মঙ্গলবার, ৭ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

হঠাৎ প্রিয় মাঠে মুশফিক

ক্রীড়া প্রতিবেদক

হঠাৎ প্রিয় মাঠে মুশফিক

মিরপুর বরাবরই প্রিয় মাঠ মুশফিকের। টেস্ট ক্রিকেটে তিনটি ডাবল সেঞ্চুরির ইনিংস রয়েছে তার। যার দুটির ভেন্যু মিরপুর। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলেন ২১৯ রানের হার না মানা এক ইনিংস।

 

করোনায় প্রায় চার মাস ঘরবন্দী ক্রিকেটাররা। প্রাণঘাতী কভিড-১৯ ভাইরাসে বিপর্যস্ত জনজীবন। স্বাভাবিকতা ফিরেনি এখনো। তবে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চাইছেন সবাই। ঘর থেকে বের হয়ে ক্রিকেট চাইছেন মাঠে ফিরতে। যদিও বাংলাদেশের করোনাভাইরাস পরিস্থিতি দিন দিন জটিল হচ্ছে বলে, ক্রিকেট বোর্ড অনুমতি দিতে পারছে না অনুশীলনের। তারপরও ক্রিকেটারদের অনেকেই ব্যক্তিগতভাবে অনুশীলন করছেন। তবে ব্যাটিং কিংবা বোলিং নয়, রানিং করে নিজেদের ফিটনেস ঠিক রাখছেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সব ক্রিকেটারদের মধ্যে সবচেয়ে সিরিয়াস ও পরিশ্রমী ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম। কিছুদিন আগে নিজের অফিশিয়াল ফেসবুকে একটি ভিডিও পোষ্ট করেছেন টাইগারদের সাবেক অধিনায়ক। সেখানে দেখা যাচ্ছে, তিনি বাড়ির সামনে রানিং করছেন। এক সময় অনুশীলনের অনুমতিও চেয়েছিলেন বিসিবি থেকে। কিন্তু বাস্তবতা মেনে অনুশীলনের অবস্থান থেকে সরে দাঁড়ান। সেই মুশফিক সোমবার হঠাৎ করে ব্যক্তিগত কাজে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে উপস্থিত হন। তবে খুব বেশি সময় ছিলেন না সেখানে। যতটুকু সময়ই ছিলেন, তার মধ্যে ড্রেসিং রুমে ছিলেন কিছুক্ষণ। এরপর মাঠে দাঁড়িয়ে সবুজ ঘাসের ঘ্রাণ নিয়েছেন। ছবি তুলে নিজের অফিশিয়াল ফেসবুক পেইজে আপ করে জানিয়েছেন, মিরপুর স্টেডিয়ামকে ভীষণ মিস করছেন তিনি।

১৭ মার্চ থেকে বাংলাদেশে সবধরনের ক্রিকেট বন্ধ। বন্ধ হওয়ার আগে অবশ্য ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেটের এক রাউন্ড খেলা হয়েছিল। ওই এক রাউন্ডেই খেলেছিলেন মুশফিক। আবাহনীর হয়ে খেলেছিলেন ১২৭ রানের নান্দনিক একটি ইনিংস। মিরপুর বরাবরই প্রিয় মাঠ মুশফিকের। টেস্ট ক্রিকেটে তিনটি ডাবল সেঞ্চুরির ইনিংস রয়েছে তার। যার দুটির ভেন্যু মিরপুর। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলেন ২১৯ রানের হার না মানা এক ইনিংস। ৪২১ বল স্থায়ী ইনিংটিতে ছিল ১৮টি চার ও ১ ছক্কা। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই ২০১৮ সালের নভেম্বরে খেলেছিলেন ২০৩ রানের অপরাজিত ইনিংস। শুধু টেস্ট ক্রিকেট নয়, ওয়ানডেরও প্রিয় ভেন্যু মিরপুর। ২১৮ ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৭ সেঞ্চুরির দুটি করেছেন মিরপুরে। ২০১৫ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১০৭ ও একই বছর পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলেছিলেন ১০৬ রানের আরও একটি ইনিংস। সেই মিরপুরের সঙ্গে মুশফিকের আত্মার সম্পর্ক। এই স্টেডিয়ামকে মিস করাই স্বাভাবিক। সোমবার মিরপুর স্টেডিয়ামে গিয়েছিলেন ব্যক্তিগত কাজে। সেখানে ছিলেন ঘণ্টা খানেক সময়। কাজ শেষ করার ফাঁকে মাঠে নামেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাস্ক ও গ্লাভস পরে একটি ছবি তুলে নিজের ফেসবুকে আপ করেন। এরপর ছবির নিচে ক্যাপশন হিসেবে লিখেন, ‘অসাধারণ এই ভেন্যুকে মিস করছি... কেবল সর্বশক্তিমানই জানেন, আবার কবে আমরা অনুশীলন শুরু করতে পারব।’ তার এই স্ট্যাটাসই স্পষ্ট করে দিয়েছে, ক্রিকেট খেলতে না পেরে কতটা হতাশ তিনি। মাঠের সবুজ ঘাসে হেঁটে বেড়ানোর পর তিনি টাইগারদের ড্রেসিং রুমে যান। সেখান থেকে নিজের ব্যাট ও ক্রিকেট সরঞ্জামাদি নিয়ে বের হয়ে যান।

বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে সবচেয়ে পরিশ্রমী ক্রিকেটার মুশফিক। দল কিংবা দলের বাইরে অনুশীলনে সবচেয়ে বেশি সময় ব্যয় করেন তিনি। শুধু তাই নয়, যে কোনো ক্রিকেটারের চেয়ে আধঘণ্টা, এক ঘণ্টা আগে উপস্থিত হন অনুশীলনে। এজন্য তিনি সব ক্রিকেটারদের কাছে আদর্শ। সেই মুশফিক ক্রিকেট মিস করছেন, এটাই স্বাভাবিক। মাঠে ফিরতে তার হৃদয় কাঁদছে।    

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর