রবিবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

সব সময় চেয়েছি বার্সাতেই ক্যারিয়ার শেষ করতে

ক্রীড়া ডেস্ক

সব সময় চেয়েছি বার্সাতেই ক্যারিয়ার শেষ করতে

‘আমি বছরের অনেকবারই প্রেসিডেন্টকে বলেছি। তিনি আমাকে মৌখিকভাবে সব সময় বলেছেন, মৌসুম শেষে ইচ্ছা করলে যেতে পারেন। আমি সেটা সরল মনে বিশ্বাস করেছি। এরপর আমি যখন আমার নতুন লক্ষ্য স্থির করে বার্সেলোনার কথা তাকে জানালাম, তখন ১০ জুনের কথা বললেন। তিনি কথা রাখেননি।’

 

লিওনেল মেসির বার্সেলোনা ছাড়ার খবরে যেমন ফুটবল বিশ্বে তোলপাড় শুরু হয়ে গিয়েছিল তেমনি এক সাক্ষাৎকারে সব ঠান্ডা হয়ে গেল। যারা লিওনেল মেসিকে স্বার্থপর ভাবছিলেন তারাও নিজেদের ভুল বুঝতে পারছেন। বিস্তারিত ব্যাখ্যাসহ বার্সায় থেকে যাওয়ার ঘোষণার পর সবকিছু পরিষ্কার হয়ে গেছে। তাই বার্সার ফ্যানপেজে ভক্তদের অনেকে মেসির কাছে ‘সরি’ও বলেছেন।

লিওনেল মেসি গোল ডটকমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পরিষ্কার করে বলে দিয়েছেন, ‘আমি সব সময় চেয়েছি বার্সেলোনাতেই আমার ফুটবল ক্যারিয়ার শেষ করতে।’

সাক্ষাৎকারে বার্সেলোনার প্রতি মেসির গভীর ভালোবাসা প্রকাশ পেয়েছে। আর্জেন্টাইন তারকার কথায় পরিষ্কার হয়েছে যে তিনি সইচ্ছায় কখনই বার্সা ছাড়তে চাননি। যে ক্লাবটির সঙ্গে তার ২০ বছরের সম্পর্ক শুধু টাকার জন্য তা তিনি কেন ছাড়বেন? বরং বাধ্য হয়েছিলেন বার্সা ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিতে। ক্লাবটির প্রেসিডেন্ট জোসেফ মারিয়া বার্তোমেউ যে মেসির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন সে বিষয়টিও উঠে এসেছে মেসির কথায়।

বার্তোমেউয়ের বোর্ড মেসিকে নানা আচরণে বুঝিয়ে দিয়েছিল, তিনি যেতে পারেন। বার্সা ছাড়ার সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে মেসি বলেন, ‘বছরটা আমার জন্য খুবই কঠিন ছিল। ম্যাচের মধ্যে, প্রশিক্ষণের সময় এমনকি ড্রেসিংরুমেও আমি অনেক ভোগান্তির শিকার হয়েছি। সবকিছুই আমার প্রতিকূলে ছিল। সে কারণেই আমি নতুন লক্ষ্য নিয়ে বার্সা ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘এমন নয় যে বায়ার্ন মিউনিখের বিরুদ্ধে বাজেভাবে পরাজয়ের পর আমি হঠাৎ করে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অনেক দিন থেকেই ভেবেচিন্তে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।’

মেসি বলেন, ‘আমার মনে হয়েছে এখন বার্সেলোনার তরুণ তারকাদের দরকার। বার্সেলোনায় আমার সময় শেষ।’

মেসির বার্সা ছাড়ার বিষয়টি মৌখিকভাবে অনেক আগেই জানিয়েছেন বার্সেলোনা প্রেসিডেন্টকে। আর্জেন্টাইন তারকা বলেন, ‘আমি বছরের অনেকবারই প্রেসিডেন্টকে বলেছি। তিনি আমাকে মৌখিকভাবে সব সময় বলেছেন, মৌসুম শেষে ইচ্ছা করলে যেতে পারেন। আমি সেটা সরল মনে বিশ্বাস করেছি। এরপর আমি যখন আমার নতুন লক্ষ্য স্থির করে বার্সেলোনার কথা তাকে জানালাম, তখন ১০ জুনের কথা বললেন। তিনি কথা রাখেননি।’

মেসি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট আগে আমাকে কখনই ১০ জুনের আগে জানাতে হবে এমন কথা বলেননি। তাই মৌসুম শেষ হওয়ার পর আমি আনুষ্ঠানিকতার অংশ হিসেবে ব্যুরোফ্যাক্স পাঠাই। আমি তো কখনই বার্সেলোনার বিরুদ্ধে লড়াই করতে চাইনি। প্রেসিডেন্ট তার কথা রাখেননি।’

নাটকীয় ঘটনার পর মেসি ভক্তদের উদ্দেশ্যে দুঃখ প্রকাশ করেন।

মেসির বার্সা ছাড়ার খবরে ভক্তরা বার্সেলোনা ক্লাবে গিয়ে আন্দোলন করেন। বার্তোমেউয়ের প্রতিদ্বন্দ্বীরা তার ব্যর্থতার বিষয়টি সামনে নিয়ে আসেন। পরিস্থিতি এমন হয়ে গিয়েছিল যেন মেসি চলে গেলে বার্তোমেউয়ের ক্ষমতাও চলে যাবে! পরিস্থিতি সামাল দিতে, বার্তোমেউও মেসিকে আটকানোর জন্য যুদ্ধ ঘোষণা করেন। ৭০০ মিলিয়ন ইউরোর রিলিজ ক্লজটি সামনে চলে আসে। সব নাটকের পরিসমাপ্তি করে দিলেন আর্জেন্টাইন তারকা নিজেই।

প্রশ্ন হচ্ছে, মেসির বার্সেলোনায় থেকে যাওয়ার ঘোষণায় বার্তোমেউয়ের কি জয় হলো? আপাতদৃষ্টিতে বার্তোমেউ জিতলেও, তিনি যে বিশ্বসেরা তারকার সঙ্গে মিথ্যাচার করেছেন তা প্রকাশ পেয়েছে। তা ছাড়া এমন পরিস্থিতির পর মেসি কি আর আগের মতো নিজেকে উজাড় করে দিয়ে বার্সেলোনার হয়ে খেলতে পারবেন?

সর্বশেষ খবর