সোমবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

বসুন্ধরাকে ট্রফি উপহার দিতে চান খালেদ

ক্রীড়া প্রতিবেদক

বসুন্ধরাকে ট্রফি উপহার দিতে চান খালেদ

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বসুন্ধরা কিংস সভাপতি ইমরুল হাসানের সঙ্গে ইরানি ডিফেন্ডার খালেদ শাফি -বাংলাদেশ প্রতিদিন

অনেকদিন পর ঘরোয়া আসরে ইরানি ফুটবলারের দেখা মিলবে। আসছে মৌসুমে দেশসেরা বসুন্ধরা কিংসের ঐতিহ্যবাহী জার্সি গায়ে চরিয়ে মাঠে নামবেন ইরানি ডিফেন্ডার খালেদ শাফি। শনিবার তিনি ঢাকায় পৌঁছান। গতকালই ক্লাব সভাপতি ইমরুল হাসানের সামনে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। খালেদের মাঠে নামাটা এখন সময়ের ব্যাপার। ইমরুল বলেন, ‘রক্ষণভাগে আমরা ভালোমানের বিদেশি ফুটবলার খুঁজছিলাম। অনেকের বায়োডাটা দেখেছি। কিন্তু খালেদকে যোগ্য মনে করায় বেছে নিয়েছি। ইমরুল এটাও বলেন, খালেদ যে মানের খেলোয়াড় ওর অনুশীলন দেখে পরীক্ষা নেওয়ার দরকার নেই। দলবদলে ওর নামই রেজিস্ট্রেশন করানো হবে।’ এর আগে দুই ব্রাজিলিয়ান রবিনহো ও ফার্নাদেজের সঙ্গেও চুক্তি স্বাক্ষর করেছে কিংস। দুজনা নতুন মৌসুমে চ্যাম্পিয়নদের হয়ে মাঠে নামবেন। তবে আর্জেন্টিনার হারনান বারকোস থাকছেন না। পারিবারিক কারণেই তার কিংসে খেলা সম্ভব হচ্ছে না।

ইমরুল বলেন, ‘বারকোস নিঃসন্দেহে উঁচুমানের খেলোয়াড়। তবে আমরা আরও ভালোমানের স্ট্রাইকার খুঁজছি। ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা ছাড়াও বেশ কটি দেশের ফুটবলারদের বায়োডাটা আমাদের কাছে আছে। বারকোসের শূন্যস্থান পূরণ হবে আশা রাখি।’ ঢাকা আসার পর গতকাল খালেদের চোখে মুখে ক্লান্তির ছাপ ফুটে উঠছিল। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে পাশে বসা ইমরুলের দিকে হাত উঁচিয়ে খালেদ বলেন, ‘ওনার অফার ফেলতে পারিনি। সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে গেছি। বসুন্ধরা কিংস বাংলাদেশের সেরা ও জনপ্রিয় দল। এখানে আসতে পেরে ভালোই লাগছে। আমার ওপর আস্থা রেখে কিংস আমাকে এনেছে। এখন আমার দায়িত্ব মাঠে সেরা খেলাটা উপহার দেওয়া। চ্যালেঞ্জ নিয়েই খেলব। আশা রাখি কিংস সমর্থকদের চ্যাম্পিয়নের ট্রফি উপহার দিতে পারব।’ ঢাকায় খেলে যাওয়া নাসের হেজাজি ও বিজন তাহেরির নাম উল্লেখ করেন তিনি। ‘শুনেছি উনারা ঢাকার দর্শকদের মুগ্ধ করেছেন। হেজাজি মারা গেছেন অনেক আগেই। তবুও ইরান ফুটবলে এখনো তিনি জনপ্রিয় মুখ।’

খালেদ বসুন্ধরায় যোগ দেওয়ায় ফুটবলপ্রেমিদের মধ্যে বাড়তি আগ্রহ তৈরি হয়েছে। কেননা অতীতে ঘরোয়া আসরে ইরানের ফুটবলাররা সুনামের সঙ্গে খেলে গেছেন। বিশেষ করে নাসের হেজাজি, নালজেগার ও বিজন তাহেরির নাম এখনো দর্শকদের হৃদয়ে ঠাঁই পেয়ে আছে। ঐতিহ্যবাহী মোহামেডানের অপরাজিত হ্যাটট্রিক লিগ জয়ের পেছনে তাদের অবদান স্মরণীয় হয়ে আছে। ১৯৮৭ সালে ইরানের বোরহান জাদেও মোহামেডানে খেলেন। পরের মৌসুমে তিনি ওয়ান্ডারার্সে যোগ দেন। ১৯৭৮ বিশ্বকাপে খেলা ইরানের গোলরক্ষক নাসের হেজাজি ১৯৮৭ সালে মোহামেডানে আসেন মূলত খেলতে। অথচ তাকেই কিনা দলের কোচ করা হয়। অবশ্য চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনীর বিপক্ষে সেবারই মাঠে নামেন কানন আহত হয়ে মাঠ ছাড়ায়। ওই ম্যাচে ৩-২ গোলে জিতে ছিল মোহামেডান। বিজন তাহেরি ১৯৮৮-৮৯ মৌসুমে দুটি হ্যাটট্রিকসহ সর্বোচ্চ ২৪ গোল করেন।

অন্যদিকে নালজেগার ছিলেন ঢাকার মাঠে সেরা মিডফিল্ডার। ১৯৯৪ সালে নজর আলী নামে আরেক ইরানি আবাহনীতে খেলে মাঠ কাঁপান। এবার খালেদের পালা। পারবেন কি তিনি রক্ষণভাগে কিংসের চীনের প্রাচীর হয়ে দাঁড়াতে? একটা বিষয় না বললেই নয়। মাঠে ফুটবল না থাকলেও বসুন্ধরা কিংস কিন্তু বসে নেই। অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছে। বিদেশি সংগ্রহ করছে। সব মিলিয়ে তাদের তৎপরতা ঠিকই রয়েছে। পেশাদার ফুটবলে এটাই তো বড় গুণ।

সর্বশেষ খবর