রবিবার, ১০ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

বিশ্ব এখন তোর দিকে তাকিয়ে... দেশের জন্য হলেও কিছু কর

সাকিবের এ কথাই বদলে দেয় রুবেলকে

বিশ্ব এখন তোর দিকে তাকিয়ে... দেশের জন্য হলেও কিছু কর

ফাইল ছবি

তামিম ইকবাল : লাইভে রুবেল ও তাসকিনকে নেওয়ার কারণ হচ্ছে, এই দুজন বাংলাদেশ দলকে বিনোদন দেয়। এদের অনেক ঘটনা আছে। আপনারা রুবেল ও তাসকিনকে যেভাবে চেনেন হয়তো ওরা তা না। ওদের অনেক ঘটনা আছে তা আপনারা জানেন না তা শেয়ার করার চেষ্টা করব।

ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল এবার লাইভে নিয়ে আসেন দুই পেসার রুবেল হোসেন ও তাসকিন আহমেদকে। আড্ডায় আর গল্পে উঠে আসে ক্রিকেটারদের অন্তরালের অনেক কথা। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে অ্যাডিলেডে শেষের দিকে যে অবিশ্বাস্য এক স্পেল বোলিং করে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে জয় ছিনিয়ে এনেছিলেন রুবেল সেই বিধ্বংসী স্পেলের পেছনের গল্পটা বললেন তিনি। তাসকিনও শোনালেন তার ক্যারিয়ারের অজানা অনেক গল্প ....

রুবেলের অবিশ্বাস্য সেই স্পেল...

তামিম : রুবেল, ২০১৫ বিশ্বকাপের আগে তোর সঙ্গে একটা ঘটনা ঘটে (জেলে যেতে হয়েছিল রুবেলকে)। আমার সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটলে খেলা সম্ভব হতো না। কিন্তু

তুই ব্যক্তিগত ঝামেলা পোহানোর পরও বিশ্বকাপে গিয়ে তোর মাইন্ডসেট কেমন ছিল?

রুবেল : ওই সময় আমি খুবই চিন্তিত ছিলাম যে স্বপ্নের বিশ্বকাপ খেলতে পারব কিনা? আমি খুব আত্মবিশ্বাসী ছিলাম খেলব। ওই বিশ্বকাপে প্রতি ম্যাচেই মাঠে নামার আগে আমি চিন্তা করতাম এমন কিছু করতে হবে যাতে চোখে লাগে। যে পারফরম্যান্স মানুষ সব সময় মনে রাখবে। তারপর সামনে আসে অ্যাডিলেড। আমার ভিতর অন্যরকম একটা জেদ কাজ করছিল, একটা শক্তি কাজ করছিল। ম্যাচের প্রথম দিকেই মনে হচ্ছিল দিনটি আমার, আমাকে কিছু একটা করতেই হবে। ওই সময় ক্যাপ্টেন যখন আমার হাতে বল তুলে দিয়েছেন তারপর সাকিব ভাইয়ের একটা কথা খুবই শক্তিদায়ক মনে হয়েছে, রুবেল এখন তোর দিকে গোটা বিশ্ব তাকিয়ে আছে, গোটা দেশের মানুষ তাকিয়ে আছে।  তুই দেশের জন্য কিছু কর, নিজের জন্য হলেও কিছু কর। তখন আমার কাছে মনে হয়েছে অন্যরকম স্পিরিট।

দাঁত হারানোর কাহিনি...

তামিম : তাসকিন, রুবেলের দাঁত হারানোর কাহিনীটি শুনতে চাই তোর কাছে!

তাসকিন : অনুশীলনের পরে সুইমিং সেশনে নাচতে নাচতে পানির মধ্যে রুবেল ভাইয়ের দাঁত খুলে পড়ে যায়। আর খুঁজে পাচ্ছে না। পরে ম্যানেজারকে বলেছে, তার দাঁত নেই তাই পরের ম্যাচ খেলবে না। কিন্তু ম্যাচে দেখা যাবে, দাঁত না থাকার কারণে উনি আর আবেদন করেননি। কারণ আবেদন করলে যে তার ফাঁকা জায়গা দেখা যাবে তাই (হাসি)।

রুবেল-কোহলির দ্বন্দ্ব...

