শুক্রবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

সালাউদ্দিনের ৪০ ক্লাবের ৩৫

লিগ কমিটির ঘোষণায় হতাশ ফুটবলাররা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

সালাউদ্দিনের ৪০ ক্লাবের ৩৫

‘আমরা ৬০ শতাংশ থেকে চল্লিশে নেমেছি। এরপর আবার ৩৫ শতাংশের সিদ্ধান্ত আসে কীভাবে? এটা আমাদের কাছে বড় হতাশার। আমরা সবাই বসব। আবার সভাপতি স্যারের সঙ্গে কথা বলব। ’

 

বাফুফের নতুন কমিটির কর্মকান্ডই শুরু হয়নি। প্রথম নির্বাহী কমিটির সভায় সাব-কমিটি গঠন হয়েছে। সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন চাচ্ছেন চার বছরের মেয়াদে ফুটবলে নতুনত্ব আনতে। কিন্তু নতুন কমিটির শুরুতেই বাধার সম্মুখীন হয়েছে। আর তা ফুটবলে নতুন মৌসুম ঘিরে। গত বছর পেশাদার লিগ হতে পারেনি। স্বাভাবিকভাবেই ক্লাবগুলোর দাবি ছিল গত বছর যে যার দলে ছিল তারাই থাকবে। এ নিয়ে ফুটবলাদের কোনো আপত্তি ছিল না। পারিশ্রমিক নিয়েই যত জটিলতা। মৌসুম শেষ না হলেও ক্লাবগুলো চুক্তি মোতাবেক পুরো পারিশ্রমিকই দিতে রাজি হয়। কেউ কেউ আবার আগাম হিসেবে ৭০ থেকে ৭৫ ভাগ পারিশ্রমিক পেয়ে যান। যা বাকি আছে তা নতুন মৌসুমে ফুটবল গড়ানোর আগে শোধ করে দেবে।

ক্লাবগুলো শর্ত দিয়েছিল করোনাভাইরাসে এমনিতেই তারা অর্থ সংকটে আছে। তাই নতুন মৌসুমে কোনোভাবেই গতবারের চুক্তির ২০ শতাংশের বেশি পারিশ্রমিক দেওয়া সম্ভব নয়। নির্বাচনের আগে ক্লাবগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বসেন বাফুফে সিনিয়র সহ-সভাপতি ও লিগ কমিটির চেয়ারম্যান সালাম মুর্শেদী। যেখানে সিদ্ধান্ত হয় ২৫ শতাংশ পারিশ্রমিক দেওয়া হবে। অর্থাৎ গতবার যে ফুটবলার ২০ লাখ পেয়েছিল এবার পাবেন ৫ লাখ। লিগ কমিটির এ সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেননি ফুটবলাররা। তারা স্পষ্টভাবেই জানিয়ে দেয় ২৫ ভাগে কোনোভাবেই খেলব না। এ নিয়ে তারা কিছুদিন আগে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের সঙ্গে বৈঠকে বসেন।

সালাউদ্দিন তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেন, এমন অর্থনৈতিক মন্দা অবস্থায় ক্লাবগুলো টাকা পাবে কোথায়? তপু বর্মন, আশরাফুল ইসলাম রানা বলেন, আমরা ছাড় দেব, তবে তা ৫০ শতাংশের মধ্যে থাকতে হবে। সালাউদ্দিন তাদের বলেন, কিছু ক্লাবের সঙ্গে আলাপ হয়েছে, অন্যদের সঙ্গে করব। আশা করি তারা ৪০ শতাংশে রাজি হয়ে যাবে। এখানে তোমরা না কর না। সভাপতির আশ্বাসেই রাজি হয়ে যান ফুটবলাররা।

গতকাল সালাম মুর্শেদী পুনরায় ক্লাব প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে ১ নভেম্বর-১৫ ডিসেম্বর দলবদল। ১৯ ডিসেম্বর ফেডারেশন কাপ শুরু। সব কর্মসূচিই ঘোষণা করা হয়েছে। তবুও ফুটবল ঝুলে থাকল পারিশ্রমিক ঘিরে। সভায় অনেক ক্লাবই বলে সভাপতিকে আমরা সম্মান জানাই। কিন্তু ৪০ শতাংশের কথা উল্লেখ করলেন কীভাবে? অনেক ক্লাবই তো গত বছরের বকেয়া শোধ করতে পারেনি। নতুনভাবে টাকা দেবে কীভাবে? তবু ক্লাবগুলো জানায় সভাপতির প্রতি সম্মান জানিয়ে আমরা পারিশ্রমিক বাড়াতে রাজি। তবে ৩৫ শতাংশের বেশি নয়। এরপরও যদি ফুটবলাররা আপত্তি জানায় আমরা নতুন ফুটবলার সংগ্রহ করে মাঠে নামব। 

বৈঠক শেষে সালামের কাছে জানতে চাওয়া হয় যদি ৩৫ শতাংশে রাজি না হয় তাহলে কী হবে? ‘সালাউদ্দিন ভাই ৪০ শতাংশের কথা বলেছিলেন। ক্লাবগুলো বৈঠকে তাদের শেষ সামর্থ্যরে কথা জানিয়ে দিয়েছে। আশা করি ফুটবলাররা তা মেনে নেবে। গতকাল আবার বাফুফের ভবনে বেশ কজন ফুটবলার উপস্থিত ছিলেন। জাতীয় দলের গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানা বলেন, ‘আমরা ৬০ শতাংশ থেকে চল্লিশে নেমেছি। এরপর আবার ৩৫ শতাংশের সিদ্ধান্ত আসে কীভাবে? এটা আমাদের কাছে বড় হতাশার। আমরা সবাই বসব। আবার সভাপতি স্যারের সঙ্গে কথা বলব। সুতরাং ঘোষণা যাই আসুক না কেন তার কোনোটাই চূড়ান্ত নয়।’

সর্বশেষ খবর