রবিবার, ১২ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

দ্বিতীয় ইনিংসে অন্য ইংল্যান্ড

ক্রীড়া ডেস্ক

দ্বিতীয় ইনিংসে অন্য ইংল্যান্ড

দুই দলের প্রথম ইনিংস দেখে চেনাই যাচ্ছিল না স্বাগতিক ইংল্যান্ডকে। ব্যাটিংয়ে ব্যর্থ, বোলিংয়েও শুরুটা ছিল খুবই সাদামাটা। ‘পরীক্ষিত’ ব্যাটিং লাইনআপ নিয়ে ঘরের মাঠে ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা প্রথম ইনিংসে অলআউট হয়ে যায় মাত্র ২০৪ রানেই। তারপর বোলাররাও সেভাবে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারেননি ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানদের সামনে।

ইংল্যান্ড খুবই ভারসাম্যপূর্ণ দল। সব শেষ সিরিজে তারা দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়ে সিরিজ জিতেছিল ৩-১ ব্যবধানে। ইংলিশদের সামর্থ্যরে কথা চিন্তা করেই হয়তো ক্যারিবীয় কিংবদন্তি ব্রায়ান লারা মন্তব্য করেছিলেন, ইংলিশদের সামনে ৫দিন পর্যন্ত ব্যাট করার সামর্থ্য নেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটসম্যানদের। অথচ প্রথম ইনিংসে সেই ক্যারিবীয়রাই বাইশগজে দাপট দেখিয়েছেন।

ইংল্যান্ডের তারকা বোলারদের সামনে দাপট দেখিয়ে প্রথম ইনিংসে তারা করেছে ৩১৮ রান। ওপেনার ক্রেইগ ব্রাথওয়েটের পর হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন সাত নম্বরে ব্যাট করতে নামা উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান শেন ডওরিচ।

প্রথম ইনিংসে একটা সময় ক্যারিবীয়দের স্কোর ছিল ৫ উইকেটে ২৬৭। তখন মনে হচ্ছিল রানের পাহাড়ে উঠতে যাচ্ছে ক্যারিবীয়রা। কিন্তু সাউদাম্পটন টেস্টের তৃতীয় দিনের শেষ বিকালে যেন বদলে যায় ইংলিশ বোলিং লাইনআপ। টপাটপ উইকেট তুলে নিয়ে খেলার চিত্রই পাল্টে দেয়।

ইংলিশ বোলিং আক্রমণে নেতৃত্ব দেন অধিনায়ক বেন স্টোকস নিজেই। প্রথম ইনিংসে তিনি ৪৯ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট। ক্যারিবীয়দের স্কোর বোর্ডের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক দুই ব্যাটসম্যানকেই শিকার করেছেন স্টোকস। ক্যারিবীয় অধিনায়ক জেসন হোল্ডারকে তো দুই অঙ্কের কোটাতেই পৌঁছাতে দেননি।

দুর্দান্ত বোলিং করেছেন দলের সিনিয়র পেসার জেমস অ্যান্ডারসন। তিনিও নিয়েছেন ৩ উইকেট। ৬০০ উইকেটের মাইফলকের দিকে দ্রুতগতিতেই এগিয়ে যাচ্ছেন জিমি। ইংলিশ পেসারের এখন উইকেট সংখ্যা ৫৮৭। তবে গতির কথা চিন্তা করে ফর্মে থাকা স্টুয়ার্ট ব্রডকে বসিয়ে মার্ক উডকে নেওয়ার সিদ্ধান্তটা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে! প্রথম ইনিংস এই পেসার ২২ ওভার বল করে উইকেট পেয়েছেন মাত্র একটি। ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানদের ওপর খুব একটা প্রভাব বিস্তার করতেও পারেননি। গতি যে সব সময় ফলপ্রসূ হয় তা প্রমাণ করতে পারলেন না মার্ক।

ব্যাটিংয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে যেন স্বরূপে ফিরেছে ইংল্যান্ড! চিরচেনা সেই দাপট। গতকাল প্রথম সেশনে মাত্র একটি উইকেট হারায় তারা। সেটিও লাঞ্চে যাওয়ার পূর্ব মুহূর্তে।

কাউন্টি ক্লাব সারের দুই তারকা ব্যাটসম্যান ওপেনার রবি বার্নস ও ডমিনিক সিবলি গড়েন ৭২ রানের জুটি। শুরুতেই শক্ত ভীত পেয়ে যায় ইংল্যান্ড। বোলিংয়ে প্রথম ইনিংসে সফল ক্যারিবীয় পেসাররা দ্বিতীয় ইনিংসে যখন ইংলিশ ওপেনারদের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে পারছিলেন না তখন স্পিনার রোস্টন চেজ জুটি ভাঙেন। ৪২ রানে বার্নসকে ফিরিয়ে দেন। দীর্ঘ সময় ধৈর্য নিয়ে ব্যাটিং করার পর ইংলিশ ব্যাটসম্যান যেন কিছুটা মনোসংযোগ হারিয়ে ফেলেন।  স্ট্যাম্পের বাইরের বল কাট করতে গিয়ে ব্যাকওয়াড পয়েন্টে ক্যাচ উঠে যায়। ক্যারিবীয় ফিল্ডার ক্যাম্পবেলের তালুবন্দী হন। দারুণ ব্যাটিং করেও আক্ষেপ নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় বার্নসকে।

ইংল্যান্ড দ্বিতীয় ইনিংসে ক্যারিবীয়দের চেয়ে ১১৪ রানে পিছিয়ে থেকে খেলা শুরু করে। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৩ উইকেট হারিয়ে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ ছিল ১৬৮ রান।

সর্বশেষ খবর