা রাপা নুই হিসেবেই পরিচিতি। শত শত বছর ধরে এখানে মাছ শিকার করেই দিন কাটছিল তাদের। গত শতকের শেষদিকে ফুটবল এই দ্বীপে নিয়ে আসে অন্যরকম প্রাণচাঞ্চল্য।

গত কয়েক দশকে রাপা নুইয়ের মানুষ ফুটবলের আনন্দে দারুণভাবে মেতে উঠেছে। দ্বীপটির ৪১ বছর বয়সী অধিবাসী রবার্তো পেনা আরাকি বলেন, ‘ইস্টার আইল্যান্ডে ফুটবল এখন ভালোবাসার খেলা হিসেবে পরিচিত।’ এমনকি দ্বীপটির প্রিয় মূর্তি ‘মোইয়াস’ও স্থান পেয়েছে ফুটবল স্টেডিয়ামের পাশে। যেসব মূর্তি পূর্ব পুরুষের নির্দেশক্রমে সংরক্ষণ করছে রাপা নুইয়ের মানুষ।

২০০৯ সালের ৫ আগস্ট কোপা চিলি টুর্নামেন্টে প্রথম অফিশিয়াল ম্যাচ খেলে। কোলো-কোলো টিমের কাছে হেরে যায় ৪-০ গোলে। হেরে গেলেও ম্যাচটাকে ফিফা দ্বীপটির জন্য ম্যাচ অব দ্য সেঞ্চুরি হিসেবে ঘোষণা করে

রাপা নুইয়ের ফুটবল ইতিহাস আনঅফিশিয়ালি শুরু হয় গত শতকের শেষদিকে। ১৯৯৬ সালে হুয়ান ফার্নান্দেজ আইল্যান্ডের একটি দলের সঙ্গে ফুটবল খেলে রাপা নুই। ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট কোপা চিলি টুর্নামেন্টে প্রথম অফিশিয়াল ম্যাচ খেলে। কোলো-কোলো টিমের কাছে হেরে যায় ৪-০ গোলে। হেরে গেলেও ম্যাচটাকে ফিফা দ্বীপটির জন্য ‘ম্যাচ অব দ্য সেঞ্চুরি’ হিসেবে ঘোষণা করে। রাপা নুই দলটাকে আধুনিক রূপে গড়ে তোলেন ১৯৮২ সালে চিলির জার্সিতে বিশ্বকাপ খেলা তারকা ফুটবলার মিগুয়েল অ্যাঞ্জেল গ্যামবোয়া। ২০১২ সালে চিলির ইন্ডিজেনাস পিপল’স কাপ জয় করে রাপা নুই। এরপর স্থানীয় সরকার স্টেডিয়ামের সৌন্দর্য্য বর্ধন করে নতুন রূপ দেয়। সেই স্টেডিয়ামের উদ্বোধনে ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি পেলে এবং চিলির সাবেক ফুটবলার ইলিয়াস ফিগুয়েরো এসেছিলেন। ২০১৮ সালে রাশিয়া বিশ্বকাপের বছর তাহিতিতে এক আমন্ত্রণমূলক টুর্নামেন্ট খেলতে যায় রাপা নুই জাতীয় দল। সেখানে পাঁচ দলের মধ্যে তৃতীয় হয় তারা। দুটি জয়ের পাশাপাশি একটি ম্যাচে ড্র করে। তারও আগে থেকেই ফুটবল সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা হিসেবে স্বীকৃতি পায় দ্বীপটিতে। এখন সেখানকার মানুষ ফুটবলের পিছনে প্রচুর শ্রম-অর্থ-সময় ব্যয় করছে। ফিফারও কৃপা দৃষ্টি পড়েছে ছোট্ট দ্বীপটির দিকে।

সর্বশেষ খবর