শনিবার, ১৩ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

শক্তিশালী প্রার্থীর খোঁজে সালাউদ্দিন বিরোধীরা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

শক্তিশালী প্রার্থীর খোঁজে সালাউদ্দিন বিরোধীরা

কাজী সালাউদ্দিন এক প্যানেলের নেতৃত্বে। তেমনি তার বিরোধী শিবিরও কম শক্তিশালী নয়। দুই পক্ষ থেকে কাউন্সিলরশিপ নিয়ে বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বাফুফের নির্বাহী কমিটির কেউ কাউন্সিলরশিপ হতে পারবেন না। তবে যে কোনো পদে প্রার্থী হতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে সালাউদ্দিন টানা চতুর্থ বার সভাপতি প্রার্থী হচ্ছেন-এটা নিশ্চিত।

 

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের কার্যনির্বাহী কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। গেল ২০ এপ্রিল বাফুফের নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে ফিফার অনুমতি নিয়েই নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করে বাফুফে। মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি দিয়েই ফুটবল পরিচালিত হচ্ছে। এ নিয়ে কারও কোনো আক্ষেপ নেই। কেননা করোনায় ভয়াবহ পরিস্থিতিতে নির্বাচন হবে কীভাবে? তবুও নাকি নির্বাচন ঘিরে কর্মকা- থেমে নেই। ১৪১ জনের কাউন্সিলর শিপের নামও চূড়ান্ত হয়ে গেছে। কাউন্সিলরশিপ বৈধ না অবৈধ তা ফয়সালা করতে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এরা হলেন ফেডারেশনের সিনিয়র সহসভাপতি সালাম মুর্শেদী, সদস্য হারুনুর রশিদ ও আবদুর রহিম।

ফুটবলে তিনজনই অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তি। বিতর্ক উঠেছে তারা নির্বাহী কমিটিতে থেকে নির্বাচনী উপ-কমিটিতে থাকেন কীভাবে? তারপর এবারও তিনজনের প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদি নির্বাচনে নাও অংশ নেন তাদের কমিটিতে থাকতে নির্বাহী কমিটির অনুমতি নিতে হবে। বাফুফে যে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে অনুমতি তো দূরের কথা তাদের নিয়ে নির্বাহী কমিটিতে আলোচনাও নাকি হয়নি। অভিজ্ঞ সংগঠক ফজলুর রহমান বাবুল বলেন, ‘সভাপতি অবশ্যই ফেডারেশনের অভিভাবক। কিন্তু তার মানে এই নয়, তিনি তার ইচ্ছামতো কমিটি গঠন করবেন। এ নিয়ে আমরা ফিফা ও এএফসির কাছে লিখিত নালিশ করব।’ বাবুল জানান, ‘ফরটিস ও উত্তরা ফ্রেন্ডস ক্লাবের দুজনকে কাউন্সিলরশিপ দেওয়া হয়েছে। অথচ দু দল কখনো ফুটবল খেলেনি। বাবুল যেমন এ অভিযোগ তোলেন তেমনি আবার টাঙ্গাইলের কাউন্সিলরশিপ নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। যিনি কখনো এ জেলার ফুটবলের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না, তিনি কাউন্সিলর হন কীভাবে?

বাফুফের নির্বাচন কবে হবে ঠিক নেই। তবে উত্তাপ কিন্তু থেমে নেই। এটা স্পষ্ট নির্বাচন যখনই হোক দুই প্যানেলের হবে। বর্তমান সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন এক প্যানেলের নেতৃত্বে। তেমনি তার বিরোধী শিবিরও কম শক্তিশালী নয়। দুই পক্ষ থেকে কাউন্সিলরশিপ নিয়ে বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বাফুফের নির্বাহী কমিটির কেউ কাউন্সিলরশিপ হতে পারবেন না। তবে যে কোনো পদে প্রার্থী হতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে সালাউদ্দিন টানা চতুর্থ বার সভাপতি প্রার্থী হচ্ছেন-এটা নিশ্চিত। ২০০৮, ২০১২ ও ২০১৬ সালে সভাপতি পদে হ্যাটট্রিক বিজয়ী হয়ে নতুন রেকর্ড গড়েন তিনি। কিন্তু তিন মেয়াদে অনেক প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরও সালাউদ্দিন ফুটবলের কোনো উন্নয়ন ঘটাতে পারেননি-এ অভিযোগ অনেকের। এমন কী গত দুই মেয়াদে সালাউদ্দিনকে সমর্থন দেওয়া বাফুফের নির্বাহী কমিটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, উন্নয়নের বদলে সালাউদ্দিন ভাই দেশের ফুটবল ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছেন। বাদল রায় ও মহিউদ্দিন আহমেদ মহি ফ্যান্ড নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ তোলেন।

প্রশ্ন হচ্ছে বিরোধীপক্ষ সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রার্থী দাঁড় করাতে পারবেন তো? তরফদার রুহুল আমিন ঢাকঢোল পিটিয়ে সভাপতি পদে নির্বাচন করার ঘোষণা দেন। ব্যাপক প্রচারাভিযানও চালান। অথচ এই তরফদারই আচমকা ঘোষণা দেন তিনি সভাপতি পদে নির্বাচন করবেন না। শেষ পর্যন্ত বাদল রায় ঘোষণা দেন ফুটবল উন্নয়নে সালাউদ্দিন ভাই ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। তাই তার বিপক্ষে নির্বাচন করার ঘোষণা দিলাম।

এখন আবার শোনা যাচ্ছে, সালাউদ্দিনকে হারাতে শক্তিশালী প্রার্থীর সন্ধ্যানে নেমেছে বিরোধী শিবির। সালাউদ্দিন চেয়ারে থেকে ফুটবলে যে বিপর্যয় ঘটেছে তার তালিকা তুলে ধরা হবে ক্লাব ও সংস্থাগুলোর কাছে। অভিজ্ঞ সংগঠক ফজলুর রহমান বাবুল আক্ষেপ করে বলেন, ‘চোখের সামনে ফুটবল শেষ হয়ে যাচ্ছে। একে বাঁচিয়ে তুলতে দরকার যোগ্য নেতৃত্ব। আমরা এমন এক ক্রীড়াপ্রেমিক খুঁজছি-যিনি ফুটবল উন্নয়নে বড় ধরনের আর্থিক সহযোগিতা করতে পারবেন। ফুটবলে হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে পারবেন। আমরা এমন এক সংগঠকের সন্ধানও পেয়েছি যিনি প্রার্থী হলে সালাউদ্দিনের বিদায় অনিবার্য। ফুটবল উন্নয়নে তিনি ও তার পরিবার কতটা নিবেদিত সেই প্রমাণ সবাই পেয়েছে। আমার বিশ্বাস ফুটবলের বৃহত্তর স্বার্থে তিনি আমাদের অনুরোধ ফেলবেন না। কথা নয় কাজে বিশ্বাসী এমনই এক অভিভাবক জরুরি হয়ে পড়েছে ফুটবলে।’

সর্বশেষ খবর