বুধবার, ৫ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা
ইংল্যান্ড পাকিস্তান টেস্ট শুরু আজ

সাদা পোশাকে পাঁচ ঘটনা

ইংল্যান্ড-পাকিস্তান দ্বৈরথ

ক্রীড়া ডেস্ক

ইংল্যান্ড-পাকিস্তান টেস্ট ম্যাচ মানেই ঘটনার ঘনঘটা। স্পট ফিক্সিং, বল টেম্পারিং, ম্যাচ বাজেয়াপ্ত, আম্পায়ারের পক্ষপাতিত্ব- আরও অনেক ঘটনাই ঘটেছে দুই দলের টেস্টে। আজ আবারও শুরু হচ্ছে ইংল্যান্ড-পাকিস্তান সিরিজ। তিন ম্যাচের প্রথমটি আজ শুরু হচ্ছে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে।

ইংল্যান্ড-পাকিস্তান টেস্ট ম্যাচের উত্তেজনাকর পাঁচটি ঘটনা নিয়েই এই আলোচনা-

১৯৫৬ : আম্পায়ার ও দুই বালতি পানি

ইংল্যান্ডের পাকিস্তান সফরে ১৯৫৬ সালে ঘটেছিল অদ্ভুত এক ঘটনা। মাঠে আম্পায়ারের দায়িত্ব পালন করা পাকিস্তানি আম্পায়ার ইদ্রিস বেগকে অপহরণ করে পেশোয়ারের টিম হোটেলে নিয়ে যান ইংলিশ ক্রিকেটাররা। তবে আম্পায়ারের কোনো ক্ষতি করেননি ইংলিশরা। কিন্তু ইদ্রিস বেগের শরীরে দুই বালতি পানি ঢেলে দেন। এই ঘটনার পর ইংল্যান্ডের অধিনায়ক ডোনাল্ড কার জানান, আম্পায়ার মাঠে বেশ কয়েকটি ভুল সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন তাদের বিরুদ্ধে, তাই মজা করতেই এমন কা- ঘটিয়েছিলেন তারা। এ ঘটনা দুই দলের ক্রিকেটারদের মধ্যে উত্তেজনা বাড়িয়ে দিয়েছিল।

১৯৮৭ : মাইক গেটিং ও শাকুর রানা

ফয়সালাবাদ টেস্টে ১৯৮৭ সালে ঘটেছিল অন্যরকম এক ঘটনা। হঠাৎ পাকিস্তানি আম্পায়ার শাকুর রানা ও সফরকারী দল ইংল্যান্ডের অধিনায়ক মাইক গেটিংয়ের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়ে যায়। আম্পায়ারের অভিযোগ, মাইক অন্য এক ফিল্ডারের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে ছিলেন, যা খেলার মাঠের শিষ্টাচারবহির্ভূত কা-। কিন্তু এমন অভিযোগ মানতে পারেননি ইংলিশ অধিনায়ক। তার দাবি, তিনি এমন কোনো আচরণ করেননি যে কারণে আম্পায়ার তাকে ডেকে নিয়ে বকাঝকা করবেন।

ঘটনাটি ঘটেছিল ফয়সালাবাদ টেস্টের দ্বিতীয়। তৃতীয় দিন ম্যাচে দায়িত্ব পালন করতে অস্বীকৃতি জানান আম্পায়ার শাকুর। সে কারণে টেস্টের তৃতীয় দিন ‘রেস্ট ডে’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। চতুর্থ দিনে শাকুরই দায়িত্ব পালন করেন। ইংলিশ অধিনায়ক আম্পায়ারের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।

১৯৯২ : সুইং নিয়ে সন্দেহ

তখনো রিভার্স সুইংয়ের সঙ্গে পরিচিত নয় ইংল্যান্ড। কিন্তু পাকিস্তানের দুই পেসার ওয়াসিম আকরাম ও ওয়াকার ইউনুসের প্রধান অস্ত্রই রিভার্স সুইং। লর্ডসের ম্যাচে ইংলিশরা বুঝতে পারছিলেন না বলের এমন সুইং। তাদের সন্দেহ হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে আম্পায়ারের সঙ্গে কথা বলেন তারা। মাঠের দুই আম্পায়ার কে পালমার ও জন হ্যাম্পশায়ারেরও সন্দেহ হয়। তাদের ধারণা কৌশলে বল পবির্তন করা হয়েছে। তাই তৃতীয় আম্পায়ার ডন ওসলিয়ারের সঙ্গেও আলোচনা করেন তারা। ইংলিশদের ধারণা, পাকিস্তান বল টেম্পারিং করেছে। এ নিয়ে দুই দলের ক্রিকেটারদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ও হয়।

২০০৬ : বাজেয়াপ্ত দ্য ওভাল

টেস্টের ইতিহাসে পাকিস্তানই প্রথম দল যারা একটি ম্যাচকে বাজেয়াপ্ত করেছিল। ২০০৬ সালে দ্য ওভালের চার ম্যাচের সিরিজের শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল দুই দল। এই ম্যাচের আগেই ২-০ ব্যবধানে সিরিজ নিশ্চিত করে ইংল্যান্ড। ওভাল টেস্টের চতুর্থ দিন বল টেম্পারিংয়ের দায়ে পাকিস্তানের ৫ রান ফাইন করেন অস্ট্রেলিয়ার অভিজ্ঞ আম্পায়ার ড্যারেল হেয়ার। প্রতিবাদে ম্যাচে আর খেলেনি পাকিস্তান। শেষ পর্যন্ত ইংল্যান্ডকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। আইসিসির এলিট প্যানেলের আম্পায়ার হেয়ারের সিদ্ধান্ত নিয়ে সমালোচনা হতে থাকে। আইসিসির সভায় আলোচনা হয় হেয়ার টেস্ট ম্যাচে আম্পায়ারিং করার যোগ্য নন! তাকে জানানোও হয়।

কিন্তু হেয়ার সোজা বলে দেন, তাকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৫ লাখ মার্কিন ডলার দিলে তবেই তিনি এলিট প্যানেল থেকে পদত্যাগ করবেন।

২০১০ : ট্রট ও ওয়াহাব রিয়াজের সংঘর্ষ

পাকিস্তানের অধিনায়ক সালমান বাট, পেসার মোহাম্মদ আসিফ ও মোহাম্মদ আমিরের স্পট ফিক্সিং কেলেঙ্কারির ঘটনায় তখন ক্রিকেট বিশ্ব তোলপাড়। এমন ঘটনার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ওয়ানডে সিরিজটি খেলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু শিডিউলে থাকায় তারা বাধ্য হয়েই খেলে। ওই সিরিজের ৪র্থ ম্যাচের আগে অনুশীলনের সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে ইংলিশ ব্যাটসম্যান জোনাথন ট্রট ও পাকিস্তানের বোলার ওয়াহাব রিয়াজের মধ্যে। পাশাপাশি দুই নেটে অনুশীলন করার সময় তারা বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। তারপর হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর