রবিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

হঠাৎ সরে দাঁড়ালেন বাদল রায়

সালাউদ্দিন-মানিক মুখোমুখি

ক্রীড়া প্রতিবেদক

হঠাৎ সরে দাঁড়ালেন বাদল রায়

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের নির্বাচন ৩ অক্টোবর। কিন্তু তার আগেই চমকের পর চমক। যিনি কখনো নির্বাচনের আশপাশেই ছিলেন না, সেই শফিকুল ইসলাম মানিক সভাপতি পদে মনোনয়নপত্র কিনে বড় চমক দেখান। গতকাল আরেক চমক দেখালেন বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে পরিচিত মুখ বাদল রায়। তিনি সভাপতি পদ থেকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। এখন সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন কাজী সালাউদ্দিন ও শফিকুল ইসলাম মানিক। বাদল যেদিন মনোনয়নপত্র শরীয়তপুরের কাউন্সিলর  মোজাম্মেল হক চঞ্চলের মাধ্যমে জমা দেন সেদিন চঞ্চলকে বাফুফে ভবনে ঢুকতে বাধা দেওয়ায় অনেকের সন্দেহ ছিল বাদল নির্বাচন করতে পারবেন কিনা।

বাদল অবশ্য জানিয়েছেন, ‘আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ। প্রচারণার জন্য ভোটারদের কাছে যাওয়া কষ্টকর ছিল। তাই সবকিছু চিন্তা করেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি নির্বাচন না করার। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় ছিল বিকাল ৫টায়। কিন্তু বাদলের স্ত্রী ১ ঘণ্টা পর বাফুফে ভবনে এসে সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগের হাতে প্রত্যাহারের চিঠি তুলে দেন।

বাদল প্রত্যাহার করাতে সভাপতি পদে দুই প্রার্থী। সালাউদ্দিন ও মানিক ৩ অক্টোবর ভোটযুদ্ধে মুখোমুখি হবেন। যদিও কথা উঠছে শেষ পর্যন্ত মানিক লড়াইয়ে থাকতে পারবেন কিনা। গতকাল মানিক দৃঢ়কণ্ঠেই বলেছেন, ‘কোনোভাবেই আমি সরে দাঁড়াব না। নির্বাচন করবই।’ যদি সভাপতি পদে নির্বাচন হয় মানিক কতটা সুবিধা করবেন সেটাও বড় প্রশ্ন। তবে বাদল রায় প্রার্থী হলে ভোটের চিত্র অন্যরকম হতে পারত। ফুটবলের বেহাল দশার কারণে সালাউদ্দিনকে ঘিরে সমালোচনার শেষ ছিল না। বিশেষ করে ২০১৬ নির্বাচনী প্রচারে সালাউদ্দিন সাংবাদিকদের সামনে ঘোষণা দেন, এটাই তার শেষ নির্বাচন। এরপর কেন দাঁড়ালেন এটাই প্রশ্ন। সালাউদ্দিন অবশ্য বলেছেন, ফুটবলে উন্নয়ন হয়েছে। এখনো অনেক কাজ অসমাপ্ত রয়েছে। তাই নির্বাচনে দাঁড়াচ্ছি। আশা করি ভোটাররা সঠিক রায় দেবেন।

বাদল রায় সরে দাঁড়াতে সালাউদ্দিনের বড় চিন্তা দূর হয়ে গেল। সালাউদ্দিন-বাদল দুই মেয়াদে একই প্যানেল থেকে নির্বাচন করেন। ফেডারেশনের নানা কর্মকান্ড নিয়ে মতানৈক্য দেখা দেওয়ায় সম্পর্কের অবনতি হয়। বাদল রায় বরাবরই বলে আসছেন ফুটবলার সালাউদ্দিন ভাইকে আমি শ্রদ্ধা করি। তবে ফুটবল বাঁচাতে এই পদের পরিবর্তনটা জরুরি হয়ে পড়েছে। বাদল এক পর্যায়ে তরফদার মো. রুহুল আমিনের প্রচারণায় যোগ দেন। তিনি সভাপতি পদে তরফদারকে সমর্থন দেন। কিন্তু ২০ এপ্রিল স্থগিত নির্বাচনে তরফদার আচমকা ঘোষণা দেন তিনি সভাপতি পদে নির্বাচন করবেন না। বাদল রায় তখনই ঘোষণা দেন, তিনি সভাপতি পদে নির্বাচন করবেন। ৩ অক্টোবর নির্বাচনের নতুন তারিখ ঘোষণার পর তরফদার সভাপতি পদেই নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ব্যাপক প্রচারণাও চালান। হঠাৎ করে আবার তিনি ঘোষণা দেন, আপাতত ফুটবলের সঙ্গে কোনো সম্পর্কই রাখবেন না। ব্যবসায়ে মনোযোগী হবেন। তবে অনেকের সন্দেহ, এর পেছনে কোনো অদৃশ্য শক্তি কাজ করেছে কিনা। বাদলের বেলায় একই সন্দেহ।

বাদল গতকাল যখন মুঠোফোনে কথা বলেন, তখন বেশ উত্তেজিত ছিলেন। বললেন, ‘লিখে দেন শারীরিক অসুস্থতার কারণে নির্বাচন করছি না। এর বাইরে আমি কিছু বলতে পারব না।’ এতটা উত্তেজিত ছিলেন যে, কেঁদেও ফেলেন। যাক, বাদল রায় সরে গেলেও সিনিয়র সহ-সভাপতি, সভাপতি পদে কেউ প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। সদস্য পদে দুজন নাম প্রত্যাহার করেন। সদস্য পদে প্রার্থী অভিজ্ঞ সংগঠক ফজলুর রহমান বাবুল বলেন, ‘এ নির্বাচন তামাশায় পরিণত হয়েছে। প্রভাব খাটিয়ে নির্বাচন বিধি ভঙ্গ হচ্ছে। তবু নির্বাচন কমিশনার নীরব ভূমিকা পালন করছে। জানিনা, ফুটবলের জন্য কি দুর্দশা অপেক্ষা করছে।’

সর্বশেষ খবর