রবিবার, ১৬ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা
ক্রীড়াঙ্গনে বঙ্গবন্ধু পরিবার ২য় পর্ব

বন্ধুর স্মৃতি জাগিয়ে রাখতেই শেখ জামাল ক্লাবের সৃষ্টি

মনজুর কাদের

বন্ধুর স্মৃতি জাগিয়ে রাখতেই শেখ জামাল ক্লাবের সৃষ্টি
আমি চিন্তা করলাম বন্ধু শেখ জামাল যে খেলাধুলার সঙ্গে জড়িত ছিল অনেকেই জানেন না। তার স্মৃতিকে জাগিয়ে রাখতে ধানমন্ডি ক্লাবের নতুন নাম দিলাম লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব

ধানমন্ডি ক্লাবের সংকটাপন্ন অবস্থা হয় পিয়ারু ভাইয়ের মৃত্যুর পর । আমাকে সবাই দলের দায়িত্ব নিতে বললেন। আমি বললাম সমস্যা নেই, দায়িত্ব নেব। তবে সবার সহযোগিতা দরকার। আমি সেরা দল গড়ব। নতুন উদ্যোগে দল যখন সাজাচ্ছি, তখন বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানা বললেন, কাদের ভাই আবাহনী যে কামাল ভাইয়ের দল পুরো দেশ জানে। সুলতানা ভাবীর নামে ক্রীড়া কমপ্লেক্স আছে। শেখ রাসেলের নামেও ক্লাব হয়েছে। এখন কি জামাল ভাইয়ের নামে কিছু করা যায় না। আমি চিন্তা করলাম বন্ধু শেখ জামাল যে খেলাধুলার সঙ্গে জড়িত ছিল অনেকেই জানেন না। তার স্মৃতিকে জাগিয়ে রাখতে ধানমন্ডির নতুন নাম দিলাম লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। দেখেন নতুন নামেই শেখ জামাল এখন দেশের অন্যতম সেরা ক্লাব। কামাল ভাই খেলোয়াড় ছিলেন। আবাহনী প্রতিষ্ঠা করেছেন কে না জানে। শেখ জামালও প্রথম বিভাগে ফুটবল ও হকি খেলেছে। আমরা দুই বন্ধু আবাহনীর প্রতিষ্ঠাতা সদস্যও ছিলাম। ১৯৭২ সালে ফুটবলের অভিষেক আসরে জামাল ও আমি আবাহনীর রেজিস্ট্রেশনকৃত ফুটবলার ছিলাম। যদিও খুব বেশি খেলার সুযোগ পাইনি। ১৯৭৩ সালে আলী ইমাম ভাই আমাদের আজাদ স্পোর্টিংয়ে নিয়ে যান। তখন এহতেশাম ভাই ও নজরুল ভাইয়ের মতো খ্যাতনামা ফুটবলার থাকলেও আজাদের ছিল নাজুক অবস্থা। শেখ জামালের পজিশন লেফট আউট ও আমি স্ট্রপার ব্যাক। আমাদের পারফরমেন্সে দর্শকরা মুগ্ধ হলেন। ১৫ থেকে আজাদকে ৮ নম্বরে উঠিয়ে আনি। পরের বছর আজাদ শক্তিশালী দল গড়ে। আমাদেরও খেলার কথা ছিল। কিন্তু জামাল আর আমি সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ায় খেলতে পারিনি। জামালের সঙ্গে আমার শেষ দেখা হয় ১৯৭৫ সালের ১৩ আগস্ট। ও বিয়ে করার পর ৩২ নম্বরে তেমন আড্ডা মারা হতো না। সেদিন কাছের বন্ধুদের দাওয়াত দিয়েছিল। বন্ধুর সঙ্গে সেই-ই শেষ দেখা আমার। ১৫ আগস্ট ঘাতকরা তাকে মেরে ফেলে। কত যে স্মৃতি ওর সঙ্গে তা কখনো ভোলবার নয়।

সর্বশেষ খবর