তামিম : কোহলির সঙ্গে তোর কিসের দ্বন্দ্ব?

রুবেল : বিরাট কোহলির সঙ্গে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ খেলেছি। তখন থেকেই একটা দ্বন্দ্ব লাগে এমন। অনূর্ধ্ব-১৯ খেলার সময় ও অনেক বেশি স্লেজিং করত। এখন হয়তো একটু কমেছে। দক্ষিণ আফ্রিকায় একটা ম্যাচ ছিল। আমাদের যে ব্যাটসম্যানই নামতে ছিল ও স্লেজিং করছিল। ওই ম্যাচে আমি ওকে আউট করার পর গালি দিয়েছিলাম। ও তখন ব্যাটটা উল্টা করে ধরে আমার দিকে আসে, আমিও ওর দিকে যাই। তারপর আম্পায়াররা এসে তা মিটমাট করে। তখন থেকেই কোহলির সঙ্গে আমার দ্বন্দ্ব শুরু হয়ে যায়।

৩২ কোটি গালি...

তামিম : সবার মনে আছে হয়তো ২০১৫ বিশ্বকাপে অ্যাডিলেডের ম্যাচে আমি ওকসের ক্যাচ মিস করেছিলাম। তাসকিনের বলে। তখন খেলাটা খুবই ক্লোজ হয়ে গিয়েছিল। আমার তখন মনে হচ্ছিল, মাটি দুই পাশে ফাঁক হয়ে যাক আমি ভিতরে ঢুকে যাই। কেউ যাতে দেখতে না পারে। ওই মুহূর্তে আমি এক সঙ্গে ৩২ কোটি গালি খেয়েছি। কারণ বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষ, দুইটা করে তো গালি দিয়েছে। ওই ম্যাচে জয়ের পর সবাই আনন্দে রুবেলের পিছে দৌঁড়ায়, আমিও দৌঁড়াই। তবে আমি গিয়েছে বেঁচে যাওয়ার জন্য। কারণ ওই ম্যাচে হারলে হয়তো আর বাংলাদেশেই আসা হতো না (হাসি)।

ওভার নাইট হিরো...

তামিম : তুই প্রথম ম্যাচ থেকেই স্টার। যাকে বলে ওভার নাইট হিরো। আবার খুব দ্রুত ব্যর্থতাও দেখেছিস। এ সম্পর্কে যদি কিছু বলিস?

তাসকিন : প্রথমে খুবই ভালো লেগেছে। যেদিকে যাই সবাই ঘিরে ধরে। তারপর একের পর এক এন্ডোসমেন্ট। তখন মাথায় আসেইনি আমি কখনো খারাপ খেলতে পারি। সে কারণে নিজের প্রতি কেয়ার করা কমিয়ে দেই। কিছুটা শৃঙ্খলাহীন হয়ে যাই। তারপর আস্তে আস্তে আমার পারফরম্যান্স খারাপ হয়েছে এবং আমি দল থেকে বাদ পড়ে যাই। তাই, যারা ক্রিকেটে আসতে চান, তারা যেন আমার মতো এমন ভুল আর না করেন। যাতে প্রথম থেকেই সিরিয়াসনেসটা আরও বাড়ে।

বুকে বুকে সেলিব্রেশন সম্পর্কে...

তাসকিন : বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়ার আগে ড্রেস কালেকশন করতে মিরপুরে গিয়ে মাশরাফি ভাইকে বলেছিলাম, অন্যরকম একটা সেলিব্রেশন করব। মাশরাফি ভাই বলেছিলেন ঠিক আছে। বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ভারতের বিরুদ্ধে ম্যাচে পরিকল্পনা না থাকলেও ওটা হয়ে গিয়েছিল।

সর্বশেষ খবর