বৃহস্পতিবার, ১ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

ফেরার মঞ্চ ঘরোয়া ক্রিকেটই

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ফেরার মঞ্চ ঘরোয়া ক্রিকেটই

কোয়ারেন্টাইন ইস্যুতে শেষ মুহূর্তে স্থগিত হয়েছে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা টেস্ট সিরিজ। এর ফলে ৬ বছরের ব্যবধানে তিন টেস্ট ম্যাচ সিরিজ খেলা থেকে বঞ্চিত হলো বাংলাদেশ। সিরিজ ভেস্তে যাওয়ায় ফেব্রুয়ারির পর সহসাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরা হচ্ছে না মুমিনুলদের। করোনা পরিস্থিতির জন্য জানুয়ারিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সিরিজের ভবিষ্যৎও অনিশ্চিত। অবশ্য আগামী মার্চে টাইগাররা তিনটি ওয়ানডে ও তিনটি টি-২০ ম্যাচ খেলবে নিউজিল্যান্ডে। তাহলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে টাইগারদের ফিরতে অপেক্ষায় থাকতে হবে ১৩ মাস। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরা দেরি হলেও মুমিনুল, মুশফিক, তামিম, মাহমুদুল্লাহদের মাঠে ফেরার ব্যবস্থা করছে বাংলাদেশ। অক্টোবরেই একটি টি-২০ টুর্নামেন্ট, প্রিমিয়ার ক্রিকেট কিংবা জাতীয় দল, এইচপি ও অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে নিয়ে একটি কর্পোরেট টুর্নামেন্ট আয়োজনের পরিকল্পনা করেছে বিসিবি। ক্রিকেটারদের মাঠে ফেরাতে সব ধরনের পরিকল্পনার মাঝেই জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা আজ পুনরায় অনুশীলনে নামছেন। জৈব সুরক্ষা বলয়ে থেকে দুই সপ্তাহ অনুশীলন করবে। অনুশীলনের মধ্যে দুটি দুদিনের এবং একটি তিনদিনের প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে ক্রিকেটাররা নিজেদের মধ্যে বিভক্ত হয়ে।

শ্রীলঙ্কা সফরকে সামনে রেখে দলগত অনুশীলন শুরু হয়েছিল ২০ সেপ্টেম্বর। সিরিজ স্থগিত হওয়ায় ক্রিকেটাদের অনুশীলন বন্ধ করে বাড়ি পাঠিয়ে দেয় বিসিবি। ছুটি থাকলেও গত দুদিন ধরে ক্রিকেটাররা ঐচ্ছিক অনুশীলন করেছে। কোচিং স্টাফদের উপস্থিতিতে পুনরায় দলগত অনুশীলন শুরু হচ্ছে। ক্রিকেটারদের গতকাল চতুর্থবারের মতো কভিড-১৯ পরীক্ষা করেছে বিসিবি।

ফেব্রুয়ারিতে সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ। টাইগাররা সর্বশেষ প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট খেলে মার্চে। প্রথম রাউন্ডের খেলা শেষে করোনাভাইরাসের জন্য বন্ধ হয়ে যায় প্রিমিয়ার ক্রিকেট। স্থগিত হয়ে পড়ে বিপিএল। শুরুতে বিসিবির পরিকল্পনায় ছিল ঘরোয়া ক্রিকেট দিয়ে ক্রিকেটারদের মাঠে ফেরাতে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করায় শেষ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মনোনিবেশ করেছিল। কিন্তু সেটা স্থগিত হয়ে যাওয়ায় এখন ঘরোয়া ক্রিকেটের দিয়েই মনোনিবেশ করেছে বিসিবি। বিসিবি সিইও নিজামউদ্দীন চৌধুরী সুজন বলেন, ‘সিরিজ স্থগিত হয়ে যাওয়ায় এখন আমরা ঘরোয়া ক্রিকেটের দিকেই মনোযোগ দিয়েছি। কাজ করছি যত দ্রুত মাঠে ক্রিকেট ফেরানো যায়। একটি টুর্নামেন্ট, কিংবা বন্ধ হয়ে যাওয়া ক্রিকেট লিগ দিয়ে মাঠে ফেরাতে চাইছি।’ বিসিবি সিইও নির্দিষ্ট করে সময়ের উল্লেখ না করলেও অক্টোবরের শেষ সপ্তাহের মধ্যে ক্রিকেটাররা ব্যাট ও বলের লড়াইয়ে মেতে উঠবেন, এটা অনেকটাই নিশ্চিত।

বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন সিরিজ স্থগিতের ঘোষণা যেদিন দেন, সেদিনই স্পষ্ট করে জানিয়েছিলেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে সর্বোচ্চ সংখ্যক ক্রিকেটারকে ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলাতে, ‘আমরা চাইছি লিগ বা টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ সংখ্যক ক্রিকেটারদের অংশগ্রহণ। বিসিবি ক্লাবগুলোকে এর মধ্যেই একটি গাইডলাইন দিয়েছে। সেটা মেনে যেন ক্লাবগুলো প্রস্তুতি নেয় খেলার।’ যদি লিগের আগে টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়, সেখানে কর্পোরেট দলগুলোকে নিয়ে একটি টি-২০ টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হতে পারে। সেখানে সর্বোচ্চ ৬টি দল খেলতে পারে। তাতে ১৫ জন করে ৯০ জন ক্রিকেটারকে খেলানোর পরিকল্পনা রয়েছে বিসিবির। বিসিবি সভাপতি তেমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন, ‘যদি ৬টি দল নিয়ে টুর্নামেন্ট হয়, সেখানে ৯০ জন ক্রিকেটার খেলতে পারবে। আমরা চাইছি সর্বোচ্চ সংখ্যক ক্রিকেটারের অংশগ্রহণ। টুর্নামেন্টটি কর্পোরেটও হতে পারে। আবার লিগও হতে পারে।’

কর্পোরেট লিগ, কিংবা টি-২০ টুর্নামেন্ট অথবা প্রিমিয়ার ক্রিকেট, প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় বিভাগ-যাই হোক না কেন, চলতি মাসেই ক্রিকেটাররা প্রতিযোগীমূলক ক্রিকেটে ফিরছেন মোটামুটি নিশ্চিত। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।

সর্বশেষ খবর