অসাধারণ মেহেদী হাসান!
ক্যারিশম্যাটিক শেষ ওভার। প্রথম তিন বল ডট। চতুর্থ বলে ৪। পঞ্চম বল নো। পরের দুই বলে মাত্র ১ রান।
জয়ের জন্য ঢাকার দরকার ছিল মাত্র ৯ রান। কিন্তু মেহেদীর বুদ্ধিদীপ্ত বোলিংয়ে এলো মাত্র ৬ রান। ২ রানের রুদ্ধশ্বাস জয়ে শুরুটা দারুণ হলো রাজশাহীর।নাটকীয় এক ম্যাচ দিয়ে শুরু হলো বঙ্গবন্ধু টি-২০ কাপ।
মেহেদী হাসান একাই যেন জিতিয়ে দিলেন রাজশাহীকে। ব্যাট হাতে দলের দুঃসময়ে নেমে খেললেন ৩২ বলে ৫০ রানের সাইক্লোন এক ইনিংস। বল হাতে ৪ ওভারে দিয়েছেন মাত্র ২২ রান।
খানিকটা ব্যাকফুটে থেকেই বঙ্গবন্ধু টি-২০ কাপে খেলতে নামে রাজশাহী। এই টুর্নামেন্টের একমাত্র দল যাদের স্কোয়াডে ‘এ’ গ্রেডের কোনো ক্রিকেটার নেই। প্লেয়ার্স ড্রাফটে সর্বশেষ দল হিসেবে ডাক পেয়ে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে নেওয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু রাজশাহী জাতীয় দলের টি-২০ ক্যাপ্টেনকে না নিয়ে অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনকে নেয়। কিন্তু সেই সাইফুদ্দিন কিনা আগের দিন অনুশীলনে গা গরম করার জন্য ফুটবল খেলতে নেমেই ইনজুরিতে পড়েন।
বড় তারকা না থাকার প্রভাবটা শুরুতে ভালোই টের পায় রাজশাহী। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ১০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে মাত্র ৬৫ রান করে তারা। কিন্তু পরের ১০ ওভারেই বদলে যায় ম্যাচের চিত্র। মেহেদী হাসান ও নুরুল হাসান সোহান বাইশগজে ঝড় তোলেন। ওভারপ্রতি তারা ১০-এর বেশি করে রান তোলেন। ২০ ওভার শেষে রাজশাহীর রান ১৬৯। মাত্র ২০ বল থেকে ৩৯ রান করেন সোহান। তিন ছক্কার সঙ্গে দুটি চারের মার ছিল তার ইনিংসে। স্ট্রাইকরেট ছিল ১৯৫।
মেহেদীর স্ট্রাইকরেট ১৫৬.২৫। তার ইনিংসে ছিল চারটি ছক্কা ও তিনটি চারের মার। কাল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বঙ্গবন্ধু টি-২০ কাপের প্রথম হাফ সেঞ্চুরিটি আদায় করে নেন। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) গত আসরে দুর্দান্ত পারফর্ম করেছিলেন এই অলরাউন্ডার। মেহেদী-সোহানের ক্যারিশম্যাটিক ব্যাটিংয়ে ঢাকাকে ১৭০ রানের টার্গেট দেয় রাজশাহী।
মুশফিকের ঢাকার শুরুটা হয়েছিল দারুণ। প্রথম ১০ ওভারে ৮০ রান তোলে। মুশফিকের সঙ্গে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ী দলের অধিনায়ক আকবর আলীর জুটিটা ছিল দারুণ। তাদের মধ্যে দারুণ বোঝাপড়াও ছিল। কিন্তু ফরহাদ রেজার বল তুলে মারতে গিয়ে আকবর আউট হয়ে যান ব্যক্তিগত ৩৪ রানে। এরপর মুশফিকও আর বেশিক্ষণ বাইশগজে থাকতে পারেননি। তিনিও প্যাভিলিয়নে ফিরে যান ৪১ রান করে।
শেষ দুই ওভারে জয়ের জন্য ঢাকার দরকার ছিল ৩০ রান। কিন্তু ১৯তম ওভারে ফরহাদ রেজার বলে তিনটি বিশাল ছক্কা হাঁকান মুক্তার আলী। ওই ওভার থেকে আসে ২১ রান। তারপর আসে নাটকীয় শেষ ওভার। মেহেদী হাসানের ক্যারিশমায় দারুণ এক জয় তুলে নেয় রাজশাহী।
তবে ম্যাচ শেষে জয়ের প্রধান কৌশল হিসেবে দলীয় সমন্বয়ের কথা জানালেন বিজয়ী দলের অধিনায়ক নাজমুল হাসান শান্ত, ‘মেহেদী হাসান অসাধারণ খেলেছেন। তবে এই জয়ের জন্য দলীয় প্রচেষ্টাকে কৃতিত্ব দেব। আমরা দল হিসেবে খুবই ভালো খেলেছি।’
সংক্ষিপ্ত স্কোর
রাজশাহী : ১৬৯/৯ (২০ ওভার)
(মেহেদী ৫০; মুক্তার ৩/২২)
ঢাকা : ১৬৭/৫(২০ ওভার)
(মুশফিক ৪১; মেহেদী ১/২২)
ফল : রাজশাহী ২ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরা : মেহেদী হাসান।
বরিশাল : ১৫২/৯ (২০ ওভার)
(পারভেজ ৫১; শহিদুল ৪/১৭)
খুলনা : ১৫৫/৬ (১৯.৫ ওভার)
(আরিফুল ৪৮*; সুমন ২/২১)
ফল : খুলনা ৪ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচসেরা : আরিফুল হক।