শনিবার, ২০ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

করোনায় এলোমেলো আত্মবিশ্বাস

ক্রীড়া প্রতিবেদক

করোনায় এলোমেলো আত্মবিশ্বাস

গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানা

বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে প্রথম লেগে আমাদের পারফরম্যান্স প্রশংসিত হয়েছে। সত্যি বলতে কি, কাতার ও ভারতের বিপক্ষে আমরা দারুণ খেলেছি। অসংখ্য গোল মিস করে আফগানিস্তানের কাছে হেরেছি। ওই সময় আমাদের টিম স্পিরিট ও টেকনিক ছিল অসাধারণ। আমাদের লেভেলটা উঁচুতে উঠছিল

 

মাঠে ফিরছেন ফুটবলাররা। অক্টোবরে বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপের ফিরতি পর্বের ম্যাচ দিয়ে প্রত্যাবর্তন হবে জাতীয় দলের। করোনাভাইরাসে পেশাদার লিগ স্থগিত হওয়ায় ছুটিতেই দিন পার করছেন ফুটবলাররা। লিগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আশরাফুল-জীবনদের মাঠে নামা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। আন্তর্জাতিক ফুটবলের মাধ্যমে দীর্ঘ সময় পর মাঠে লড়াই করার সুযোগ পাচ্ছেন তারা। একই সময় এএফসি কাপ ফুটবলও রয়েছে। যেখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে পেশাদার লিগ চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস। যে ফুটবল লকডাউনে বন্দী ছিল সামনে তাদের ব্যস্ততার মধ্যে কাটাতে হবে। আগস্টেই জাতীয় দলের ক্যাম্প শুরুর ঘোষণা দিয়েছে ব্যবস্থাপনা কমিটি। ফুটবল মাঠে ফিরছে বিধায় আনন্দিত ফুটবলাররা।

বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের গন্ডি বাংলাদেশ পার হতে পারবে না, তা সবারই জানা ছিল। প্রথম লেগের পয়েন্ট তালিকা দেখে তা আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। গ্রুপ ম্যাচে জামালরা ভারতের সঙ্গে ড্র করলেও হেরেছে আফগানিস্তান, কাতার ও ওমানের কাছে। ১ পয়েন্ট পেয়ে সবার নিচে অবস্থান করছে লাল-সবুজের দল।

অবস্থান যা-ই থাকুক, টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের ফুটবলারদের পারফরম্যান্সে দেশবাসী মুগ্ধ। ঢাকায় এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন কাতারের কাছে হার আর কলকাতায় ভারতের বিপক্ষে ড্র করলেও অনেক সাবেক তারকা ফুটবলার প্রশংসা করে বলেছেন, গত ২০ বছরের মধ্যে অন্য এক বাংলাদেশের দেখা মিলেছে। ভাবাই যায় না এমন মনোমুগ্ধকর ম্যাচ। নিরপেক্ষ ভেন্যুতে আফগানিস্তানের কাছে হারলেও বাংলাদেশ অসাধারণ খেলেছে। শুধু ওমানের বিপক্ষে দাঁড়ানো সম্ভব হয়নি।

ফিরতি পর্বে চার ম্যাচের মধ্যে বাংলাদেশ তিনটি খেলবে ঘরের মাঠে। আফগানিস্তান, ভারত ও ওমানের বিপক্ষে লড়বে। কাতারের সঙ্গে ম্যাচটি হবে দোহায়। স্বাভাবিকভাবে দর্শকের প্রত্যাশা ঘরের মাঠে বাংলাদেশ স্বস্তির জয় পাবে। ওমান শক্তিশালী প্রতিপক্ষ বলেই জয়ের আশা করছে না। ভারত বা আফগানিস্তানকে হারানোর সামর্থ্য তো আছে। বিশেষ করে সল্টলেক স্টেডিয়ামে ভারতকে নাচিয়ে ছেড়েছিল। ঘরের মাঠে নিজ সমর্থকদের সামনে আরও জ্বলে উঠলে জয় পেতেই পারে। সত্যি বলতে কি, ফুটবলে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বলেই সবাই চায় ভারতের বিপক্ষে জয়।

এখন দেশের অন্যতম সেরা গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানা। জাতীয় দলে তার বিকল্প ভাবা যায় না। তার কাছেই জানতে চাওয়া হয়েছিল ঘরের মাঠে জয় সম্ভব কিনা? বললেন, ‘ঘরের মাঠ বলেই দর্শকদের প্রত্যাশাটা বেশি থাকে। এটাই স্বাভাবিক। নিজেদের মাঠ ও সমর্থকদের সামনে উজ্জীবিত থাকা যায়। তবে ঘরের মাঠ বলেই চাপও থাকে। একটা কেন, আমি বলব দুই ম্যাচও জেতা যায়। তবে এটাও দেখতে হবে, আমরা কোন অবস্থায় মাঠে নামব। বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে প্রথম লেগে আমাদের পারফরম্যান্স প্রশংসিত হয়েছে। সত্যি বলতে কি, কাতার ও ভারতের বিপক্ষে আমরা দারুণ খেলেছি। অসংখ্য গোল মিস করে আফগানিস্তানের কাছে হেরেছি। ওই সময় আমাদের টিম স্পিরিট ও টেকনিক ছিল অসাধারণ। আমাদের লেভেলটা উঁচুতে উঠছিল। এ অবস্থায় যদি আমরা ঘরের মাঠে খেলতে পারতাম। ভারত কেন, আফগানিস্তানকেও হয়তো হারাতে পারতাম। কিন্তু করোনাভাইরাসে টুর্নামেন্ট স্থগিত হওয়ায় সব এলোমেলো হয়ে গেছে আত্মবিশ্বাস। তার পরও যদি লিগটা বন্ধ না হতো পারফরম্যান্স যাচাই করা যেত।

আশরাফুল বলেন, ‘প্রায় সাড়ে তিন মাস ধরে আমরা মাঠের বাইরে। জেমিডের প্রশিক্ষণে আমাদের পারফরম্যান্সের গ্রাফটা বাড়ছিল। পেশাদার লিগ না হওয়ায় অবশ্যই প্রভাব পড়েছে। হয়তো করোনাভাইরাসে ভারত বা আফগান ফুটবলাররা সেভাবে মাঠে থাকতে পারেনি। কিন্তু আমাদের চিন্তা তো আমাদেরই করতে হবে। শেষ মুহূর্তের গোলে কলকাতায় জিততে পারিনি। তাই বলে ভারতকে দুর্বল ভাবছি না। তাই জিততে হলে প্রস্তুতিটা ভালোমতো নিতে হবে। আগস্টেই ক্যাম্প শুরুর কথা। যদি হয় আমরা সাত বা আট সপ্তাহ অনুশীলনে থাকতে পারব। এটা নিঃসন্দেহে লম্বা সময়। কোচ যেমন বুঝতে পারবেন তেমন আমরাও নিজেদের পারফরম্যান্সের ধারণা নিতে পারব। তবে ঝালাই করার জন্য প্রস্তুতি ম্যাচ খুবই জরুরি। জানি না বাফুফে কোনো বিদেশি দলের বিপক্ষে ম্যাচের আয়োজন করতে পারবে কিনা। করলে খুবই ভালো হয়।’

 

সর্বশেষ খবর