শুক্রবার, ২৬ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

টেস্ট মর্যাদার ২০ বছর

আসিফ ইকবাল

টেস্ট মর্যাদার  ২০ বছর

বাংলাদেশ টেস্ট খেলছে গত দুই দশক। শিডিউল অনুযায়ী এবারই সবচেয়ে বেশি ১০টি টেস্ট খেলার সুযোগ ছিল মুমিনুল, মুশফিক, তামিমদের। কিন্তু প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের জন্য দুুটি টেস্ট খেলেই বছর শেষ করতে হচ্ছে টাইগারদের। কভিড-১৯ ভাইরাসের জন্য স্থগিত হয়েছে বাংলাদেশের পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা সফর এবং  বাংলাদেশে আসছে না অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। সব মিলিয়ে গত ২০ বছরে এমন জটিল পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়নি এ দেশের ক্রিকেট। টেস্ট ক্রিকেটে ১০ম দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অভিষেক ২০০০ সালের ১০ নভেম্বর। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে (সে সময় ঢাকা স্টেডিয়াম) প্রতিপক্ষ ছিল প্রতিবেশী ভারত। তবে টেস্ট মর্যাদা পায় আরও আগে ২০০০ সালের ২৬ জুন। আইসিসির সে সময়কার ৯টি পূর্ণ সদস্য দেশই টেস্ট খেলার স্বীকৃতি দেয় বাংলাদেশকে। আজ সেই সুখকর দিন। টেস্ট মর্যাদার ২০ বছর। বাংলাদেশ টেস্ট মর্যাদা পায় ১০ম দেশ হিসেবে। এখন টেস্ট খেলুড়ে দেশের সংখ্যা ১২। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জিম্বাবুয়ের পাশাপাশি বাকি দুই দেশ আফগানিস্তান ও আয়ারল্যান্ড।   

২০০০ সালে টেস্ট খেলা শুরু। সময়ের পথ চলায় এখন পর্যন্ত টেস্ট খেলেছে ১১৯টি। জয় ১৪, ড্র ১৬ এবং হার ৮৯টি। গত ২০ বছরে টাইগাররা আয়ারল্যান্ড বাদে সবগুলো দেশের বিপক্ষেই টেস্ট খেলেছে। সবচেয়ে বেশী ২০ টেস্টের প্রতিপক্ষ ‘দ্বীপরাষ্ট্র’ শ্রীলঙ্কা। এরপর জিম্বাবুয়ে ১৭, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৬ এবং নিউজিল্যান্ড ১৫ টেস্টের প্রতিপক্ষ। ১২টি দক্ষিণ আফ্রিকা, ১১টি করে ভারত ও পাকিস্তান, ১০টি ইংল্যান্ড, ৬টি অস্ট্রেলিয়া ও একটি আফগানিস্তান প্রতিপক্ষ। সবচেয়ে বেশি ৭ জয় জিম্বাবুয়ে, ৪টি ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং একটি করে শ্রীলঙ্কা, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। দ্বীপরাষ্ট্র্রের বিপক্ষে জয়টি ছিল আবার নিজেদের টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসের ১০০তম টেস্টে। বাংলাদেশের প্রথম জয় ২০০৫ সালে হাবিবুল বাশারের নেতৃত্বে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চট্টগ্রামে এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২০১৭ এবং ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয় পায় ২০১৬ সালে। দেশের বাইরে বাংলাদেশের প্রথম জয় ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। ওই বছরই প্রথম টেস্ট সিরিজও জিতেছিল দেশের বাইরে।

টেস্টে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রান সাবেক অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের। ৭০ টেস্টে তার রান ৪৪১৩। সেঞ্চুরি ৭টি। যার ৩টিই ডাবল সেঞ্চুরি। দেশের পক্ষে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরিও মুশফিকের। বাকি দুটি ডাবল সেঞ্চুরির একটি সাকিব আল হাসান ও অপরটি তামিম ইকবালের। ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ২১৯ রানে অপরাজিত মুশফিকের, প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে। দেশের সেরা বোলার সাকিব। দেশের একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে বাঁ হাতি স্পিনারের ৫৬ টেস্টে উইকেট ২১০টি। ১০০’র উপর উইকেট রয়েছেন আরও দুজন, তাইজুল ইসলাম ও মোহাম্মদ রফিকের। মজার বিষয়, দুজনই সাকিবের মতো বাঁ হাতি স্পিনার। এক ইনিংসে সেরা বোলিং তাইজুলের, ৩৯ রানে ৮ উইকেট, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। ম্যাচসেরা পারফরম্যান্স ১১৭ রানে ১২ উইকেট।

বাংলাদেশ টেস্ট মর্যাদা পায় ২০০০ সালের ২৬ জুন। অথচ টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার আবেদন করে ১৯৯৬ সালে। যখন আবেদন করে, তখন স্ট্যাটাস প্রাপ্তির সম্ভাবনা ছিল শূন্যের কোটায়। ১৯৯৭ সালে আইসিসি ট্রফি চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর এগিয়ে যায় কয়েক ধাপ। আইসিসির কনফারেন্সে ৯টি পূর্ণ সদস্যের মধ্যে বাংলাদেশের আবেদনে সমর্থন দেয় ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, জিম্বাবুয়ে ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বিরোধিতা করে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকা। পরবর্তীতে অবশ্য সবগুলো দেশই পূর্ণ সমর্থন দেয়। এরপরই বাংলাদেশ টেস্ট মর্যাদা পায়।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর