রবিবার, ৫ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

সমর্থকদের প্রশংসায় ভাসালেন সাকিব

ক্রীড়া প্রতিবেদক

সমর্থকদের প্রশংসায় ভাসালেন সাকিব

‘অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে আমাদের সমর্থকরা ক্রিকেটের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তাদের মানসিকতায় ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। তারা এখন ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ হলে সব সময়ই জিততে চায়। অবশ্য শুধু ভারত নয়, অন্য দেশগুলোর বিপক্ষেও জিততে চায়।’

 

বিশ্ববিখ্যাত ইংলিশ ক্রিকেট ম্যাগাজিন উইজডেন তার জুলাই সংস্করণে শতাব্দী সেরা টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-২০ ক্রিকেটে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটারের তালিকা প্রকাশ করেছে। সেই তালিকায় টেস্ট ও ওয়ানডের সেরা দশে জায়গা করে নিয়েছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। কিন্তু সেরা বিশে জায়গা হয়নি টি-২০ ক্রিকেটেও। একজন অসাধারণ বাঁ হাতি স্পিনার, দুর্দান্ত ব্যাটসম্যান এবং ফিল্ডার হিসেবে যে কোনো পরিস্থিতিতেই ম্যাচ ঘুরিয়ে দিতে একজন দক্ষ ক্রিকেটার তিনি। ম্যাচ ঘুরিয়ে দিতে দারুণ কার্যকর এবং ম্যাচ উইনার সাকিব সেজন্যই উইজডেনের মান্থলি সংস্করণে শতাব্দীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ওয়ানডে ক্রিকেটারের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন দুইয়ে। টেস্টে তার স্থান ছয়। ম্যাচ পাতানোর প্রস্তাব পাওয়ার বিষয় লুকানোর অভিযোগে সব ধরনের ক্রিকেটে এক বছর নিষিদ্ধ সাকিব এখন অবস্থান করছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পরিবারের সঙ্গে। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ক্রিকেটে ফিরবেন অক্টোবরে। তার নিষেধাজ্ঞা খুব বেশি প্রভাব ফেলেনি বাংলাদেশের ক্রিকেটে। কারণ, করোনাভাইরাসের জন্য সাড়ে তিন মাস আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছে না বাংলাদেশ। দেশে না থাকলেও করোনাভাইরাস নিয়ে দারুণ চিন্তিত বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সম্প্রতি বিদেশি একটি ক্রিকেট পোর্টালে জানিয়েছেন, বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা এখন সব দলের বিপক্ষে জিততে মরিয়া। ক্রিকেটারদের এই জয়ের তীব্র আকাক্সক্ষার জন্ম হয়েছে দেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের ইতিবাচক মনোভাবের জন্য।

ক্রিকেট বিশ্বে সবচেয়ে পুরনো এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ক্রিকেট লড়াই অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের অ্যাসেজ। ভারত-পাকিস্তান লড়াইও কম নয়। দুই প্রতিবেশীর লড়াইয়ে উপমহাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে সৃষ্টি হয় সুক্ষœ বিভাজনের। ইদানীং পাকিস্তানকে হটিয়ে ভারতের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছেন সাকিবরা। মাঠের ভিতর ক্রিকেটারদের এবং মাঠের বাইরে ক্রিকেটপ্রেমীদের এই লড়াই অবশ্য টেস্ট কিংবা টি-২০ ক্রিকেটে নয়, ওয়ানডে ক্রিকেটেও। ওয়ানডেতে বাংলাদেশ এখন পরাক্রমশালী দল। বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল, চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনাল খেলছে টাইগাররা। প্রতিবেশী ভারতের বিপক্ষে খেলতে নামলে ক্রিকেটাররা এখন জেতার জন্য মরিয়া হয়ে পড়ে। ক্রিকেট ভক্তরাও চান ম্যাচটি জিততে। এজন্য বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব প্রশংসায় ভাসান সমর্থকদের, ‘অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে আমাদের সমর্থকরা ক্রিকেটের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তাদের মানসিকতায় ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। তারা এখন ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ হলে সব সময়ই জিততে চায়। অবশ্য শুধু ভারত নয়, অন্য দেশগুলোর বিপক্ষেও জিততে চায়। তাদের এই মানসিকতা আমাদের ক্রিকেটারদের অনেক ইতিবাচক করেছে।’

১৯৮৬ সাল থেকে নিয়মিত ওয়ানডে খেলছে বাংলাদেশ। একসময় খেলত নিশ্চিত হার জেনে। প্রথম জয় ১৯৯৭ সালে। ধারাবাহিকভাবে টাইগাররা জয় পেতে শুরু করে ২০০৭ সালের বিশ্বকাপের পর। ২০১৫ বিশ্বকাপের পর ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশ এখন পরীক্ষিত শক্তি। অস্ট্রেলিয়া, ভারত, পাকিস্তান, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ডের মতো বড় দলগুলোর বিপক্ষে জয় পাচ্ছে নিয়মিতভাবে। লড়াই করছে শেষ পর্যন্ত। চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছে প্রতিটি ম্যাচে। বড় বড় দলগুলোর বিপক্ষে এই লড়াইয়ের তীব্র মানসিকতা নিজের প্রজন্ম থেকে শুরু হয়েছে বলেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার, ‘আমরা এখন বড় দলগুলোর বিপক্ষে লড়াই করতে চাই। চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত। শুধু লড়াই কিংবা চ্যালেঞ্জই নয়, আমরা এখন প্রতিটি ম্যাচই জিততে চাই। এই জয়ের তীব্র আকাক্সক্ষা আমাদের প্রজন্ম থেকেই শুরু হয়েছে।’ বাংলাদেশের ক্রিকেটকে আমূল পাল্টে দেওয়ার নায়ক সাকিব থেকে শুরু করে মাশরাফি বিন মর্তুজা, মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবাল, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদরা।

সর্বশেষ খবর