শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ২৩ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা
জোফরা আর্চারের কলাম

অপরাধ করিনি, ভুল করেছি

অপরাধ করিনি, ভুল করেছি

এই সপ্তাহটা ছিল আমার জন্য খুবই কঠিন। আইসোলেশনে পাঁচ দিন হোটেলে রুমবন্দী থাকার সময় ভেবেছি, এখন আমার অবস্থান কোথায়?

মাঠে যেতে না পারাটা আমার জন্য খুবই হতাশার। নেটে বোলিং করতে গিয়ে বুঝলাম ভিতর থেকে কোনো তাড়া অনুভব করছি না।

আইসোলেশন শেষে আমি যখন প্রথম রুমের বাইরে যাই, দেখলাম কিছু ক্যামেরায় শুধু আমার একার ছবি আলাদা করে তোলা হচ্ছে। সবাই আমার দিকে অন্যভাবে তাকাচ্ছে, যা আমাকে অস্বস্তিতে ফেলেছে। আমি খুব ভালো করে জানি, ভুলটা কোথায়, কেন আমার ভোগান্তি হচ্ছে। আচ্ছা, আমি তো কোনো অপরাধ করিনি, আমি খুব ভালো অনুভূতি নিয়েই ফিরতে চেয়েছিলাম।

বিষয়টি নিয়ে ডাক্তারের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আমার ভিতরের অনুভূতি নিয়ে সোমবার রাতে বেন স্টোকসের সঙ্গেও কথা বলেছি। স্টোকস আমাকে বেশ কিছু উপদেশ দিয়েছে, এমন পরিস্থিতিতে কীভাবে আমি শুধু ক্রিকেটে ফোকাস রাখব! সে প্রতিজ্ঞা করেছে, যেভাবেই হোক আমাকে ফেরাবে এবং সমর্থনও দেবে। কিন্তু এ মুহূর্তে আমাকে ফিরতে হলে তো মানসিকভাবে শতভাগ সুস্থ থাকতে হবে!

সত্যি কথা বলতে কি, যদি আমি খেলি এবং ঘণ্টায় ৯০ মাইল গতিতে বল করতে না পারি তাহলে নিউজ হয়ে যাবে। আবার যদি টানা ৯০ মাইল গতিতে বল করতে না পারি তা হলেও নিউজ হবে। যদি আমি প্রথমে বাঁ পায়ের মোজা না খুলি তবু নিউজ হবে।

আমি তো খুব ভালো করেই বুঝি, এ পর্যায়ে খেলতে হলে কীভাবে চলতে হবে! যখন মাঠে থাকি শতভাগ উজাড় করেই দিই। শতভাগ উজাড় করে দেওয়ার নিশ্চয়তা দিতে না পারলে আমি মাঠে নামতে চাই না।

ক্রিকেট যে কতটা অস্থির, তা সাউদাম্পটন টেস্টেই দেখেছি। প্রথম ইনিংসে শুনতে হলো আমি নাকি দলের জন্য বোঝা! কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে ভালো করায় শুনতে পেলাম, ‘সে তো গ্রেট ক্রিকেটার’। ক্রিকেট এমনই- কখনো ভালো সময় আসবে, আবার খারাপ সময় আসবে। কেউই বলতে পারে না সে সব সময় অসাধারণ খেলবে। মাঝেমধ্যে মনে হয়, এ দুনিয়া আমার সঙ্গে সদাচার করছে না, সতিই তো!

বেন স্টোকসও এমন সমস্যার মধ্য দিয়ে গেছে, তারপর সে অভ্যস্ত হয়েছে। স্টোকসের খারাপ সময়টা পার হয়ে গেছে, সে কারণেই গত দেড় বছরে সে অসাধারণ পারফর্ম করেছে। আমি জানি না সে কীভাবে কারও সঙ্গে কথা না বলে দীর্ঘ সময় থেকেছে। সে খুবই শক্ত মানসিকতার মানুষ।

এ সপ্তাহ আমাকে অনেক কিছু শেখাল। যা-ই হোক না কেন নিজের কাজের প্রতি আমার মনোযোগ ঠিক রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে, একটা হাঁচি দিলেও তা শিরোনাম হয়ে যেতে পারে!

হ্যাঁ, আমি ভুল করেছি দলের সঙ্গে সাউদাম্পন থেকে সরাসরি ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে না গিয়ে। ভুল তো মানুষই করে। সাউদাম্পটন টেস্ট শেষে বাড়ি যাওয়ার ব্যাপারে একজন কোচিং স্টাফকে জানিয়েছিলাম। এখন বুঝতে পারছি তখন ম্যানেজমেন্টের উঁচু পর্যায়ের কারও সঙ্গে আলোচনা করা দরকার ছিল।

গত কয়েক দিনে বেশ কয়েকটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আমার প্রোফাইল বন্ধ করে দিয়েছি। তার মানে এই নয় যে, আমি পেছনে ফিরে গেছি। আমার মনে হয়েছে, এসব অপ্রয়োজনীয়। দুটি উইকেট নিলেই আবার পুরনো সুর বাজতে থাকবে। এসবই অস্থিরতা। আমরা অস্থির এক বিশ্বে বাস করছি।

গত কয়েক দিনে ইনস্টাগ্রামে আমি বর্ণবৈষম্যের শিকার হয়েছি। সিদ্ধান্ত নিয়েছি, অনেক হয়েছে অনেক, এসব সহ্য করব না আর। আমি আমার অভিযোগ ইসিবিকে (ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড) দিয়েছি, তারাই সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর