রবিবার, ১৪ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

মাঠে ফিরুক দেশের ক্রিকেট

মেজবাহ্-উল-হক

মাঠে ফিরুক দেশের ক্রিকেট

‘মাঠে ফিরুক দেশের ক্রিকেট -এটা সবার প্রত্যাশা। ক্রিকেটাররা সবাই মাঠে ফেরার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছেন। তবে আমাদের বাস্তবতা দেখতে হবে এবং পাশাপাশি সরকারের অনুমতিও প্রয়োজন। এই বাস্তবতা মানে আমি কেবল দেশে করোনার বর্তমান পরিস্থিতিকে বোঝাইনি। এর সঙ্গে আছে অন্য দেশের ক্রিকেটে ফেরার বিষয়টিও।’

 

স্বাস্থ্যবিধি মেনেই ক্যারিবীয় ক্রিকেট দল এখন ইংল্যান্ড সফর করছে। কঠোর অনুশীলন করছেন ইংলিশ ক্রিকেটাররাও। জুনে দুই দলের টেস্ট ম্যাচ দিয়েই মাঠে ফিরতে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট।

এর বাইরে শ্রীলঙ্কা দল অনুশীলন শুরু করে দিয়েছে।  তৈরি হচ্ছে অস্ট্রেলিয়াও। আফগানিস্তানও আনুষ্ঠানিকভাবে দলীয় অনুশীলনের ফিরেছে। সেই তালিকায় আছে নেদারল্যান্ডসও। ভারত সম্প্রতি তাদের জিম্বাবুয়ে সফর বাতিল করলেও সেপ্টেম্বরে এশিয়া কাপে ফেরার চিন্তা করছে।

এশিয়ার আরেক পরাশক্তি পাকিস্তান-দেশে করোনা পরিস্থিতির অবনতির কারণে লাহোরের প্রস্তুতি ক্যাম্প বাতিল করলেও তারা এ মাসের শেষ সপ্তাহেই ইংল্যান্ড সফরে যাচ্ছে। একদিন আগে ২৯ সদস্যের দলও ঘোষণা করেছে। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তাদের প্রথম ম্যাচ আগস্টের প্রথম সপ্তাহে হলেও পর্যাপ্ত প্রস্তুতির জন্য আগেই যাচ্ছে।

কিন্তু বাংলাদেশের ক্রিকেট মাঠে ফিরছে কবে?

দেশের ক্রিকেটের অভিভাবক সংস্থা বিসিবি তাকিয়ে আছে করোনা পরিস্থিতির ওপর। যদি ভালো হয়! ‘যদি’ ঘিরেই আবর্তিত হচ্ছে বাংলাদেশের ক্রিকেটের ভাগ্য!

কিন্তু যদি দ্রুত দেশের পরিস্থিতির উন্নয়ন না হয়, তাহলে কি হবে?

আমাদের ক্রিকেটাররা কি বসেই থাকবেন?

-এমন বেশ কিছু প্রশ্ন এবং দেশের ক্রিকেট ও ক্রিকেটারদের করণীয় বিষয়গুলো এজেন্ডাতে রেখেই আজ ক্রিকেটার্স অয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (কোয়াব) সভা করতে যাচ্ছে। গতকাল সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত পাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘মাঠে ফিরুক দেশের ক্রিকেট -এটা সবার প্রত্যাশা। ক্রিকেটাররা সবাই মাঠে ফেরার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছেন। তবে আমাদের বাস্তবতা দেখতে হবে এবং পাশাপাশি সরকারের অনুমিতও প্রয়োজন।’

তবে এই বাস্তবতার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে দেবব্রত বলেন, ‘এই বাস্তবতা মানে আমি কেবল দেশে করোনার বর্তমান পরিস্থিতিকে বোঝাইনি। এর সঙ্গে আছে অন্য দেশের ক্রিকেটে ফেরার বিষয়টিও।’

বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা যখন ঘরে বসে সময় কাটাচ্ছেন তখন বিশ্বের অন্যান্য দেশের ক্রিকেটাররা মাঠে ফিরছেন। তাই বাংলাদেশ যদি কেবলমাত্র করোনার কথা চিন্তা করে আরও সময় নেন সেক্ষেত্রে দেশের ক্রিকেট যে পিছিয়ে পড়বে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ক্রিকেট সংগঠক বলেন, ‘ক্রিকেট খেলতে হলে সাহসী হতে হবে। এই করোনার জন্য খেলা বাদ দিয়ে ভয়ে ঘরে বসে থাকলে আমরা পিছিয়ে যাব। কারণ অন্যরা করোনার মধ্যেই মাঠে নামছে। আক্রান্ত অনেকভাবেই হতে পারে। শহীদ আফ্রিদি তো আর খেলতে যায়নি, তারপরও তো তিনি আক্রান্ত হয়েছেন। তাই খেলতে গেলেই যে কেউ আক্রান্ত হবে তা নয়। কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করেই ক্রিকেট ফেরানো উচিত।’

ক্রিকেটাররা তাকিয়ে আছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের দিকে। সিদ্ধান্ত হলেই তারা মাঠে নেমে পড়বেন। শাহরিয়ার নাফিস বলেন, ‘আমরা ক্রিকেটাররা কেউ কিন্তু বসে নেই। সবাই যে যার মতো করে অনুশীলন করছি। ঘরেই যতটা অনুশীলন করা সম্ভব। এই কি যে বাইরে গিয়ে অনুশীলন করতে পারছি না। তবে আমরা বিসিবির সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি।’

করোনার কারণে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ শুরু হয়েও বন্ধ হয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের আগে ঘরোয়া ক্রিকেট মাঠে ফেরানোর জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন শাহরিয়ার। তিনি বলেন, ‘আমার একটা অনুরোধ থাকবে, ক্রিকেট যখন মাঠে ফিরবে সেটা যেন ঘরোয়া ক্রিকেট দিয়েই ফেরে।’

করোনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল ইউরোপের ক্রীড়াঙ্গন ফিরছে স্বরূপে! ফুটবলের জনপ্রিয় ঘরোয়া আসর স্পেনের লা লিগা, ইতালির সিরি-এ, জার্মানির বুন্দেস লিগা চলছে। এ সপ্তাহেই মাঠে গড়াচ্ছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগও। ফুটবলের তুলনায় ক্রিকেটে বডি কন্টাকের বিষয়টা তুলনামূলক কম থাকে। তাই ক্রিকেটপ্রেমীরাও হয়তো চাচ্ছেন, তাদের প্রিয় খেলা দ্রুতই মাঠে গড়াক!

তবে এক্ষেত্রে অভিভাবক সংস্থা বিসিবিকে বর্তমান পরিস্থিতি ও ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে সিদ্ধান্ত নিতে হবে ‘অভিভাবক’ এর মতোই!

সর্বশেষ খবর