বৃহস্পতিবার, ৯ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা
সাউদাম্পটন টেস্ট

১১৭ দিন পর ফিরল ক্রিকেট

ক্রীড়া প্রতিবেদক

১১৭ দিন পর ফিরল ক্রিকেট

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মাঠে ফেরার প্রথম দিনে ফিল্ডিংয়ে নেমে ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলনকে হাঁটু গেড়ে সমর্থন জানান ক্যারিবীয় ক্রিকেটাররা -এএফপি

বলে থুথু লাগাতে পারবেন না বোলার। যদি ভুলেও লাগিয়ে ফেলেন, তাহলে আম্পায়ার সঙ্গে সঙ্গে বল পরিবর্তন করে দেবেন, পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট দলের অধিনায়ককে সতর্ক করবেন। এর পরও একই কাজ পরপর তিনবার করলে নতুন আইন অনুযায়ী শাস্তি হিসেবে প্রতিপক্ষ ব্যাটিং দলকে ৫ রান বোনাস দেওয়া হবে

 

প্রকৃতিও বোধহয় চাচ্ছিল না দর্শকশূন্য মাঠে খেলা হোক! তাই বারবার বাদ সাধছিল। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের ভয় পাশ কাটিয়ে ১১৭ দিন বা প্রায় চার মাস পর মাঠে ফিরেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। সাউদাম্পটনে ক্রিকেটের প্রত্যাবর্তনের দিনে ম্যাচটি বারবার বৃষ্টির বাধার মুখে পড়েছে। এমনিতেই শুরু হয়েছে নির্ধারিত সময়ের তিন ঘণ্টা পর। এরপর যাও বা শুরু হয়েছে, বৃষ্টিতে বন্ধ হয়েছে দুবার। বৃষ্টির কারণে ম্যাচটি যখন দ্বিতীয়বার বন্ধ হয় তখন ১২ ওভারে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ ছিল ১ উইকেটে ৩০ রান। ওপেনার সিবলি শুরুতেই সাজঘরে ফিরে যান। স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বাগতিক ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটার, কর্মকর্তা, আম্পায়ার, ম্যাচ রেফারি থেকে শুরু করে ধারাভাষ্যকার, ক্যামেরাম্যান, ক্রুদের সবাইকে থাকতে হচ্ছে জৈবিক সুরক্ষিত বলয়ে। যা ১৪৩ বছরের ক্রিকেট ইতিহাসে নজিরবিহীন।

ডিসেম্বর থেকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু। মার্চ থেকে ভয়াবহ আকার ধারণ করলে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে জনজীবন। বন্ধ হয়ে পড়ে সব ধরনের খেলাধুলা। যদিও মাঠে ফিরেছে ফুটবল। গতকাল ফিরেছে ক্রিকেট। ফিরেছে নানা উৎকণ্ঠার মধ্যে দিয়ে। শুধুই ফিরেনি, ক্রিকেট ইতিহাসকে অন্যভাবে লিখেছে ইংলিশ ও ক্যারিবীয় ক্রিকেটাররা। করোনা পরবর্তী সময়ে প্রথম টেস্টে টস করে ইতিহাসের সোনালি পাতায় চিরস্থায়ী হয়েছেন বেন স্টোকস ও জেসন হোল্ডার।

টেস্ট সিরিজ খেলতে গত মাসে ইংল্যান্ডে পা রাখেন হোল্ডার বাহিনী। পা রাখার প্রথম ১৪দিন কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন ক্রিকেটাররা। এরপর অনুশীলন করে খেলতে নামেন প্রথম টেস্ট। সাউদাম্পটন টেস্ট ম্যাচটির দিকে আগ্রহ ভরে তাকিয়েছিল গোটা বিশ্বের ক্রিকেটপ্রেমীরা। গতকাল টস হওয়ার পর হাফ ছেড়ে বেঁচেছেন। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন কেমার রোচ প্রথম বলটি করার পর। গতকাল ম্যাচে ধারাভাষ্য দিয়েছেন নাসের হুসেইন, মাইকেল হোল্ডিংরা। সবাই ধারাভাষ্য দিয়েছেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে শারীরিক দূরত্ব রেখে। টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে এই দর্শকশূন্য মাঠে খেলা হল। সেটা দেখে কষ্ট পেয়েছেন ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক। কিন্তু মেনে নিয়েছেন, ‘নিশ্চয় দর্শকশূন্য মাঠে খেলা হোক কেউ চায় না। আমারও খারাপ লেখেছে। তারপরও স্বস্তি পেয়েছি এই ভেবে যে, অন্তত ক্রিকেট খেলা ফিরেছে। শুধু ক্রিকেটেই নয়, ফুটবলেও কিন্তু দর্শক থাকছে না মাঠে। তবে আমার কথা হচ্ছে ক্রিকেটপ্রেমীরা বাসায় বসে ম্যাচ দেখতে পারবেন, এটাই শান্তি।’ মাঠে ক্রিকেট ফেরায় দারুণভাবে উচ্ছ্বসিত ওয়েস্ট  ইন্ডিজ কোচ ফিল সিমন্স, ‘টেস্ট ম্যাচটি মাঠে গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গেই একটি উদাহরণ তৈরি হল। ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড অবশ্যই ধন্যবাদ পাবে। কারণ, টেস্ট আয়োজন করে তারা দেখিয়ে দিল, বিপর্যয়ের সময়েও তারা ম্যাচ আয়োজনের সামর্থ্য রাখে।’

উদ্বেগের মধ্যে টেস্ট শুরু হলেও বেশ কিছু নতুন বিষয় মাথায় রাখতে হচ্ছে ক্রিকেটারদের। বলে থুথু লাগাতে পারবেন না বোলার। যদি ভুলেও লাগিয়ে ফেলেন, তাহলে আম্পায়ার সঙ্গে সঙ্গে বল পরিবর্তন করে দেবেন, পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট দলের অধিনায়ককে সতর্ক করবেন। এর পরও একই কাজ পরপর তিনবার করলে নতুন আইন অনুযায়ী শাস্তি হিসেবে প্রতিপক্ষ ব্যাটিং দলকে ৫ রান বোনাস দেওয়া হবে। স্বাভাবিক নিয়মে দুবার ডিআরএস নেওয়া যেত। এখন সেখানে তিনবার নেওয়া যাবে। কনকাশন পদ্ধতির মতো ‘লাইক বাই লাইক’ পদ্ধতিতে ক্রিকেটার বদল করা যাবে করোনাপরবর্তী টেস্টে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর