মঙ্গলবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

মাশরাফি-জহুরুলে ফাইনালে খুলনা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

মাশরাফি-জহুরুলে ফাইনালে খুলনা

হ্যামস্ট্রিং ইনজুরির জন্য দীর্ঘদিন মাঠের বাইরে ছিলেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। মার্চের পর কোনো প্রতিযোগীমূলক ক্রিকেট খেলেননি তিনি। অবশেষে দেশের অন্যতম সেরা পেসার ফিটনেস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে খেলছেন বঙ্গবন্ধু টি-২০ কাপে। খেলছেন খুলনায়। গতকাল শীতের সন্ধ্যায় মিরপুর স্টেডিয়ামে বিধ্বংসী বোলিং করে দুরন্ত খেলতে থাকা চট্টগ্রামকে ৪৭ রানে হারিয়ে খুলনাকে ফাইনালে তুলেন তিনি। একই সঙ্গে লিগ পর্বে দুই ম্যাচে হারের প্রতিশোধও নেয় খুলনা। দিনের শুরুতে দারুণ ব্যাটিং করেন জহুরুল ইসলাম অমিও। মাশরাফি কাল তিন স্পেলে বোলিং করে ৩৫ রানের খরচে নেন ৫ উইকেট। চলতি আসরে মাশরাফি এখন পর্যন্ত ৫ উইকেট নেওয়া প্রথম পেসার মাশরাফি। হারলেও চট্টগ্রামের সুযোগ রয়েছে ফাইনাল খেলার। এজন্য আজ জিততে হবে ঢাকার বিপক্ষে।

বঙ্গবন্ধু টি-২০ কাপে সেঞ্চুরির সংখ্যা তিন। নাজমুল হোসেন শান্ত, পারভেজ হোসেন ইমন ও মোহাম্মদ নাঈমের পর চতুর্থ ক্রিকেটার হিসেবে গতকাল তিন অংকের জাদুকরী ইনিংস খেলতে পারতেন জহুরুল ইসলাম অমি। সঞ্জিত সাহাকে স্কুপ করে শর্ট ফাইন লেগে মোসাদ্দেক সৈকতের তালুবন্দী হওয়ার আগে নামের পাশে লিখেন ৮০ রান। সেঞ্চুরি না পেলেও তার দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে তৃতীয় দল হিসেবে টুর্নামেন্টে ২০০’র উপর স্কোর করে খুলনা। অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের বিধ্বংসী ব্যাটিং ও সাকিব আল হাসানের ব্যাটিংয়ে ছন্দে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ২১০ রান করে তারকাখচিত দলটি। টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ রানের ইনিংস বরিশালের। রাজশাহীর ২২০/৭ রান টপকে বরিশাল ম্যাচ জিতেছিল ২ উইকেটে ২২১ রান করে। ওই ম্যাচে জোড়া সেঞ্চুরি করেছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও ইমন। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে খুলনাকে শক্ত ভিত দেন দুই ওপেনার জাকির হাসান ও জহুরুল ৭১ রান যোগ করে। দুজনের গড়ে দেওয়া ভিতকে কাজে লাগান অপরাপর ব্যাটসম্যানরা। বিশেষ করে শেষ ৫ ওভারে খুলনার ব্যাটসম্যানরা ছিলেন বিধ্বংসী মেজাজে। ১৪.৫ ওভারে জহুরুল ৫১ বলে ৫ চার ও ৪ ছক্কায় ৮০ রান করে সাজঘরে ফিরলে ক্রিজে আসেন অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ। এরপরই খেলার চিত্র ঘুরে যায়। শেষ ৫ ওভারে স্কোর বোর্ডে খুলনার সংগ্রহ ৭৭ রান। মাহমুদুল্লাহ ৯ বলে ৩০ রান করেন। যাতে ছিল ২টি চার ও ৩টি ছক্কা। প্রথমবারের মতো মেজাজী ব্যাটিং করতে দেখা যায় সাকিবকে। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার ২৮ রান করে ১৫ বলে ২ চার ও ২ ছক্কায়। 

লিগ পর্বে দুই দলের মুখোমুখিতে শেষ হাসি হেসেছিল চট্টগ্রাম। প্রথমবার খুলনাকে ৮৬ রানে গুটিয়ে তুলে নিয়েছিল ৯ উইকেটের জয়। দ্বিতীয় লড়াইয়েও খুলনার ১৫৭ রান টপকে যায় চট্টগ্রাম ৩ উইকেট হাতে রেখে। গতকাল মিরপুরে শীতের সন্ধ্যায় দুই দল মুখোমুখি হয় ফাইনালে উঠতে। ফাইনাল খেলতে ২১১ রান করতে হবে চট্টগ্রামের। ওভার প্রতি সাড়ে ৮ রানের টার্গেট। গোটা টুর্নামেন্টে দুরন্ত খেলা চট্টগ্রাম চাপে পড়ে যায় শুরুতে। মাশরাফির নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে চট্টগ্রামের দুই সফল ওপেনার সৌম্য সরকার ও লিটন দাস ২৭ রানের মধ্যে ফিরে যান সাজঘরে। লিটন করেন ১৩ বলে ২৪ রান। সাকিব ও মুস্তাফিজের পর বাংলাদেশের তৃতীয় বোলার হিসেবে দেড়শ উইকেট (১৫৩) নিয়েছেন। ২৭ রানে দুই ওপেনারের বিদায়ের পর তৃতীয় উইকেটে জুটি বাধেন মাহমুদুল হাসান ও অধিনায়ক মোহাম্মদ মিথুন। ৫৩ রানের ইনিংস খেললেও মিথুন ম্যাচ বাঁচাতে পারেননি। চট্টগ্রামের ইনিংস থেমে যায় ১৯.৪ ওভারে ১৬৩ রানে।   

কোয়ালিফায়ার-১

খুলনা : ২১০/৭ (২০ ওভার) (জহুরুল ৮০, মাহমুদুল্লাহ ৩০, সাকিব ২৮; মুস্তাফিজ ২/৩১, শরীফুল ১/৫০, মোসাদ্দেক ১/২৭)।

চট্টগ্রাম : ১৬৩/১০ (১৯.৪ ওভার) (মিথুন ৫৩, মাহমুদুল ৩১, লিটন ২৪; মাশরাফি ৫/৩৫, হাসান মাহমুদ ২/৩৫)।

ফল : খুলনা ৪৭ রানে জয়ী।

ম্যাচসেরা : মাশরাফি বিন মর্তুজা।

 

এলিমিনেটর

ঢাকা : ১৫০/৮ (২০ ওভার) (ইয়াসির ৫৪, মুশফিক ৪৩, আকবর ২১; মিরাজ ২/২৩, কামরুল ২/৪০, তাসকিন ১/২১)।

বরিশাল : ১৪১/৯ (২০ ওভার) (আফিফ ৫৫, তামিম ২২, মিরাজ ১৫; মুক্তার ৩/১৮, শফিকুল ৩/৩৯, আল আমিন ২/২২ )।

ফল : ঢাকা ৯ রানে জয়ী।

ম্যাচসেরা : ইয়াসির আলি চৌধুরী।

সর্বশেষ খবর