শুক্রবার, ১৯ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

জুভেন্টাসকে কাঁদিয়ে নেপোলি চ্যাম্পিয়ন

ক্রীড়া প্রতিবেদক

জুভেন্টাসকে কাঁদিয়ে নেপোলি চ্যাম্পিয়ন

বয়স ৪২। জিয়ানলুইজি বুফন এখনো খেলছেন। শুধু খেলছেন বলা ভুল, পেশাদারি পর্যায়ের সর্বোচ্চ পর্যায়ে খেলছেন দাপটের সঙ্গে। অথচ বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইতালির তার বয়সী সতীর্থদের অনেকেই এখন অবসর সময় কাটাচ্ছেন। ইতালির সর্বকালের অন্যতম সেরা গোলরক্ষক বুফন পরশু রাতে ইতালিয়া কাপে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করলেও শিরোপা উৎসব করতে পারেননি। ব্যর্থতার ষোলোকলা পূর্ণ করে তার সঙ্গী হয়েছেন ছয়বারের বিশ্বসেরা ফুটবলার ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, পাওলো দিবালারা। ইতালিয়ান কাপের ফাইনালে দুরন্ত ফুটবল খেলেও শিরোপা উৎসব করতে পারেনি জুভেন্টাস। টাইব্রেকারে ৪-২ গোলে হেরেছে নেপোলির কাছে। বিপরীতে আন্ডারডগ হয়ে খেলতে নেমেও চ্যাম্পিয়ন হয়ে করোনাকালীন সময়ে সমর্থকদের উৎসবে মাতিয়েছে নেপোলি। দলটি ২০১৩-১৪ মৌসুমের পর ফের ইতালিয়া কাপ জয় করল। অন্যদিকে চলতি মৌসুমে টানা দ্বিতীয় ফাইনালে হারল জুভেন্টাস। যা ৩৫ বছর বয়সী রোনালদোর ফুটবল ক্যারিয়ারে হয়নি। গত ডিসেম্বরে সুপার কোপার ফাইনালে ল্যাজিওর কাছে হেরেছিল জুভেন্টাস। শিরোপা জিততে না পারায় তুরিনের ‘বুড়ি’ জুভেন্টাসের কোচ মাওরোসিসিও সাররি দুষেছেন রোনালদো, পাওলো দিবালা, ডগলাস কোস্তাদের, ‘এই তিন ফুটবলারের ফিটনেস খেলার মতো ছিলনা।’

জুভেন্টাস এ নিয়ে টানা দুই ম্যাচে গোল করতে ব্যর্থ হয়েছে। কোপা ইতালিয়ান সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে গোলশূন্য ড্র করেছিল এসি মিলানের সঙ্গে। ওই ম্যাচে পেনাল্টি মিস করেছিলেন রোনালদো। ফাইনালে জায়গা নেয় জুভরা প্রথম লেগ জেতায়। পরশু রাতে তারকাসমৃদ্ধ জুভেন্টাস অলআউট ফুটবল খেলতে শুরু করে। কিন্তু নেপোলির রক্ষণভাগ ভাঙ্গার কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেননি রোনালদো, দিবালা, কস্তারা। বরং কাউন্টার অ্যাটাকনির্ভর ফুটবল খেলে বারবার সুযোগ সৃষ্টি করে। কিন্তু অভিজ্ঞ বুফনকে পরাস্ত করতে পারেনি। নির্ধারিত সময়ের সঙ্গে যোগ করা সময়ে দুটি অসাধারণ সেভ করেন অভিজ্ঞ গোলরক্ষক। ম্যাচের সেই পারফরম্যান্স অবশ্য টাইব্রেকারে ধরে রাখতে পারেনি বিশ্বচ্যাম্পিয়ন গোলরক্ষক। বুফন চেস্টা করলেও শুট আউটে দুই দুটি মিস করেন দিবালা ও দানিলো। শেষ বেলায় বাজিমাত করেন নেপোলির গোলরক্ষক মেরেতো। তিনি ঠেকিয়ে দেন দিবালার শট। দানিলো মারেন ক্রস পিঠের উপরে। নেপোলির পক্ষে টানা চার শটে গোল ইনসিনিয়ে, পলিতানো, মাকসিমোভিচ ও মিলিক। জুভদের পক্ষে গোল দুটি করেন লিওনার্দো বোনুচ্চি ও অ্যারন র‌্যামজি। শেষ বা পঞ্চম শট নেওয়ার কথা ছিল রোনালদোর। টানা চার শটে নেপোলি গোল করায় রোনালদোর শটের প্রয়োজন হয়নি।

রোমা স্টেডিয়ামে ফাইনালে প্রথমার্ধে গতিশীল ফুটবল খেলে গোলের সুযোগ তৈরি করে জুভরা। সুযোগ দুটি তৈরি করেও গোল করতে পারেননি রোনালদো। এরমধ্যে ২৬ মিনিটে ভাগ্য সহায়ক না হওয়ায় গোল পায়নি নেপোলি। তাদের লরেন্সো ইনসিনিয়ের দরুণ ফ্রি-কিক ক্রস পিঠে লেগে ফেরত আসে। দ্বিতীয়ার্ধে দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে গতিশীল ফুটবল খেলেও গোলের দেখা পায়নি নেপোলি। ৯৩ মিনিটে নিকোলা মাকসিমোভিচের হেড দুর্দান্ত  নৈপুণ্যে ঠেকিয়ে দেন বুফন। ফিরতি বলে মিডফিল্ডার এলমাস শট নেন। এবারও রক্ষা করেন বুফন। কিন্তু বল বিশ্বকাপজয়ী গোলরক্ষকের হাত ফসকালেও পোস্টের বাঁধা ডিঙাতে পারেনি। ফলে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। টাইব্রেকারে শতভাগ সাফল্য নিয়ে ছয় বছর পর শিরোপা উৎসবে মাতলো নেপোলি।

সর্বশেষ খবর