শুক্রবার, ১৫ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

সন্দেহের দোলাচলে পেশাদার লিগ

ক্রীড়া প্রতিবেদক

সন্দেহের দোলাচলে পেশাদার লিগ

পেশাদার ফুটবল লিগের ভাগ্য এখনো ঝুলে আছে। যথা সময়ে আসর মাঠে গড়ালেও করোনাভাইরাসে তা স্থগিত হয়ে যায়। মার্চ থেকেই লিগ বন্ধ। ২৫ এপ্রিল বাফুফে সিনিয়র সহ-সভাপতি ও লিগ কমিটির চেয়ারম্যান আবদুস সালাম মুর্শেদী এমপি ১৩টি ক্লাবের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ভিডিও কনফারেন্সে ক্লাবগুলো তাকে জানিয়ে দিয়েছে বর্তমান ভয়াবহ পরিস্থিতিতে তাদের পক্ষে খেলা সম্ভব নয়। অর্থাৎ চলতি মৌসুমের লিগ বাতিল করা হোক। সত্যি কথা বলতে কি বাফুফে চাচ্ছিল আরও অপেক্ষা করে দেখতে। কিন্তু অধিকাংশ ক্লাবই যেখানে না বলে দিয়েছে সেখানে তো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতেই হবে তাদের। ক্লাবগুলোর লিগ বাতিলের দাবির পেছনে যৌক্তিকতাও রয়েছে। একে তো দেশে করোনাভাইরাসে ভয়াবহ অবস্থা। মৃত্যুর সংখ্যা ও রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। তারপর আবার অর্থনৈতিক দিকটাও দেখতে হবে। অপেক্ষায় থেকে কত আর লোকসান গুনবে।

১৭ মে ডাকা হয়েছে বাফুফের নির্বাহী কমিটির সভা। সেখানে লিগের জন্য অপেক্ষা না বাতিল চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হতে পারে। তবে সালাম জানিয়েছেন যে সিদ্ধান্ত হোক না কেন এএফসির গাইড লাইন মেনেই বাস্তবায়িত করব। এএফসির গাইড লাইন খুবই জরুরি। কিন্তু এ ক্ষেত্রে কতটা গুরুত্বপূর্ণ? করোনাভাইরাসে বাংলাদেশ এখন সংকটাপন্ন। এ অবস্থায় কোনোভাবেই খেলা সম্ভব নয়। ক্লাবগুলোও চাচ্ছে না। প্রকৃত অবস্থার কথা তুলে ধরলে তো এএফসি আর না বলবে না। এখন যদি এএফসি বলে তোমাদের লিগ শেষ করতেই হবে। কিন্তু দেশের করোনাভাইরাসে তা সম্ভব নয়, তা হলে কি এএফসি নাখোশ হয়ে বাফুফেকে শাস্তি দেবে? তারা কি বাস্তবতা বুঝবে না। এখানে তো ফিফা স্পষ্ট করে বলেই দিয়েছে পরিস্থিতি ও পরিবেশ দেখে লিগের ব্যাপারে ফেডারেশনগুলো নিজস্ব সিদ্ধান্ত নিতেই পারে। এক্ষেত্রে বড় উদাহরণ হতে পারে নেদারল্যান্ডস।

এটা ঠিক ইউরোপের কিছু দেশ লিগ মাঠে নামানোর চিন্তা করছে। তাদের পক্ষে তা হয় তো সম্ভব হবে। কারণ বাকিতো আছে অল্প কটি ম্যাচ। বাফুফে বলছে এএফসির গাইড লাইন বাধ্যতামূলক। এ ব্যাপারে বাফুফের সাবেক সভাপতি বর্ষিয়ান সংগঠক এস এ সুলতান বলেন, ‘আমি ফেডারেশনের সভাপতি থাকা অবস্থায় তো পেশাদার লিগের যাত্রা। তাই কম বেশি আন্তর্জাতিক বাইলজ আমার জানা আছে। অবশ্যই এএফসি বা ফিফার শর্ত মেনেই পেশাদার লিগ হতে হবে। কিন্তু তারা এমন কঠিন নিয়ম করেনি যে যতই বিপদে পড়–ক না কেন লিগ শেষ করতেই হবে।

ফিফা ও এএফসি করোনাভাইরাসে তাদের নিয়মিত সিডিউল স্থগিত রেখেছে। বাংলাদেশের ক্লাবগুলোর অর্থনৈতিক অবস্থা তাদের জানা। সবচেয়ে বড় কথা করোনাভাইরাসে দেশে বিপর্যয় নেমে এসেছে। এ অবস্থায় বাফুফে যদি লিগ বাতিল করে তা এএফসি কি মানবে না? অযথা ভুল বুঝিয়ে লাভ নেই। ডিজিটাল যুগে নিয়ম শিখতে সংগঠক হওয়ার দরকার নেই। ইন্টারনেটে চাপ দিলে সব বের হয়ে আসবে। বাফুফের যদি অন্য উদ্দেশ্য থাকে ভিন্ন কথা। কেননা পত্রিকায় দেখছি বাতিল নয় লিগকে সমাপ্ত বলতে হবে। আর এ সমাপ্ত শব্দটি নিয়েই ফুটবলপ্রেমীদের সন্দেহ।’

সর্বশেষ খবর