শিরোনাম
সোমবার, ৯ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

ফেরার ম্যাচে ফাইনালের আমেজ

রাশেদুর রহমান

ফেরার ম্যাচে ফাইনালের আমেজ

আন্তর্জাতিক ফুটবলে ফিরছে বাংলাদেশ। নেপালের বিপক্ষে দুটি আন্তর্জাতিক প্রীতিম্যাচ খেলবেন জামাল ভূঁইয়ারা। দুই ম্যাচের এই সিরিজকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে উৎসর্গ করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে নানা আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছিল বাফুফে। তবে করোনাভাইরাসের কারণে অনেকগুলোই আয়োজন করা সম্ভব হয়নি।

দীর্ঘদিন পর আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নামছে বাংলাদেশ। সর্বশেষ লাল-সবুজের জার্সিধারীরা বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল ওমানের (গত বছরের ১৪ নভেম্বর)। প্রায় এক বছর পর মাঠে ফিরছে জেমি ডের শিষ্যরা। অবশ্য এর মধ্যে এসএ গেমসে খেলেছে বাংলাদেশ (অনূর্ধ্ব-২৩)। খেলেছে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপও (জানুয়ারিতে)। ফেরার ম্যাচটা প্রীতিম্যাচ হলেও এর মধ্যে থাকছে ফাইনালের আমেজ। বাফুফে থেকে অতিরিক্ত তত্ত্বাবধান চলছে। অনুশীলন মাঠে সদলবলে গিয়ে কাজী সালাউদ্দিন ফুটবলারদের পরখ করেছেন।

দেশি-বিদেশি কোচিং স্টাফ কঠোর পরিশ্রম করছেন ফুটবলারদের ফিটনেস নিয়ে। আশরাফুল ইসলাম রানা বলেছেন, ‘নেপালের জন্য প্রস্তুত বাংলাদেশ।’ জয়ের জন্যই খেলতে নামবে লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। বাংলাদেশের এমন প্রস্তুতি দেখে নেপালও বসে নেই। গতকাল থেকে তারাও অনুশীলনে নেমে পড়েছে। হিমালয়ের দেশ ঠা-াতেই বেশি অভ্যস্ত। বাংলাদেশের গরমের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ারই চেষ্টা করছে তারা। গতকাল দুই ঘণ্টা অনুশীলন করেছে বাল গোপাল মহার্জনের শিষ্যরা। নেপালি ফুটবলার কিরন চেমজঙ বলেছেন, ‘আমরা ভালো ফুটবল খেলতে চাই। প্রথমে পরিবেশটার সঙ্গে মানিয়ে নিচ্ছি।’  এসবই কেমন একটা ফাইনালের আমেজ এনে দিচ্ছে। দুটি প্রীতিম্যাচ জিতলে পয়েন্ট পাওয়া যাবে। র‌্যাঙ্কিংয়ে উন্নতি হবে। তারচেয়েও বড় বিষয়, বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের কঠিন ম্যাচগুলোর জন্য প্রস্তুতি নেওয়া যাবে। সামনের বছরই বাছাইপর্বের ম্যাচে আফগানিস্তান, কাতার, ভারত এবং ওমানের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। অবশ্য আগামী মাসেই বাছাইপর্বের ম্যাচে বাংলাদেশ মুখোমুখি হতে পারে কাতারের। ফিফার অনুমতি নিয়ে দুই পক্ষে আলোচনা চলছে। সব ঠিক থাকলে ৪ থেকে ৭ ডিসেম্বরের মধ্যে ম্যাচটি হতে পারে। সেক্ষেত্রে নেপালের বিপক্ষে ১৭ নভেম্বর দ্বিতীয়  প্রীতি ম্যাচ খেলেই কাতার যাত্রা করতে পারে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল।

করোনাভাইরাসের কারণে নেপালের বিপক্ষে দুটি ম্যাচে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হচ্ছে বাফুফেকে। সরকারি স্বাস্থ্যবিধি মেনে বার বার করোনা টেস্ট করছে। ম্যাচের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে দুই দলেরই (বাংলাদেশ ও নেপাল) করোনা টেস্ট করা হবে। এরই মধ্যে করোনা টেস্ট করা হয়েছে দুই দলের। সবাই নেগেটিভ হয়েছেন। দুটি প্রীতিম্যাচের জন্য টিকিট বিক্রি হবে কেবল ৮ হাজার করে (ভিআইপি ৫০০ টাকা ও গ্যালারি ১০০ টাকা)। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বাফুফে সহসভাপতি কাজী নাবিল আহমেদ।

বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন বলেন, ‘আমাদের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে ফুটবল মাঠে ফেরান। যে কারণে নেপাল দলকে আমরা আমন্ত্রণ জানিয়ে ঢাকায় এনেছি। এই ম্যাচ  দুটি সরকারের নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি পুরোপুরি মেনে আয়োজন করা হবে।’

জাতীয় দলের ফুটবলারদের ফিটনেস নিয়ে বাফুফে সভাপতি বলেছেন, ‘খেলোয়াড়রা ৭-৮ মাস অনুশীলনের বাইরে ছিল। তাই দ্রুত তাদের ফিটনেস শতভাগ ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। এখনো কয়েকদিন বাকি আছে। প্রথম ম্যাচের পরই বোঝা যাবে তাদের ফিটনেসের কি অবস্থা।’ ফুটবলারদের অনেক সুবিধা দেওয়া হয়েছে বাফুফের পক্ষ থেকে। বিদেশি কোচিং স্টাফ আছে। সালাউদ্দিন নিজেদের সময়ের সঙ্গে বর্তমানকে তুলনা করে বলেন, ‘আমরা যে জার্সিতে ম্যাচ খেলতাম তারা এখন সেই জার্সিতে অনুশীলন করছে। আমরা দুটা বল নিয়ে ৩০ জনে অনুশীলন করতাম। ওরা অসংখ্য বল পাচ্ছে। এবার তাদের দেশের জন্য কিছু করার পালা।’ নতুন মৌসুমে ফুটবলাররা আগের মৌসুমের ৩৫ শতাংশ পারিশ্রমিক পাবেন। কিন্তু তাদের দাবি ৪০ শতাংশ। বাফুফে সভাপতি তাও দেওয়ার চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি কেবল ফুটবলারদের কাছ থেকে ভালো ফল চান। জয় চান। বাফুফে সভাপতির চাওয়া পূরণ করতে পারবেন জামালরা!

 

সর্বশেষ খবর