শনিবার, ৯ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

ক্রিকেটার পাঁচ সহোদর

আসিফ ইকবাল

ক্রিকেটার পাঁচ সহোদর

রাইস মোহাম্মদ, ওয়াজির মোহাম্মদ, হানিফ মোহাম্মদ, সাদিক মোহাম্মদ, মুশতাক মোহাম্মদ- পাকিস্তান ক্রিকেটের পাঁচ ভাই। ক্রিকেট বিশ্বে পাকিস্তানকে আলাদা পরিচিতি এনে দিয়েছেন এই মোহাম্মদ পরিবার। ভাইদের মধ্যে একমাত্র রাইস মোহাম্মদই জাতীয় দলে খেলেননি। বাকি চার  ভাই-ই পারফরম্যান্সের আলোয় উদ্ভাসিত ছিলেন। পাকিস্তানের পাঁচ ভাইয়ের মতো জাতীয় দলকে প্রতিনিধিত্ব করেননি, কিন্তু ঢাকার ক্রিকেটের পরিচিত মুখ ছিলেন নাজমুল আহসান, শামসুল আহসান ফারুক, ফাখরুল আহসান বাবু, মঞ্জুুর আহমেদ ও নাসির আহমেদ নাসু। এদের পরিচয় এরা সরকারি কর্মকর্তা নাজিরউল্লাহর পাঁচ পুত্র। এই ‘পাঁচ’ ভাই বাংলাদেশের ক্রিকেটের পরিচিত মুখ। পাঁচজনের বড়জন নাজমুল প্রতিনিধিত্ব করেছেন পূর্ব পাকিস্তানকে। বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন মঞ্জুর ও নাসির আহমেদ।

বাংলাদেশের ক্রিকেটে পিতা-পুত্র, ভাইদের ক্রিকেট খেলার বহু রেকর্ডস রয়েছে। কিন্তু একই পরিবারের পাঁচ ভাইয়ের ক্রিকেট খেলার রেকর্ড রয়েছে শুধু নাজিরউল্লাহর পরিবারেরই। 

রাজারবাগ পুলিশ লাইনের উল্টো পাশে মোমেনবাগ। সেখানেই বড় হয়ে ওঠা পাঁচ ভাইয়ের। বাবা সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছিলেন বলে বাসাটাও ছিল বড়। সেই বাসার উঠানে ক্রিকেট খেলতেন ভাইরা। উঠানে খেলেই নিজেদের শাণিত করে ঢাকার ক্রিকেট মাতিয়েছেন পাঁচজন। ভাইদের মধ্যে সবার বড় নাজমুল। যিনি পূর্ব পাকিস্তানের হয়ে ক্রিকেট খেলেছেন। বড় ভাইয়ের ক্রিকেট ক্যারিয়ার নিয়ে বলতে গিয়ে ফাখরুল (কালীচরণ বাবু নামে পরিচিত) বলেন, ‘নাজমুল ভাই অলরাউন্ডার ছিলেন। ঢাকার মাঠে ১৯৬৯ সালে বোল্ড করেছিলেন গ্রেট হানিফ মোহাম্মদকে। তিনি দারুণ কাট করাতেন বলকে। পাকিস্তানের দুটি নামকরা দল পিআইএ ও লাহোরের বিপক্ষে ৫ উইকেট নেওয়ার বিরল রেকর্ড রয়েছে নাজমুল ভাইয়ের।’ ঢাকার ক্রিকেটে পরিচিত মুখ হলেও একসঙ্গে খেলার সুযোগ হয়নি পাঁচ ভাইয়ের। বড় তিন ভাই নাজমুল, শামসুল ও ফাখরুল একসাথে ১৯৬৭ সালে ইগলেটসের পক্ষে ক্রিকেট খেলেছেন। কারদার সামাদ টুর্নামেন্টের প্রথম আসরে তিন ভাই একসঙ্গে ইগলেটসের হয়ে খেলেছিলেন। আউটার স্টেডিয়ামের ১ নম্বর মাঠে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বিপক্ষে ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছিলেন কালীচরণ বাবু। সেই ম্যাচের স্মৃতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘তিন ভাইয়ের একসঙ্গে খেলার খুব বেশি স্মৃতি মনে নেই। তবে আমি, নাজমুল ভাই ও শামসুল ভাই এক সঙ্গে খেলেছি ইগলেটসে। আউটার স্টেডিয়ামে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছিলাম আমি। আমার সেঞ্চুরি দারুণ আনন্দ দিয়েছিল দুই ভাইকে। এ ছাড়া আমি ও মঞ্জু ১৯৮০-৮১ মৌসুমে আবাহনীতে খেলেছি।’ পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট নাসির আহমেদ নাসু। তিনি চার ভাইয়ের খেলা দেখেছেন। কিন্তু তাদের সঙ্গে এক সঙ্গে খেলেননি।

পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে সবাই ছিলেন জেনুইন ব্যাটসম্যান। শুধু দুই ভাই নাসির আহমেদ ও মঞ্জুর আহমেদ ব্যাটসম্যানের পাশাপাশি ছিলেন উইকেটরক্ষক। দুজনেই দেশকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ‘পাঁচ’ ভাইয়ের মধ্যে মারা গেছেন মঞ্জু। তবে তাদের উত্তরসূরীরা কেউই ক্রিকেটার নন।  

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর