শিরোনাম
বুধবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

সিদ্ধান্ত এখন শ্রীলঙ্কার হাতে

ক্রীড়া প্রতিবেদক

সিদ্ধান্ত এখন শ্রীলঙ্কার হাতে

‘বায়ো-সিকিউর বাবল’ আবহে ক্রিকেট মাঠে গড়িয়েছে। ইতিমধ্যে ইংল্যান্ড সফর করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও পাকিস্তান। এখন অস্ট্রেলিয়া দলও ইংল্যান্ড সফরে রয়েছে। যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগের নীতিমালা অনেক কড়াকড়ি। যে কোনো বিদেশির জন্য তাদের ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইন বাধ্যতামূলক। তারপরও সফরকারী দলগুলোকে কোয়ারেন্টাইনের সময় অনুশীলন করার সুযোগ দিয়েছে।

ভারতে করোনার প্রভাব প্রকট থাকায় বিসিসিআই এবার জনপ্রিয় টি-২০ টুর্নামেন্ট আইপিএলের আয়োজন করছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। সেখানেও সরকারের নির্দেশনা ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। কিন্তু ক্রিকেটারদের ক্ষেত্রে তারা শিথিল করেছে। কোয়ারেন্টাইনে থেকেই খেলোয়াড়রা অনুশীলন করার সুযোগ পাবেন। এ ছাড়া বিদেশের অনেক জায়গায় ক্রিকেট টুর্নামেন্ট হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই অধিকাংশ ক্রীড়া ইভেন্ট চলছে। কিন্তু এক্ষেত্রে শ্রীলঙ্কা হাঁটছে ঠিক উল্টো পথে।

তারা অনেক শর্ত দিয়েছে বাংলাদেশকে। এমনকি কোয়ারেন্টাইনের ১৪ দিন নাকি খাবারের জন্যও হোটেল রুম থেকে বের হতে পারবেন না সফরে যাওয়া ক্রিকেটার এবং অফিশিয়ালরা। বিসিবি সভাপতির কাছে এটা বাস্তবসম্মত চিন্তা নয়। তাই তিনি সরাসরি প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

নাজমুল হাসান কোনোরকম রাখঢাক না করে বলেই দিয়েছেন এভাবে ক্রিকেট খেলা যায় না। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করে মেইল করেছে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ডকে।

বিসিবি এখন অপেক্ষায় আছে শ্রীলঙ্কার ফিরতি মেইলের।

দ্বীপরাষ্ট্রে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল সফর করবে কিনা তা পুরোটাই নির্ভর করছে তাদের ওপর। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বিসিবির মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস বলেন, ‘সফরটি হবে কিনা সেটা নির্ভর করছে শ্রীলঙ্কার ওপর। তারা কী সিদ্ধান্ত নেয় দেখা যাক।’

আশার কথা হচ্ছে, গণমাধ্যমে নিউজ দেখে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করার জন্য শ্রীলঙ্কার ক্রীড়ামন্ত্রী তাদের বোর্ডকে স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করার নির্দেশ দিয়েছেন।

এজন্য বেশ আশাবাদী বিসিবি পরিচালক ও ক্রিকেট অপারেশন্সের চেয়ারম্যান আকরাম খান। গতকাল সন্ধ্যায় বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘যেহেতু শ্রীলঙ্কার ক্রীড়ামন্ত্রী ইতিবাচক অবস্থান জানিয়েছেন, তাই আমার ধারণা তাদের স্বাস্থ্য বিভাগও কঠোর অবস্থান থেকে সরে আসবে। তারা নমনীয় হলে দল পাঠাতে কোনো অসুবিধা নেই।’

শ্রীলঙ্কা নমনীয় না হলে যে সফরটাই স্থগিত হয়ে যাচ্ছে তা এক বিসিবি সভাপতি জানিয়ে দিয়েছেন। তবে এই সময়ে ক্রিকেটাররা যাতে বসে না থাকেন সেজন্যও পরিকল্পনা করে রেখেছে ক্রিকেট বোর্ড। আকরাম খান বলেন, ‘শেষ পর্যন্ত যদি সিরিজটা না হয় তাহলে আর কী করার আছে। তবে তখন আমরা ঘরোয়া ক্রিকেট চালু করে দেব। তা ছাড়া ঘরোয়া ক্রিকেট চালুর ব্যাপারে সবকিছু প্রস্তুত আছে। মাঠ, অন্যান্য সব ব্যবস্থা সব কিছু। আমরা শুধু পরিস্থিতি উন্নয়নের জন্য অপেক্ষা করছিলাম।’

শ্রীলঙ্কায় বাংলাদেশের তিন ম্যাচের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নেওয়ার কথা। দেশে যেহেতু করোনা পরিস্থিতি খুব বেশি ভালো হয়নি, তা ছাড়া অনেক দিন থেকে ক্রিকেটাররা খেলার বাইরে রয়েছেন -সব কিছু বিবেচনা করেই শ্রীলঙ্কায় আগে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বাংলাদেশ। জাতীয় দলের পাশাপাশি হাইপারফরম্যান্স (এইচপি) দলকেও শ্রীলঙ্কায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বিসিবি। যাতে শ্রীলঙ্কায় অনুশীলন করার পাশাপাশি তারা জাতীয় দলের সঙ্গে প্রস্তুতি ম্যাচে অংশ নিতে পারে। এই চিন্তা থেকেই লঙ্কা সফরে ৬৫ জনের একটি বহর যাওয়ার কথা ছিল।

বিসিবি তাদের পরিকল্পনার কথা শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ডকেও জানিয়েছে আগে। কিন্তু তাদের স্বাস্থ্য বিভাগের কঠোরতার কারণে সফরটাই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

শ্রীলঙ্কা সফরকে সামনে রেখেই মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে কঠোর অনুশীলন করছেন ক্রিকেটাররা। ইতিমধ্যে বিদেশি কোচরাও এসেছেন। দ্বিতীয় টেস্ট থেকে ফিরতে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একা অনুশীলন করছেন সাকিব আল হাসানও।

এখন সবাই তাকিয়ে আছেন শ্রীলঙ্কার দিকে!

সর্বশেষ খবর