বৃহস্পতিবার, ৪ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

তিন সুপার স্টারের তিন চমক

ক্রীড়া প্রতিবেদক

তিন সুপার স্টারের তিন চমক

ঘরোয়া ফুটবলে কতই না রেকর্ডের ছড়াছড়ি। কত জন রেকর্ড গড়েছেন ও ভেঙেছেন তার হিসাব মেলানো মুশকিল। দেশের তিন সুপার স্টার ফুটবলার বাদল রায়, শেখ মো. আসলাম, সালাম মুর্শেদী। এমন কীর্তি গড়েছেন যা কখনো ভোলবার নয়। বাদল রায় দিয়েই শুরু করা যাক- ১৯৭৭ সালে কুমিল্লা সূতাকলে খেলা অবস্থায় মোহামেডানের কর্মকর্তারা তাকে আগাখান গোল্ডকাপ খেলতে নিয়ে আসেন। সেই থেকে মোহামেডানের নিয়মিত ফুটবলার হয়ে যান বাদল রায়। ১৯৭৮ সালে লিগের প্রথম ম্যাচেই ভিক্টোরিয়ার বিপক্ষে দর্শনীয় জোড়া গোল করেন। ১৯৭৯ সালে লিগের প্রথম ম্যাচেই ধানমন্ডির বিপক্ষে হ্যাটট্রিকসহ ৫ গোল।

বাদল ৭ নম্বর জার্সি পরে মোহামেডানের খেলা শুরু করেন। হাফিজ উদ্দিন আহমেদ অবসরের দিনই নিজেই বাদলের গায়ে ১০ নম্বর জার্সি পরিয়ে দেন। ১৯৮১ সালে ৭ নম্বর জার্সিতেই মোহামেডানের নেতৃত্ব দেন বাদল। ১৯৮৬ সালে ১০ নম্বর জার্সি পরেই মোহামেডানকে নেতৃত্ব দেন এবং শিরোপাও জেতান। বাদল রায় মোহামেডানের ইতিহাসের এক অধ্যায়। যা বাংলাদেশে দ্বিতীয় ফুটবলারের বেলায় খুঁজে পাওয়া যাবে না। শুধু গোল আর দলকে ম্যাচ জেতায়নি বাদল রায়। এমন অকুতোভয় সৈনিক খুঁজে পাওয়া যাবে না। সেই যে ১৯৭৭ শুরু এরপর মোহামেডানের শেষ। এ রেকর্ড আরও অনেকেরই আছে। কিন্তু বাদল রায় মোহামেডানকে নিজের মতো তৈরি করে রেখেছেন। যা হয়তো কখনো দেখাও যাবে না। মোহামেডানে শুরু মোহামেডানে শেষ বাদলের।

বাংলাদেশের সুপার ডুপার স্ট্রাইকারের নাম শেখ মো. আসলাম। কত যে গোল করেছে তা হিসাব মেলানো মুশকিল। অথচ ঢাকা লিগে তার ক্যারিয়ার শুরু হয় ডিফেন্ডার হিসেবে। ভিক্টোরিয়াতে বাধ্যতামূলক তিন বছর খেলেন। এরপর যোগ দেন বিজেএমসিতে। ১৯৮৩ সালে যোগ দেন ঐতিহ্যবাহী মোহামেডানে। পরের বছরেই নাম লেখান আবাহনীতে। ব্যস এরপর আসলামকে আর পেছনে তাকাতে হয়নি। খ্যাতি যশ ও সবকিছু এসেছে আবাহনীতে খেলেই। ক্লাব ও জাতীয় পর্যায়ে মিলিয়ে ২০০ গোল হবে তার। ১৯৮৪, ১৯৮৫, ১৯৮৬, ১৯৮৭ সালে টানা চারবার সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়ে ইতিহাস গড়েন তিনি। ফিনল্যান্ড ও হাঙ্গেরির মতো দলের বিপক্ষে তার হ্যাটট্রিকের কৃতিত্ব রয়েছে। অনেকে বলেন আসলাম ৯ নম্বর জার্সি পরেই ক্যারিয়ার শেষ করলেন কেন? আসলাম বলেন, সালাউদ্দিন ভাই অবসর নেওয়ার পরই আমাকে ১০ নম্বর জার্সি দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তা আমি নেয়নি। ভক্তদের ভালোবাসা পেয়ে আমি গর্বিত।

সালাম মুর্শেদীও বাংলাদেশের ফুটবলে  সোনালি এক অধ্যায়। ১৯৭৭ সালে আজাদ স্পোর্টিং ক্লাব থেকেই তার অভিষেক। ১৯৭৯ সালে যোগ দেন বিজেএমসিতে। তার অসাধারণ নৈপুণ্য বিজেএমজি চ্যাম্পিয়ন হয়। ১৯৮০ সালে ঐতিহ্যবাহী মোহামেডানে যোগ দেন সালাম। সেই থেকেই নতুন সালামের দেখা। ১৯৮২ সালে ২৭ গোল দিয়ে লিগে সর্বোচ্চ গোলদাতার ইতিহাস গড়েন তিনি। ৩৮ বছরেও এ রেকর্ড কারও ভাঙা সম্ভব হয়নি। সালাম স্বীকারও করেন বন্ধু বাদল রায়ের সহযোগিতায় রেকর্ড গড়া সম্ভব হয়েছে। এ জন্য তার অবদান কখনো ভুলবো না। ফুটবল বিশ্লেষকদের মতে ঢাকার মাঠে অনেক জুটির দেখা মিলেছে। কিন্তু বাদল-সালাম সেখানে অতুলীয়।

সর্বশেষ খবর