শুক্রবার, ৬ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

আমার সেরা মুহূর্ত এখনো আসেনি

আমার সেরা মুহূর্ত এখনো আসেনি

ক্রিকেটার ড্যানিয়েল ভেট্টরির সঙ্গে দ্বৈরথ এবং এখন তিনি স্পিন কোচ...

সাকিব আল হাসান : ভেট্টরি যখন খেলতেন তার কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি। নেতৃত্ব, তার বোলিংয়ের বৈচিত্র্য, ক্রিকেটিং ব্রেইন- সবকিছুই অসাধারণ। এখন তিনি কোচ। তার সঙ্গে মাত্র একদিন কাজ করার সুযোগ হয়েছে। এখন তার সঙ্গে কাজ করার জন্য আমি মুখিয়ে আছি।

পরিপক্ব অধিনায়ক সাকিবকে এখনো পাইনি। অধিনায়ক সাকিবের পরিকল্পনা কী?

সাকিব : এখন আমার টার্গেট যেখান থেকে শেষ করেছিলাম সেখানে পৌঁছানো। আগের থেকেও যেন ভালো কিছু করতে পারি সেই তাড়না আমার ভিতরে থাকবে।

বিকেএসপির অনুশীলন...

সাকিব : বিকেএসপির অনুশীলনটা খুবই

ভালো ছিল। আমার ইচ্ছা ছিল আরও ১৫-২০ দিন চালিয়ে যাওয়া। যেহেতু শ্রীলঙ্কা সফর স্থগিত হয়ে যায়, তাই পরবর্তীতে তা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। পুরো সময়টা কম্পিলিট করতে পারলে সামনের দুই-তিন বছরের জন্য কাজ হয়ে যেত। সামনে টি-২০ টুর্নামেন্ট আছে। সময়ও আছে। তাই এখন বাকিটা কম্পিলিট করতে চাই। আশা করি করতে পারব।

আপনি মেসির ভক্ত। কিছু দিন আগে মেসি যখন বার্সা ছাড়তে চাচ্ছিল তখন আপনার ভাবনা কী ছিল?

সাকিব : সত্যি কথা বলতে কি, আমি চাচ্ছিলাম মেসি মুভ করুক। ম্যানসিটি বা পিএসজিতে যাক। যেখানেই যেতেন খুব ভালো করতে পারতেন। এখনো যেহেতু বার্সেলোনাতেই আছেন, তাই আমি চাইব বিদায় বেলাতেও যেন তিনি তার সেরাটা দিয়ে বার্সেলোনাকে শিরোপা উপহার দিতে পারেন।

আপনার পর কে আপনার জায়গায় ভালো করতে পারবে?

সাকিব : অনেকের মধ্যেই এমন ক্যাপাবিলিটি আছে। আমি নির্দিষ্ট করে কারও নাম বলতে চাই না।

নিষেধাজ্ঞার সময় ভক্তদের পাশে চেয়েছিলেন। নিষেধাজ্ঞার পর কি মনে হচ্ছে ভক্তরা আপনার প্রত্যাশা পূরণ করতে পেরেছে?

সাকিব : শতভাগ আমার প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। আসলে আমি প্রত্যাশার চেয়েও বেশি সমর্থন পেয়েছি। যখন খেলব আমার মনে হবে, কীভাবে এই ভালোবাসার প্রতিদান দেব!

খেলার মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রসঙ্গে...

সাকিব : খেলার ভিতরে ম্যাচ সেন্সটা কাজ করে। তখন আমি যা বিশ্বাস করি, তা-ই করি। সব সময় ঠিক হয় না, তবে বেশির ভাগ সময় আমি সাকসেস হই। এটা খেলার অভিজ্ঞতা... বা মাথায় বুদ্ধিও আছে একটু একটু...!

ঠান্ডা মাথায় খেলা প্রসঙ্গে...

সাকিব : আমি ঠান্ডা মাথায় খেলার চিন্তা করি। হয়তো সবসময় পারি না। তবে এক্ষেত্রে একটা বড় পরিবর্তন এসেছে যখন আমার প্রথম সন্তান হয়। তারপর থেকে আমার ভিতরে এই পরিবর্তনটা আসতে শুরু করেছে। এখন আমি অনেক বেশি ঠান্ডা মাথায় খেলতে পারি। এটা বয়সেরও একটা কারণ হতে পারে। অভিজ্ঞতার বিষয় তো আছেই।

আপনার ক্যারিয়ারে সেরা মুহূর্ত কোনটি?

সাকিব : আমার মনে হয়, সেরা মুহূর্ত এখনো আসেনি। সেরা মুহূর্ত হবে সেটা যখন বাংলাদেশের হয়ে কোনো বিশ্বকাপ জিতব। সেটা ওয়ানডে হোক বা টি-২০ হোক। তবে এ পর্যন্ত সেরা বলতে হলে, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্ট ম্যাচ জয় এবং এই বিশ্বকাপে আমার ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স।

অনেক সময় দেখা যায়, ছক্কা খাওয়ার পর উইকেট নিচ্ছেন। এই আত্মবিশ্বাসটা কোথায় পান?

সাকিব : খেলার মধ্যে একটা বিষয় হচ্ছে, আপনি যদি আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলেন বা শতভাগ আত্মবিশ্বাস না থাকে তাহলে

তো আপনি প্রথমেই হেরে গেলেন। হ্যাঁ, আত্মবিশ্বাস থাকার পরও অনেক সময় হেরে যেতে পারেন। তবে ওভার-কনফিডেন্স না থাকাই ভালো।

নিষেধাজ্ঞার সময় কী মিস করেছেন?

সাকিব : এই সময় খুব বেশি কিছু মিস করিনি। তবে বেশির ভাগ সময় বাইরে ছিলাম, তাই বাংলাদেশকেই মিস করেছি।

করোনা এবং নিষেধাজ্ঞা নিজেকে নতুন করে ভাবতে শিখিয়েছে কিনা?

সাকিব : হ্যাঁ, এই করোনা এবং নিষেধাজ্ঞা অনেক কিছু আলাদা করে ভাবতে শিখিয়েছে। যখন মানুষ এমন পরিস্থিতি থেকে ফিরে আসে তখন অনেক পরিপক্ব হয়। আমি এখন অনেক ভিন্নভাবে চিন্তা করতে পারি।

করোনার কারণে আপনাকে খুব বেশি ম্যাচ মিস করতে হয়নি। তাই নিজেকে ভাগ্যবান মনে করেন কিনা?

সাকিব : আমি তো সবসময় নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করি। এক্ষেত্রে বলব, আমি ভাগ্যবান। যদি সবসময় দেখতাম জাতীয় দল খেলছে আমি খেলতে পারছি না, তখন হয়তো অনেক বেশি মিস করতাম। সে সুযোগটা হয়নি।

নিষেধাজ্ঞার পর কোনো আফসোস হয়েছে কিনা?

সাকিব : হ্যাঁ, অবশ্যই আফসোস হয়েছে। আমি অনুতপ্তও হয়েছি। বারবার মনে হয়েছে কেন এমন একটি ভুল করলাম। আমার ধারণা এখান থেকে আমি অনেক বড় একটা শিক্ষা নিতে পারব।

আপনার ভুল থেকে আগামী প্রজন্মকে কী উপদেশ দেবেন?

সাকিব : প্রথম কথাই বলব, কেউ যেন আর এমন ভুল না করে।

 

সর্বশেষ খবর