মঙ্গলবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা
বিসিবি সভাপতির প্রতিক্রিয়া

এভাবে ক্রিকেট খেলা যায় না

ক্রীড়া প্রতিবেদক

এভাবে ক্রিকেট খেলা যায় না

শ্রীলঙ্কান সরকারের স্বাস্থ্যবিধি মেনে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে মুমিনুলদের। আইসোলেশনে থাকাকালীন অনুশীলন দূরে থাক, খাবারের জন্য রুম থেকেও বের হতে পারবেন না ক্রিকেটাররা। ক্রিকেট শ্রীলঙ্কার অদ্ভুতুড়ে এই শর্তগুলোকে ইতিহাসে বিরল বলেছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। এমন সব শর্ত মেনে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ খেলতে শ্রীলঙ্কা সফরে যাবে না বাংলাদেশ। গতকাল মিডিয়ার মুখোমুখিতে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি।

উপমহাদেশের দেশগুলোর মধ্যে দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কায় করোনার সংক্রমণ সবচেয়ে কম। এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবার আগে ঘরোয়া ক্রিকেট শুরু হয় দেশটিতে। সে ভাবনায় শ্রীলঙ্কার টেস্ট সিরিজ খেলার প্রস্তাবে রাজি হয় বাংলাদেশ। শুরুতে ক্রিকেট শ্রীলঙ্কাও রাজি হয়েছিল কোয়ারেন্টাইন ব্যবস্থা না রাখার এবং প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার ব্যবস্থা করে দেওয়ার। তিনদিন আগে শ্রীলঙ্কা নতুন কিছু শর্ত জুড়ে দেয়। জানিয়ে দেয়, দেশটির স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের বাধ্যতামূলক ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। এসময় তারা খাবারের জন্য রুমের বাইরে আসতে পারবে না। করোনা সংক্রমণ এড়ানোর জন্য সর্বোচ্চ ৩০জন ক্রিকেটার নিয়ে সফরে যেতে পারবে। শ্রীলঙ্কার এমন শর্তে জটিলতার সৃষ্টি হয়। বিসিবি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেনি। বিসিবি চাইছে ৬০-৬৫ ক্রিকেটার নিয়ে সফরে যেতে এবং ন্যূনতম ৩টি প্রস্তুতি খেলতে। কিন্তু দ্বীপরাষ্ট্রের নতুন শর্তে এখন সিরিজের ভবিষ্যতই অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে। গতকাল পরিচালকদের সঙ্গে  বৈঠক শেষে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বলেন, ‘ওদেরকে বলতে চাই, ওরা যে শর্তাবলী দিয়েছে, এটা ইতিহাসে বিরল। এসব শর্ত মেনে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ সম্ভব নয়। ওরা যদি বলে, আসো আলাপ আলোচনা করি, তখন আমরা দেখব কি বলা যায় বা কোথায় শিথিল করতে বলব। তবে এমন শর্তে খেলা হবে না।’

বাংলাদেশ সর্বশেষ টেস্ট ম্যাচ খেলেছে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ফেব্রুয়ারিতে। সর্বশেষ প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট খেলছে মার্চে। এরপর গত ৬ মাস ধরে কোনো ধরনের ক্রিকেট খেলছে না। সাত মাস পর শ্রীলঙ্কা সিরিজ দিয়ে প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছে। কিন্তু দ্বীপরাষ্ট্রের যোগ করা নতুন সব শর্তে সিরিজই ভেস্তে যাওয়ার পথে। প্রতিযোগীমূলক ক্রিকেটে ফিরতে মরিয়া বিসিবি চাইছিল শ্রীলঙ্কার মাটিতে প্রস্তুতি নিতে। এজন্য জাতীয় দলের পাশাপাশি হাইপারফরম্যান্স (এইচপি) স্কোয়াডও নিয়ে যেতে চেয়েছে। জাতীয় দল ও এইচপি সেখানে তিনটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে। এরপর চূড়ান্ত স্কোয়াড ঘোষণা করবে টিম ম্যানেজমেন্ট। এমন সব পরিকল্পনা এখন মৃত প্রায়। সব মিলিয়ে ৬৫জন ক্রিকেটার নিয়ে সফরের পরিকল্পনা করেছিল বিসিবি।

শ্রীলঙ্কা জানিয়েছে সর্বোচ্চ ৩০ জনকে অ্যালাউ করবে। এটা মেনে নিতে রাজি নয় ক্রিকেট বোর্ড। বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘ওখানে আমাদের থাকতে হবে কলম্বো নয়, ডাম্বুলায়। এমনিতেই ওই জায়গা আইসোলেটেড। রুম থেকে বের হতে পারবে না, এমন শর্তে আশ্চর্য হয়েছি। সফরে গেলে সাধারণত স্বাগতিক দেশগুলো বল থ্রোয়ার দেয়, নেট বোলার দিয়ে থাকে। ওরা এটাও দিচ্ছে না। সেটাও না হয় বুঝলাম ঠিক আছে। কিন্তু আমাদের এখান থেকেও নিতে দেবে না। ওরা কী বলতে চাচ্ছে, আমি বুঝছি না। এটাতো ছেলেখেলা নয়, আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচ!’

তিনি আরও বলেন, ‘ওরা আমাদের জানিয়েছে ৩০ জনের বেশি নেওয়া যাবে না। এরমধ্যে থ্রোয়ার, নেট বোলার, সিকিউরিটি, মেডিক্যাল টিম-সবই আমাদের নিতে হবে। তাহলেতো ক্রিকেটারই নিতে পারব না! ওরা জানিয়েছিল, ওদের দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি ভালো। সেজন্যই আমরা বড় স্কোয়াড নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলাম। এখন অনুশীলনই করতে দিচ্ছে না। আমাদের ক্রিকেটাররা ৭ মাস খেলায় নেই। ওখানে অনুশীলন করতে পারব না, এটাতো হয় না।’

সর্বশেষ খবর