শিরোনাম
শনিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা
বাংলাদেশ ২ নেপাল ০

ফেরার ম্যাচে স্বস্তির জয়

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ফেরার ম্যাচে স্বস্তির জয়

ছবি : রোহেত রাজীব

নেপালের বিপক্ষে মুজিববর্ষ উপলক্ষে দুই প্রীতি ম্যাচে ফুটবল সিরিজের প্রথমটিতে গতকাল বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে দারুণ ফুটবল খেলেছেন জেমি ডে-র শিষ্যরা। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আত্মবিশ্বাসী ফুটবল খেলেছে জামাল বাহিনী। জীবন ও সুফিলের দুই অর্ধের দুর্দান্ত দুই গোলে শুধু জয় তুলে নেয়নি বাংলাদেশ, ২০১৮ সালের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে হারের প্রতিশোধও নিয়েছে। দুই বছর আগে একই ভেন্যুতে একই ব্যবধানে হেরেছিল বাংলাদেশ।

মঙ্গলবার সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ। আন্তর্জাতিক ফুটবলে বাংলাদেশ জয় পেল চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারির পর। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৩-০ গোলে জিতেছিল বাংলাদেশ। তবে নেপালের বিপক্ষে বহু অপেক্ষার জয়টি ৫ বছর পর। ২০১৫ সালের ১৭ ডিসেম্বর ঢাকায় আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে ১-০ গোলে জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ।  সব মিলিয়ে সফরকারীদের বিপক্ষে ২০ নম্বর ম্যাচে এটা বাংলাদেশের ১৩তম জয়। ড্র একটি এবং হার ৬টি। ম্যাচটি নিয়ে কয়েক দিন ধরেই সাজসাজ রব ফুটবলপাড়ায়। মাঠে ৮ হাজার দর্শক উপস্থিত ছিল।

ক্রিকেটের পর এবার আন্তর্জাতিক ম্যাচ দিয়ে আট মাস পর মাঠে ফিরল ফুটবল। করোনাভাইরাসের মধ্যেও দর্শকরা প্রাণভরে ম্যাচ উপভোগ করেন। জামাল, তপু, জীবনদের খেলা দেখতে দুপুর থেকেই মাঠমুখী হয়েছেন দর্শকরা। হতাশ হয়ে ফিরেননি। বরং উৎসব, উচ্ছ্বাস, আনন্দ নিয়ে বাসায় ফিরেছেন। উপভোগ করেছেন দুটি অসাধারণ গোল। করোনাভাইরাসের জন্য মার্চ থেকে বিশ্বব্যাপী খেলাধুলা বন্ধ ছিল। তবে ক্রিকেট ফিরেছে কয়েক মাস আগে। ফুটবলও ফিরেছে। অবশ্য করোনাভাইরাসে ফুটবল বন্ধ হওয়ার আগে ঘরোয়া ফুটবল খেলেছেন জীবনরা।

১২ মার্চ ফুটবল বন্ধ হয়ে যায়। এরপর কিছু দিন আগে ফুটবল ফিরেছে। তবে পুরুষ ফুটবলাররা এবারই প্রথম খেললেন। যদিও মেয়েরা এর আগে ফুটবল খেলেছেন। গতকাল নেপালের বিপক্ষে জেমি ডে দুজন নতুন মুখ নিয়ে একাদশ সাজান।

প্রথমবারের মতো জাতীয় দলে খেলতে নামেন গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো এবং সুমন রেজা। গোটা ম্যাচে জিকো দুর্দান্ত ফুটবল খেলে কোচের আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন। কয়েকটি গোলের সুযোগ দৃঢ়তার সঙ্গে রুখে দিয়েছেন তিনি। আট মাস পর নেমেও শুরু থেকে বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে খেলতে থাকেন জামালরা। নবম মিনিটেই এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায় বাংলাদেশ। কিন্তু বিশ্বনাথ ঘোষের লম্বা থ্রোইংয়ে মাথা ছোঁয়াতে পারেননি তপু। তবে সমর্থকদের উৎসব করতে অপেক্ষা করতে হয়নি। পরের মিনিটেই লাল-সবুজকে উচ্ছ্বাসে মাতান জীবন।

১০ মিনিটে জীবনের বাড়ানো পাস ধরে ডান দিক দিয়ে আক্রমণে ওঠেন সাদ উদ্দিন। এরপর নেপালের রক্ষণভাগের দুই ডিফেন্ডারকে ফাঁকি দিয়ে বল বাড়ান গোলমুখে। চলতি বলে নিখুঁত স্লাইডে নেপালের গোলরক্ষক কিরন কুমার লিম্বুকে বোকা বানিয়ে জালে বল ঠেলে দেন জীবন (১-০)। ২১ মিনিটে গোলসংখ্যা দ্বিগুণ হতে পারত। কিন্তু জীবনের ক্রসে ইব্রাহিমের হেড প্রতিপক্ষের গায়ে লেগে প্রতিহত হয়। ২৭ মিনিটে মানিক মোল্লার শট গোলরক্ষক ফিস্ট করেন। এর পর দুই দলই গোলের জন্য মড়িয়া হয়ে খেলতে থাকে। কিন্তু প্রথমার্ধে আর গোল হয়নি। দ্বিতীয়ার্ধে তিন খেলোয়াড় বদল করেন কোচ জেমি ডে।

মানিকের বদলে সোহেল রানা, জীবনের বদলে বিপলু এবং জামালের পরিবর্তে সুফিল খেলতে নামেন। তিন পরিবর্তনে গতিশীল ফুটবল খেলতে থাকেন স্বাগতিকরা। ৭৫ মিনিটে তপুর ফ্রি কিক দুর্দান্তভাবে রক্ষা করেন নেপালের গোলরক্ষক লিম্ব।

৮০ মিনিটে দুরন্ত ফিনিশ করেন বদলি নামা সুফিল। সোহেলের বাড়ানো বল ধরে সুফিল একক প্রচেষ্টায় ঢুকে পড়েন নেপালের ডি বক্সে। সেখান থেকে আগুয়ান গোলরক্ষক লিম্বুর পাশ দিয়ে সোয়ার্ভিং শটে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করেন সুফিল (২-০)। র‌্যাংকিংয়ে এগিয়ে থাকা নেপালের বিপক্ষে প্রতিশোধ নিল বাংলাদেশ।

সর্বশেষ খবর