বৃহস্পতিবার, ১৪ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

ফুটবলে আইসোলেটেড ক্যাম্প

খেলোয়াড়রা ছুটিতে থাকলেও কোচ জেমি ডে লন্ডনে বসেই এখন খেলোয়াড়দের করণীয় কী তা প্রতিদিনই হোয়াটসঅ্যাপে জানিয়ে দিচ্ছেন। খেলোয়াড়রা যেন ফাঁকি না দেয় তা কোচ ভিডিওর মাধ্যমে দেখছেন

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ফুটবলে আইসোলেটেড ক্যাম্প

কাজী নাবিল আহমেদ, এমপি

মানের উন্নয়ন তেমনভাবে ঘটেনি। তবুও ফুটবল যে কালো মেঘে ঢাকা পড়েছিল তা অনেকটাই কেটে গেছে বলা যায়। এশিয়ান গেমসে কাতারের মতো শক্তিশালী দলকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো নকআউট পর্বে খেলেছে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপ ও এশিয়ান বাছাইপর্বে জাতীয় দলের নৈপুণ্য সবার চোখে পড়েছে। ঢাকায় এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন কাতারের বিপক্ষে হারলেও জামাল ভূঁইয়ারা যে পারফরম্যান্স প্রদর্শন করেন তা গত ২০ বছরেও দেখা মেলেনি। সল্টলেক স্টেডিয়ামে ভারতকেও কাঁপিয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ। দুর্ভাগ্যক্রমে এগিয়ে থেকেও শেষ মুহূর্তে জেতা ম্যাচ ড্র করে লাল-সবুজের দল।

এমন চোখ জুড়ানো পারফরম্যান্সই বলে দেয় ফুটবলে বাংলাদেশের জেগে উঠার কথা। এর পেছনে খেলোয়াড় ও কোচের অবদান স্বীকার করতেই হবে। কিন্তু এক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছেন বাফুফের সহ-সভাপতি জনপ্রিয় সংগঠক কাজী নাবিল আহমেদ এমপি। বাবা কাজী শাহেদ আহমেদের দেখানো পথ ধরেই ক্রীড়াঙ্গনে তার আগমন। ২০১২ সালে নাবিল জাতীয় ফুটবল দলের ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান। দেশের জনপ্রিয় ক্লাব ঢাকা আবাহনী পরিচালনার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। বর্তমানে তিনি এ ক্লাবেরই ভারপ্রাপ্ত ডাইরেক্টর ইনচার্জ। ফুটবলে ম্যানেজমেন্ট কমিটির নেতৃত্ব নেওয়ার পর নাবিল উপলব্ধি করেন হুট করে ফুটবলে উন্নয়ন সম্ভব নয়। এ জন্য দরকার পরিকল্পনা ও পরিশ্রম। জেমি ডে কোচের দায়িত্ব নেওয়ার পরই ফুটবলের রুগ্ন চেহারা বদলাতে থাকে। এই কোচ আনার পেছনে বড় অবদান রাখেন নাবিল। ইংল্যান্ডে অনেক পরীক্ষানিরীক্ষার পর বাফুফের কাছে তিনি জেমির ব্যাপারে প্রস্তাব রাখেন। সেই থেকে ইংলিশ কোচের অধীনেই চলছে প্রশিক্ষণ।

জাতীয় দল যখন ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছিল তখনই বাধাগ্রস্ত হন খেলোয়াড়রা। বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব এমন কি পেশাদার লিগও স্থগিত হয়ে যায়। নাবিল বলেন, ‘এ ছাড়া উপায়ও ছিল না। করোনাভাইরাসে বিশ্বজুড়েই ক্রীড়াঙ্গন অচল হয়ে গেছে। এ বছর অলিম্পিক গেমসও বাতিল হয়েছে। আমরাও তাই লিগ স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছি। প্রশ্ন হচ্ছে এ দুই মাস যে ফুটবলার মাঠের বাইরে তাতে করে কোনো প্রভাব পড়বে কি না। আমি বলব মাঠে থাকলে ভালো হতো। তবুও খুব একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে হয় না। খেলোয়াড়রা ছুটিতে থাকলেও কোচ জেমি ডে লন্ডনে বসেই এখন খেলোয়াড়দের করণীয় কি তা প্রতিদিনই হোয়াটসঅ্যাপে জানিয়ে দিচ্ছেন। খেলোয়াড়রা যেন ফাঁকি না দেয় তা কোচ ভিডিওর মাধ্যমে দেখছেন। আমিও নিয়মিত খোঁজ খবর নিচ্ছি। সুতরাং লিগ বন্ধের পরও আমি বলব খেলোয়াড়রা অনুশীলনেই আছেন।’

নাবিলের কাছে প্রশ্ন ছিল স্থগিত লিগের ভবিষ্যৎ কি? তিনি বলেন, ‘২৫ এপ্রিল ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ১৩টি ক্লাবের প্রতিনিধিরা তাদের মতামত জানিয়েছেন। এ নিয়ে ১৭ মে বাফুফের নির্বাহী কমিটির সভা ডাকা হয়েছে। আশা করি সেদিনই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে।’

আপনি ব্যক্তিগতভাবে কি চান?

‘দেখেন এখানে আমার কোনো চাওয়ার কিছু নেই। সবার সম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে আশা রাখি।’ প্রশ্ন উঠতে পারে লিগ যদি বাতিল হয়ে যায় তাহলে কি খেলোয়াড়রা বসে থাকবেন? নাবিল জানান, এ ক্ষেত্রে ম্যানেজমেন্ট কমিটি পরিকল্পনা করে রেখেছে। লিগ বাতিল হলে জাতীয় দলের আইসোলেটেড ক্যাম্প চালুর চিন্তা রয়েছে। যারা ক্যাম্পে ডাক পাবে অবশ্যই তাদের করোনাভাইরাস টেস্ট করা হবে। করোনাভাইরাসে ক্রীড়াঙ্গন স্থবির হয়ে পড়লেও আমরা বসে নেই। জাতীয় দলের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সে আশার আলো জ্বলেছে। আমরা তা ধরে রাখতে চাই। খেলোয়াড়রা নিয়মিত অনুশীলন ও মাঠে থাকলে ফুটবলে সুদিন ফিরবেই। এবারের লিগ শুরু থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়ে উঠছিল। যা আমি ফুটবলের জন্য খুবই ইতিবাচক বলব। পরিশ্রম ও পরিকল্পনা করে এগুলে ফুটবলে হতাশা কেটে যাবে। হতাশায় আমি বসে থাকব সেই মানসিকতা আমার নেই। আমার ভাবনায় শুধুই ফুটবল উন্নয়ন।

সর্বশেষ খবর