বহু দিন ধরে একজন সিমিং অলরাউন্ডারের সন্ধান করছিল বাংলাদেশের ক্রিকেট। উত্তরসূরি খুঁজছিল জাহাঙ্গীর শাহ বাদশাহ, খালেদ মাহমুদ সুজনদের। ফরহাদ রেজাদের মতো অনেকেই এসেছেন। খেলে আশাও জাগিয়েছেন। আবার হারিয়েও গেছেন। গত এক দশক ধরে একজন সলিড অলরাউন্ডারের খোঁজ করেই চলেছে দেশের ক্রিকেট। অবশেষে মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন সেই আশার পিদিমে বাতি জ্বালিয়ে হয়ে উঠছেন ভবিষ্যতের ভরসা। ক্রিকেট বিশ্লেষকদের অনেকেই এখন তার মাঝে ভবিষ্যতের ছায়া খুঁজে বেড়াচ্ছেন মাশরাফি বিন মর্তুজা ও সাকিব আল হাসানের। কিন্তু ২৩ বছর বয়স্ক সাইফুদ্দিন এই দুই অভিজ্ঞ ও ম্যাচজয়ী ক্রিকেটারের সঙ্গে নিজেকে তুলনা করতে নারাজ। ইউটিউবে জনপ্রিয় একটি অনুষ্ঠানে এমনটাই জানিয়েছেন ২২ ওয়ানডে ও ১৫টি টি-২০ ম্যাচ খেলা সাইফুদ্দিন।
মাশরাফির বয়স এখন ৩৭। টেস্ট ও টি-২০ ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছেন অনেকদিন। ওয়ানডে ক্রিকেটে নেতৃত্ব ছাড়লেও খেলা থেকে অবসর নেননি। ক্যারিয়ারের শুরুতে গতির ঝড় তুলে ছিন্নভিন্ন করেছেন প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের। শুরুতে গতির ঝড় তুললেও ব্যাটিংটাও করতেন আক্রমণাত্মক মেজাজে। অনেকেই তাকে অলরাউন্ডার ভাবতেন। সাকিবতো বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। বল হাতে প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের নাভিশ্বাস তোলার পাশাপাশি ব্যাটিংয়েও বিশ্বসেরাদের একজন। মাশরাফি ও সাকিব- দুজনেই বাংলাদেশকে বহু ম্যাচ জিতিয়েছেন। দুজনই দেশের কিংবদন্তি ক্রিকেটার। ২২ ওয়ানডেতে দুটি হাফসেঞ্চুরিতে ২৯০ রান ও ৩১ উইকেট এবং ১৫ টি-২০ ম্যাচে ১৪ উইকেট ১০৮ রান তোলা সাইফুদ্দিনকে অনেকেই ভবিষ্যতের মাশরাফি এবং সাকিব ভাবছেন। কিন্তু তরুণ টাইগার অলরাউন্ডার তেমনটি ভাবতে রাজি নন, ‘মাশরাফি ও সাকিব ভাই দুজনেই গ্রেট ক্রিকেটার। অনেক বড় পারফরমার। বাংলাদেশের জার্সিতে এক একজন দুইশর উপর ম্যাচ খেলেছেন। হাজার হাজার রান এবং শত শত উইকেট নিয়েছেন। জাতীয় দলের হয়ে দেশের জন্য তাদের অবদান বিশাল। আর আমি কোথায়? ওনাদের সঙ্গে এখনই তুলনা করা ঠিক নয়। সত্যি বলতে, আমি এখনই সেসব ভাবছি না। এতো বড় মাপের ক্রিকেটারদের সঙ্গে তুলনা করার চিন্তা আমার মাথায়ও আসে না। মাত্র ক্যারিয়ার শুরু হয়েছে আমার। অনেক দূর যেতে হবে।’ মাশরাফি ও সাকিবের সঙ্গে তুলনা করতে নারাজ সাইফুদ্দিন স্বপ্ন দেখেন নিজেকে আরও বড় করার। সেই চেষ্টায় শতভাগ উজাড় করে দিতে চেষ্টা করে যাচ্ছেন অলরাউন্ডার সাইফুদ্দিন।
ফেনীর ছেলে সাইফুদ্দিনকে ক্রিকেটার হতে অবদান রেখেছেন তার পরিবার। যদিও তার পুলিশ বাবার ইচ্ছা ছিল ছেলে যেন বড় পুলিশ অফিসার হন। কিন্তু ছেলে হয়েছেন ক্রিকেটার। দেশের হয়ে মান রাখছেন। ছেলে নামকরা ক্রিকেটার হলেও বাবা দেখে যেতে পারেননি। এই আফসোস কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে সাইফুদ্দিনকে। তিনি দেশবাসীর কাছে মৃত বাবার জন্য দোয়া চেয়েছেন।